শিবভোলার দেশ শিবখোলা
শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।
চিত্র: রফিকুন নবী
ইট
জাতিধর্ম নির্বিশেষে আমরাও অধিক কুলীন। যে-পাত্রে জল খাই, সে পাত্র উপুড় করি না । গুহা ছেড়ে যেইমাত্র আগুন হাতে নিলে, আমরাও পুড়েছি তাতে ঘনঘোর মন্দ্রিত চাবুকে। এই আমাদের ক্ষাত্রধর্ম, পিঠোপিঠি বসবাস করি, চিনিনা কাউকেই চিনি না ! টুকরো করো কিংবা সম্পূর্ণ রেখে দাও, একদিন ঠিক কর্মে লেগে যাব। এভাবে চলে যেতে যেতে, এভাবে ফিরে আসার পথে, রূপ থেকে অরূপখানি জাগে। আর সত্য এই যে, আমাদের গূঢ় স্বর ছাড়া কোনো সমারোহ উচ্চারিত হবে না কখনো।
কাঠ
কবে যে বৃক্ষ থেকে মানব হলাম, কবে যে মানব থেকে বৃক্ষ, এই চিরে দেখার আগেও জানতে পারিনি! হে প্রিয় কুঠার, অরণ্যরাত্রি সবকথা লিখে রাখে। আজ বুঝি পাঠোদ্ধারের সময় হল। যে ক্ষণজীবন চলকে উঠছে করাতকলে, তার গুঁড়োগুঁড়ো কাঠের ভুসি— ওদের ভিতর সেই কতকাল জেগেই আছি। ইচ্ছেমতন ফুঁ দিতে পারো। হাতুড়ি কিংবা বাটালির নীচে শোভিত সময় ভেঙে দিতে পারো। তবু আমাদের জন্মান্তর আঁকা থাকে সব গৃহকোণে। পরাগ থেকে পরাগের আগে প্রাণ ছুটে যায় ; বিনাশ থেকে বিনাশের পারে সবুজ গাথায়…
বালি
ছড়ানো সংসার পেতে সন্ন্যাসের কোলে শুয়ে আছি। নুন আনতে ফ্যান ফুরোয়, সহস্রপুত্র গেছে তটের কিনারে। যদি কিছু ঝিকিমিকি ওষ্ঠে জমে ওঠে, সেটুকুও দান করে অনিঃশেষ আঁধারে ডুবে যাব। সমুদ্রপ্রিয়তা ছিল আমাদের। ছিল পরতে পরতে বর্ণরূপ। দূরের এই শুদ্রভূমি, সেসব অপাঠ্য হয়ে গেল। তবুও বন্দিদশা থেকে কীভাবে আঙুল গলে ঝুরঝুর স্বপ্নের মাটিতে— স্মরণকালের ভিতর শুধু পরমহংস এ কথা জানতেন। আর ঘূর্ণিঝড়ে আমরা জেনে গেছি। আর সত্য এই যে আমাদের ঝিকিমিকি ছাড়া কোনো চক্ষুষ্মান আলোকিত হবে না কখনো।
পাথর
আমাকে আমার কাছে নিয়ে চলো, আগুন জ্বালাব। এই শুদ্ধ প্রতিবেদনটুকু ঘুরে ঘুরে মন্ত্র হয়ে গেল! যদি বিস্মৃত হই, তবুও অক্ষয় হোক এ পাথরজন্ম, নুড়ি আর সংঘর্ষের কারুলিপি। জ্বলন্ত পিণ্ড থেকে ছিটকে এসেছি। সে-ই আমার মাতৃরূপ। তাই শান্ত হওয়া হলনা জীবনে! যে-জমাট ভেঙে ভেঙে অগ্নি আর অভিজ্ঞান জেগে ওঠে, তার লাগি বুক পেতে আছি। হে অনুপম টুকরো হয়ে যাওয়া, আমারও শিখরদেশে সোনালি শিবির উন্মুক্ত করে রেখেছি। গার্হস্থধর্মে আছে শত শত ঝরনার ধ্বনি। এতসব ব্যতিরেকে কেন শুধু প্রস্তরটুকু হাতে তুলে নিলে! আমাকে চুরমার করো, সম্পন্ন করো হে মুগ্ধ কারিগর, ছেনিটিকে বীণার মতো বাজাও…
♦–♦♦–♦♦–♦♦–♦
শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।
সৌরেনির উঁচু শিখর থেকে এক দিকে কার্শিয়াং আর উত্তরবঙ্গের সমতল দেখা যায়। অন্য প্রান্তে মাথা তুলে থাকে নেপালের শৈলমালা, বিশেষ করে অন্তুদারার পরিচিত চূড়া দেখা যায়।
মিরিক নামটি এসেছে লেপচা ভাষার “মির-ইওক” শব্দ থেকে, যার অর্থ আগুনে পুড়ে যাওয়া জায়গা।
15:34