- ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
- ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩
মাটি ব্রতের আখ্যান । ষষ্ঠ পর্ব
ঢালের উপরে সামান্য সমতলে সিলুমেট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন জোড়াবৃক্ষ। অনিয়ন্ত্রিত ফুঁপিয়ে চলেছেন কুলসুম বেগম। আজ জয়েন উদ্দিন। স্তম্ভিত পাষাণবক্ষটি চৌচির হয়ে ভেঙে পড়ছে। কী প্রবল রক্তস্রাবের প্রদাহ... তারপর
অলঙ্করণ: দেব সরকার
ধা রা বা হি ক · উ প ন্যা স
।। সোরোত কান্ড ।।
॥ জাহান্নামের সোরং ॥
ইছামতী, ঠিক এইখানটায়, নিজের খেয়ালেই, বাঁক খেয়ে পুবে পশ্চিমে বইছে বলে রোজ একটা খেলা হয়।
ভোরে সূর্য ওঠে জলের নাভি চিরে। তখন সে যেন মহাবিশ্বের সুমহান আবির্ভাব। আবার ডোবেও তেমনি, ওই জলে টুপ করে। দু বেলাই। মনে হয় হাজার হাজার আবিরের বস্তা ঢেলে কোনও আকাশবালক গুলে দিয়েছে ঘোলা জলে। চোখ ছড়িয়ে এই উদয় অস্তের লীলা দেখতে হয়। চমকে চমকে উঠতে হয়। ঘোর অবিশ্বাসীরাও জগতের পিতার মহিমাকে আঁচ পায়, আবিষ্ট হয়ে থাকে।
ওরা কিন্তু দেখছিল না।
ওদের আগ্রহ নেই।নাকি ছিল, একসময়, এখন মরে গেছে। ওরা, মানে মনুষ্যবাচ্য চারটে প্রাণী। ওরা দেখছে ও-তীর। নৌকোটা তাদের নামিয়ে এখন ভাসছে ইতিউতি। যেন মাছমারাদের নৌকো, দুই মাঝি যেন জলে চোখবাঁধা শিকারি ধীবর।এমনটাই তো কথাকওয়া ছিল।
নদী এখানে সংকীর্ণ। ইটিণ্ডাঘাট টাকির সঙ্গে তুলনা করলে মনেই হবে না একই জলধারা। বিস্তারে সে মাপের তিনের এক, বা তারও কম।এরকম বলেই ওপারের সবকিছু সাদা চোখে দেখতে চোখের পাতা মেলতে হয় না, কোঁচকাতেও লাগে না, দরকার নেই।
আকাশে ভরা চাঁদ।এতক্ষণ ধরে ওদের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ছিল।এ কাল শীতের, এবং এ কাল প্রায় প্রত্যুষ। পেঁজা মেঘের একগাছি পাতলা সুতুলিও নেই যে সে এই চারসঙ্গীর সাথে একটু লুকোচুরি খেলবে। বরং এ সময়ে সে, অর্থাৎ ওই চাঁদ, দল ছাড়ার মতলব করছে। দূর পিছনে চলে গেছে সে। মুখে যে প্রসাধন মেখেছিল, তার লেপনকলা ফিকে হয়ে এসেছে বলে এবার স্পষ্টই চাঁদকে রোগাক্রান্ত দেখা যায়।
এখন পুব আকাশে শুকতারা। ঠিক যেন সিগারেটের প্যাকেটের সস্তা অ্যালুমনিয়াম ফয়েলের টুকরো, দলা পাকানো।তবে চকচকানি ভাবটি ঠিক বোঝা যায় না, কেমন যেন, কেউটের ছোবলে নীল কালচে হয়ে ওঠার মতো বর্ণ।
চন্দ্রমোহন এবার এগোতে চাইছিলেন।
এদিকে হেমশশীর, আঁচল আড়াল, দু চোখে নদী বইছেই। কথার ডোল আর অবিকার থাকে না, বললেন— এট্টু দাঁড়ান। শেষবারির মতোন দেশটারি একবার দেখতি দেন।
— দেশ ছাড়ি আসিছো অনেক দূরখান।
— তবু দেশ তো। আরেট্টু দেখবার চাই।
একরাম কিছু বলছিল না। সে চোখের জলকে শুষ্ক করার রসায়ন আয়ত্ত করেছে।
অন্যদিকে সাধন দুচোখে পাথর নিয়ে এই আঘাটায় ঠায় দাঁড়ানো।ওর কাছে কি বিশ্ব এমনিভাবে মৃত্যুর আগমনি গানে দরজা খুলে দিয়েছে !
