- দে । শ
- জুন ১৯, ২০২৪
মনীষীর মূর্তি গড়ে, বেহালায় সুর তুলে অবসর কাটান মাস্টারমশাই
মনীষীর মূর্তিতে মগ্ন মাস্টারমশাই। বলতে গেলে বিনা পারিশ্রমিকে বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, সিস্টার নিবেদিতার মূর্তি তৈরি করেন সরোজকুমার মাইতি। নন্দীগ্রাম থেকে এসে বসিরহাট হাইস্কুলের রাশি বিজ্ঞানের শিক্ষক সরোজবাবু অবসর নিয়েছেন বছর ৪ হল। এখন বসিরহাটেই থিতু হয়েছেন তিনি। তাঁর তৈরি বিদ্যাসাগর, ভগিনী নিবেদিতার আবক্ষ মূর্তি বসেছে বসিরহাট হাইস্কুলের প্রাঙ্গনে। রবীন্দ্রনাথের মূর্তি তৈরি করেছেন। সেটি বসেছে বসিরহাটের গোয়ালপোতায় মহুয়া সঙ্ঘের সামনে। তাঁর হাতে তৈরি আরও একটা বিদ্যাসাগরের মূর্তি বসেছে নিজের গ্রাম নন্দীগ্রামের কাছে কান্ডপশরা ‘শক্তি সঙ্ঘে’র সামনে। সেখানেই একটা রবীন্দ্রনাথের মুর্তি তৈরির আবদার মেটাতে হবে তাঁকে। এখন সেটা নিয়েই ব্যস্ত সরোজবাবু। সেই অর্থে প্রথাগত শিল্প শিক্ষা নেই তাঁর। ছোটবেলা থেকে গ্রামের পটুয়াদের হাতে প্রতিমা তৈরি দেখে এসব শিখেছেন। সেই বিদ্যা শিক্ষকতা জীবনেও ছাড়েন নি। অবসর পেলেই নিজের হাতে ছাঁচ তৈরি করে কংক্রিটের ঢালাই করে মনীষীদের অবয়ব ফুটিয়ে তোলেন। বাড়িতে নিচের তলায় একটি ঘরই আছে এসবের জন্য। মূর্তি গড়ার পাশাপাশি ছবি আঁকা, বেহালা বাজানো, পত্রিকা সম্পাদনা এসব কাজেই সেই ঘরে দিনের অনেকটা সময় কাটে সরোজবাবুর। তাঁর এই সৃজনশীল কাজে প্রথম দর্শক স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে। ছেলে সৌভদ্র মাইতি রয়েছেন নেদারল্যান্ডে ডেলফট বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার কোয়ান্টাম ইনফরমেশন গবেষনার কাজে। মেয়ে তমঘ্না মোহালি আইজারে পাঠরতা। তার মাঝেও মূর্তি গড়ার কাজ থেমে নেই। ছেনি, হাতুড়ি নিয়ে কংক্রিটের ঢালাই কেটে মনীষীর তৈরি করতে করতে সরোজবাবু বলেন, ‘বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, ভগিনী নিবেদিতা আমাদের কাছে প্রাতঃস্মরণীয়, জীবনের প্রেরণা। এঁদের মূর্তি গড়ার কথা বললে আমি স্থির থাকতে পারিনা।’ চলার পথে যখন ক্লান্তি আসে, জীবনে অস্থিরতা তৈরি হয় তখন সরোজবাবু তাঁর প্রিয় বেহালা নিয়ে একান্তে সুর তোলেন , ‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো’ কিংবা ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে।’
❤ Support Us