ওপারে বিস্তীর্ণ চর শুয়ে অলস। ছোটো ছোটো কন্টিকারি কাঁটানটের ঝোঁপ, গুল্ম, লতানে উদ্ভিদ। ভুঁইচাঁপা, কী ওইরকম, সুগন্ধি ফুল ফুটেছে সেখানে। ইছামতির উপর যেন আছে অদেখ এক সেতু, বাতাসঝোলা, তাই বেয়ে স্নেহময়ী সুরভি দৌড়ে এসে বুড়ি ছুঁচ্ছে চারটি নাকে। হেমশশী কি সে গন্ধে কোনও কথা শুনতে পেলেন ! তাকে ছেড়ে চলে না যাওয়ার প্রবল আকুতি ! চর শেষে বৃক্ষের সারি, মাথা উঁচু করে আকাশ ছুঁয়ে আছে, ডালপালা মেলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছে। আশ্লেষে।ওদের গায়েও তো গাছ কাটুরের ঘা পড়ে। তবু কই, ওরা যে বাঁচার মন্তরখান ভোলে না ! শুধু মানুষের বেলায়ই বেভুল মন্ত্রের জগতসংসার ! এসব ন্যায়কূট অবশ্য হেমশশী ভাবতে পারছিলেন না, এসব চিন্তার অবসরই বা তার কোথায়? তিনি শুধু অশ্রুনিপাতনের দেয়াসী নারী। হঠাৎ ফোঁপ আঁচলেও চাপা দিতে পারলেন না।
— আর কায়ন্দো না, নীলুর মা। ইবার শক্ত হবার লাগে। নাও, ওপারের দেশিরে প্রণাম করো। মনে মনে কও— চন্দ্রমোহন এ কী ভাষায় কথা বলছেন ! মনে হচ্ছে যেন দুহাজার, তিনহাজার, বা চারহাজার, ঠিক সময় কেউই সঠিক জানে না, আগে বনতলে বসে হোমাগ্নি জ্বেলেছেন, সমিধ অর্পণ করছেন। বলছেন চন্দ্রমোহন, বলো—
— হে দেশ। আমাগের দেশ। তুমি ছিলে। তুমি আছো। তুমি অনন্ত। অবিনশ্বর। তুমি সত্য। চিরন্তন। তুমি কদাচ অস্তিত্ব হারাও না। কোনও মানুষ তোমার কোল থেকে চ্যুত হয় না। অন্তহীন কালপ্রবাহে তুমি চিরস্থায়ী। তুমি স্মৃতিমূর্তি ধারণ করে অবস্থান করো। অশ্রুনদীর প্রতিমা হয়ে বয়ে চলো। তোমার মোহানা নেই। কূল হারাবার সাগর মহাসাগর নেই, তুমি বইতেই থাকো। তাই তো, হে দেশ, তোমারিই নাম স্বর্গ। দেবলোক মেঘের উপর আকাশে নেই। কোথাও নেই। কেবল তোমাতেই আছে।
কয়েকমাস দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া দমকা সমস্ত মানুষের বুকের কবজা এইভাবে বদলে দিল ! দুঃখের তরল শুকিয়ে ভাপ হয়ে কোথায় যে উবে গেছে। ফাঁকা হয়ে যাওয়া ওই জায়গাটাতেই স্ফটিক জমে যাওয়া গোপন বেদনা ঘর বেঁধেছে। শূন্যমনের অবকাশ পেলেই কলকল আওয়াজে বেজে উঠবে ! ঠিক এইসময়েই একরামের সারা শরীর কেমন অবরুদ্ধ হল, থরথর কেঁপে উঠলো দেহখানা
উচ্চারণকালের গাম্ভীর্যে খেয়াল করেননি চন্দ্রমোহন কখন যে তাঁর জোড়কর তাঁরই ভ্রুমধ্য আশ্রয় নিয়েছিল, কখন অঙ্গুলিনিচয় সিক্ত হয়ে উঠেছিল, কখন থেকে তাঁর স্বর কণ্ঠনলীর ভিতর থেকেই ঝড়াঘাতে শার্শির মতো কুচিকুচি হয়ে ভেঙে পড়ছিল মাটিতে।
একঝাঁক গাঙশালিক কিচিরমিচির বচসায় আসর জমিয়েছে এই আঘাটায়, হঠাৎ ফতফত পাখা মেলে ঝাঁকসুদ্ধ উড়ে গেল ওপারের চরে। আবার সেখান থেকে সারি ভাসিয়ে ফিরলো কলরবে। দলটাকে বড়ো করে এনেছে। বসলো না বেশিক্ষণ, আবার পাখা খুললো, আকাশে একটা রেখার রেশ এঁকে পৌঁছে গেছে ওপারে। এপার ওপার খেলছে ওরা। আশ্চর্য বিনোদন !
চারজনের দলটা এখন দুভাগে টুকরো হয়েছে।
একরাম আর চন্দ্রমোহন আগে আগে।
জ্যাঠামশায়ের হাতখানা ধরে আছে একরাম। কী নিবিড় আশ্রয় ওই আঙুলে ! জীবনে কতবার, কতপথে, ওই আঙুলের নির্ভরতা সে পেয়েছে।ভাবে একরাম, ভাবে। ভাবতে ভাবতে সহসা সে আবিষ্কার করে— কই, এবার তো চোখে জল আসছে না গলগলিয়ে। তবে কি সে ধীরে ধীরে এতদিনের চেনা পরিচয়ের খোলসটি ছিঁড়ে নির্মোক হতে পেরেছে ! কলহৃদয়ের মালিক মানুষ হয়ে উঠলো ! গত কয়েকমাস দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া দমকা সমস্ত মানুষের বুকের কবজা এইভাবে বদলে দিল ! নাকি, একেই বলে শোক। দুঃখের তরল শুকিয়ে ভাপ হয়ে কোথায় যে উবে গেছে। ফাঁকা হয়ে যাওয়া ওই জায়গাটাতেই স্ফটিক জমে যাওয়া গোপন বেদনা ঘর বেঁধেছে। শূন্যমনের অবকাশ পেলেই কলকল আওয়াজে বেজে উঠবে ! ঠিক এইসময়েই একরামের সারা শরীর কেমন অবরুদ্ধ হল, থরথর কেঁপে উঠলো দেহখানা।
চন্দ্রমোহনের চমক লাগে। ছেলেটা তাঁর আঙ্গুলগুলো বড়ো জোরে চেপে ধরেছে। এমনটা স্বাভাবিক নয়। উদ্বিগ্ন তিনি জিগ্যেস করলেন,- কী ঘটিছে, বাপ?
থামলো একরাম। গুচ্ছবাঁধা উর্ধ্বমুখী শ্বাসপ্রবাহকে জোর করে আলজিভের নিচের নরকে ডুবিয়ে দিল, তারপর, অতিশান্ত, বলে সে, — কিছু হয় নাই, জ্যাঠামশাই।… চলেন।
পিছনে সাধনের কাঁধে হাত রেখে কোনওরকমে পা ফেলছিলেন হেমশশী। কোমর থেকে গোড়ালি যেন বশে নেই, দুম করে বাজপোড়া তালকাণ্ডের মতো ভেঙেপড়বে। ডাকলেন— শোনেন এট্টু।
অগ্রগামী বাহিনীটি থেমে যায়, পিছদল এগিয়ে আসে।
হেমশশী, এখনও নরম তার কন্ঠের রব— আমাগের এই দশা হল্যো।নীলু তো কিছুই জানবের পারলো না।উয়ের ঠিকেনাটা আপনি জানেন তো।তারে এট্টা খবর দিলি হয় না ! হয়তো আসি কিছু গতিক করি দিতি পারবেনে।- চন্দ্রমোহনের চোখ ক্ষণিকের জন্য জ্বলে উঠেছে, আঁচ পেয়ে আরো বিড়ম্বিত হন— না, না, আমি কলাম কী…।- আর কথা আসেনি, বদলে চোখে জল এলো, সতেজে এবং সজোর শব্দে ।
তখন চন্দ্রমোহন, কষ্টে, নিজেকে শান্ত করছেন, শেষে বললেন— ও নচ্ছারের নাম আমার কাছে কবা না। যদি কখনও আসে, আমার য্যান উয়ের মুখ দেখতি না হয়। এ জেয়নকালে। আমি উপরে গেলি তুমি তারে কি করবা, সিটা তুমিই বোঝবা।
হেমশশীর কান্না এবার উদ্বেল হয়। চন্দ্রমোহন এত নিষ্ঠুর ! কী চিনেছিলেন তিনি মানুষটাকে ! এতদিন ধরে ! আজ, সব হারিয়ে, হেমশশী, মা কেবলই গর্ভধারিণী, যেন সীমাহীন জলস্রোতে ভাসমান, যেন অসহায়, যেন কুটো আঁকড়ে, বাঁচার না-সম্ভব আশা করে, একফালি সাহস বুকে ভরলেন, কথা এলো জিভে— ছাবাল বোয়েরে নিয়ি দেশ ছাড়ি আসিছে বলি আপনের রাগ ! আমরাও তাই করি আলেম। তয় ?
আশ্চর্য, চন্দ্রমোহন তথাপি অবিচল থাকতে পারলেন— না, নীলুর মা, উয়ের উপর কুনো রাগ অভিমেন নাই। ভুল বোঝবা না। শোনো, যে পুত্তুর তার বাপ পেতেমোর উত্তরেধিকার নিতি চায় না, সে সন্তান না। আমি আর নীলুর বাপ না, জন্মদান করলিও না।—চোখ বুঁজে এলো।
মোটরযানটি কালো কাপড় ঢাকা জিপগাড়িটা একটু পিছনে গিয়েই ঘ্যাঁক শব্দে ব্রেক কষেছে, এখন ধীরে ধীরে পিছিয়ে আসছে, পঁক পঁক, বেলুন হর্ণটা বেজেই চলেছে। কাছে এসে থামলে লাফ দিয়ে নামে পাঁচ ছয় খাকি জামা প্যান্ট
সবাই থ দাঁড়িয়ে পড়েছে, যেন অকস্মাৎ এত শান্ত নাদে ভয়ংকর এক বজ্রপতন ঘটে গেল, এখানে, এইমাত্র।
রাস্তাটা কড়া অ্যাসফল্টে কালো। তবে পরিসর স্বল্পই ।
চারজনের মুখে, দূরেই, একটা মোটর গাড়ির আভাস, বোধহল এদিকেই আসছে। হর্ন বাজছে জোরে। আকাশের কালচে ভাবটা অনেকখানি আবছা হয়ে এলেও ওই মোটরের জোড়া হেডলাইট রাত আঁধারে হায়েনার চোখের মতো জ্বলে সকলকে শিউরে তোলে। চকিতে ওরা পাশসীমানা ভেঙে চিলতে ধুলোয় পা রাখে। যতটা পারে সরে যায়।
মোটরযানটি কালো কাপড় ঢাকা জিপ। সেটি পাশ কাটিয়ে চলে যেতেই হঠাৎ ভয়ের হাঁফটা থিতোয়। কিন্তু গাড়িটা একটু পিছনে গিয়েই ঘ্যাঁক শব্দে ব্রেক কষেছে, এখন ধীরে ধীরে পিছিয়ে আসছে, পঁক পঁক, বেলুন হর্ণটা বেজেই চলেছে। কাছে এসে থামলে লাফ দিয়ে নামে পাঁচ ছয় খাকি জামা প্যান্ট।
— আপনারা ?
যে লোকটা প্রশ্ন করে সেই, মনে হয়, এই সওয়ারিদের সর্দার, কেননা বগলে, পকেটে বাঁশিবাঁধা রঙিন ফিতে, কোমরে খাপগোপন ছোটো বন্দুক ঝুলছে।
— আমরা ওই দেশ থেকি পলায়ে আসিছি। — চন্দ্রমোহনের উত্তর সামান্যতম বিকার পায় না।
— দেখেছেন, স্যার ? নেড়েরা থাকতে দেবে না হিন্দুদের। —বলে উঠেছিল পাশ থেকে একজন।
সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন যোগ করেছিল— মিরজাফরের জাত। অথচ, এদিকে আমরা ! ওদের জামাই আদর করছি ! আমাদের হাত পা বাঁধা, নইলে… ।
— আঃ ! হচ্ছেটা কী ! বাঁশি সর্দারের বিরক্তি ঝরে— কেদার, এদের সামনে ! – সে তার কাছে যায়, কানে যায়, চাপা গলায় গজরায়— বড়োবাবু মহামেডান। মাথায় আছে ? কে কখন তার কানে গুঁজে দেবে। তারপর রিপোর্ট পাঠাতে কতক্ষণ লাগবে ? —এবার চারজনের দিকে ফেরে সে— তা, আপনারা এখানে এলেন কি করে ? টাকি তো অনেকটা দূর।
— মাঝি আঘেটায় নামায়ে দেলো । —সত্যিকে মিথ্যে , মিথ্যেকে সত্যি করে চন্দ্রমোহন জেরার জবাব দিয়ে চলেছেন, যেন বুদ্ধিমান দুষ্ট ছাত্র, বদরাগী মাস্টারমশাইকে কৌশলে আটকে রাখার ফন্দিতে দড়।
— কোন আত্মীয়স্বজন আছে ? এদেশে ?
— না।
— এখানে কোনও রিফিউজি রিলিফ সেন্টার নেই।— সেই পকেটবাঁশি লোকটা কি ভাবে, দুবার আঙুলে কপাল বাজায়, তারপর বলে— নিন, উঠুন গাড়িতে।
একরাম উঠলো না। বন্দুকবাবু সন্দেহের চোখে তাকায়। একরাম জানায়, সে দেশে ফিরে যাবে। আজ জেঠা জেঠিকে, ছোটো ভাইকে, পৌঁছে দিল। ছোটো নৌকায় পারাপার তো। কাল পরশুর মধ্যে, যদি বেঁচে থাকে সকলে, বাবা– মা–বউ বাচ্চা নিয়ে আসবে। ঘরবাড়ির বেচাকেনা, যাই হোক, একটা বন্দোবস্ত, করে আসতে হবে। মাঝিকে বলা আছে। ঘাটে গিয়ে ইশারা করলেই চলে আসবে। ঘাট মানে ওই আঘাটা।
হাবিলদারের সন্দেহ যায় না, চোখ টিপে একরামের দিকে তাকিয়ে থাকে, দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে বলে— আপনার নাম কী ?
তড়িঘড়ি সুস্পষ্ট জবাব ফিরলো– রাম। রামমোহন আচার্য।
হেমশশী গাড়ীর ভিতরে, একটুখানি মুখ বাড়িয়েছিলেন, একরামকে কিছু বলার ছিল।
গাড়িটা ভঁ-অ-ক ভঁ-অ-ক শব্দে নোংরা গর্জন তুলে, নড়ে, কেঁপে উঠলো, পিছন দিকের নলফুটো দিয়ে দাস্ত করে দিল কটুগন্ধে ঘৃণা জাগানো একরাশ কালোধোঁয়া। হু হু মন একরামের ফ্যাকাশে চোখজোড়ার সামনে দিয়ে কালোজিপ কোন দিয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল।
ক্রমশ…
আগের পর্ব পড়ুন: পর্ব ৫
❤ Support Us