- ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
- ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
মাটি ব্রতের আখ্যান । সপ্তম পর্ব
গাড়িটা ভঁ-অ-ক ভঁ-অ-ক শব্দে নোংরা গর্জন তুলে, নড়ে, কেঁপে উঠলো, পিছন দিকের নলফুটো দিয়ে দাস্ত করে দিল কটুগন্ধে ঘৃণা জাগানো একরাশ কালোধোঁয়া। হু হু মন একরামের ফ্যাকাশে চোখজোড়ার সামনে দিয়ে কালোজিপ কোন দিয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল...তারপর
অলঙ্করণ: দেব সরকার
ধা রা বা হি ক · উ প ন্যা স
।। সোরোত কান্ড ।।
॥ আন দুনিয়ের জানেলা ॥
তিন মাস পার হয়ে গেল।
নীলাম্বর মালদায় এসে কোনও কাজ জোটাতে পারেনি এখনো। মন মেজাজ মরা ফেসা মাছের মতো চ্যাপটা চিতিয়ে থাকে। ঝোঁকের বশে দেশ বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিল। কাজটা বোধহয় ঠিক হয়নি। মাঝে মাঝে, হঠাৎ অসময়ে এরকম মনে উদয় হয়। স্নেহলতার উস্কানি যে ছিল, সেটাই বা অস্বীকার করবে করে। আসলে, পৌরুষ তাকে পীড়া দিচ্ছিল — বউয়ের কাছে ছোটো হয়ে যাচ্ছিল সে। এখন মনে হয়, সিদ্ধান্তটা হঠকারী হয়ে গেছে।
কিন্তু এখন কি উপায় ! নীলাম্বরের ভালো লাগে না কিছুতেই। গর্ভবতী স্ত্রীকে সঙ্গ দেওয়া দরকার। সে জানে, বোঝে, মানেও। অথচ বউ এসে বসলে মুখে কথা আসে না। মুহূর্তগুলি অপরম শূন্য হয়ে পিছলে যায়, ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়।
নীলুর চোখে পড়েছে — স্নেহলতাও কেমন যেন হয়ে পড়েছে। কথাবার্তা পারতপক্ষে বলতে চায় না। শরীরটা দ্রুত ভাঙছে। হয়তো এটাই কারণ। কিংবা… নীলু মাথার চুল খামচে ধরে টানে, ছিঁড়ে ফেললে বোধকরি তৃপ্তি আসবে। পেটেরটার কথা কি বেশি ভাবাচ্ছে স্নেহকে? উদ্বেগে সবসময় তীক্ষ্ণ থাকছে? নীলু যেন পুকুরে না জেনে ডুবে গেছে, পায়ের নিচের মাটি পাচ্ছে না। হয়তো…
কোথাও কিছু করার নেই। নীলু বসে থাকে। ঠায়। উদাস। চৌকির উপরে। বালিশে ঠেসান দিয়ে সামনে জানলা, চৌকাঠে লোহার গরাদ লম্বালম্বি ঠোকা, যেন কারাগারের সেলের বাধা, তা পেরিয়ে চোখ গলে যায় বাইরে। সামনে বেশ খানিকটা জমি।শীতন্যাড়া। কবে বর্ষা ! তবে সবুজ হবে। খোলা মাঠের মতো লাগে। তারপর কালু রাস্তা,ধনুকের মতো বাঁক। পথ মাড়িয়ে লোকে চলে, সাইকেলের ঘন্টি বাজে, সওয়ারি চালিয়ে রিক্সাওয়ালা প্যাডেল টানছে দেখা যায়।একটা দুটো গরুর গাড়ি, বলদগুলো নাদা ফেলতে ফেলতে যায়, ঠিক তার পিছনেই গোবরটুকানি বুড়ি, নাতনিকে সঙ্গী নিয়ে ত্যক্ত বস্তুভান্ডার টপাটপ বালতিতে ভরে। পাত্রের টানে সে বুড়ি কুঁজো হয়ে হাঁটছে, বালতির বাঁকা হাতলে ছোট্ট মেয়েটি হাত লাগায়। এখানে সবাই কিছু না কিছু করছে। ব্যস্ত। শুধু সেই… নীলাম্বর আর ভাবতে চায় না, মাথা সজোরে এই দৃশ্য কলার আড়ম্বর থেকে দূরে অন্য কোথাও পালিয়ে যেতে চায়।
নীলু মেঝেতে মাদুর কাঁথা পেতে শোয়। প্রায় রাত্তিরই ওর আঘুম কাটে। অসোয়াস্তি এড়াতে আজ গায়ে চাদরটা জড়িয়ে ওই বারান্দায় এসে শ্বাস নিচ্ছিল। মনে মনে যে শূন্য অন্ধকার গুহার মুখটা ও দেখছে প্রতিক্ষণ, সেটাকে চূর্ণ করে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য কড়ির বাজি খেলছিল একা একা
দেশবাড়িতে এ অবস্থাকে ভাদোম্মায় পাওয়া।বাদামের খোলের ভিতরে ঠিক যেন বাদামের দানা গুটলি পাকিয়ে যায়। প্রথমে একটু ঢকঢক ঢকঢক আওয়াজ, তারপর একসময় সে শব্দ মরে যায়। দানা দানাগুলো গুটোতে গুটোতে কোনও এক সময়ে ইটের মতো শক্ত হয়ে যাওয়া। নির্জীব। প্রস্তরীভূত। ভাদোম্মা বিটাছাবল যে আসলে মৃতপুরুষ। হয়তো এরকম টিকতে টিকতে কোনও একদিন, শুভদিনই বলা যাবে তাকে, কাকপ্রত্যুষের চেয়েও আগের ভোরে, কী পেঁচার রাতে… কুয়োর জলতোলা দড়ি, নদীর আঘাটা, দূরে অচেনা জমিতে চিড় ধরানো রেলের লাইন, না হয় ভরাক্ষেতে ধেড়ে ইঁদুর মারার বিষতেল… কিছু একটা বটেই। নীলু দু তালু দিয়ে চোখে চাপড়ায়, মাথা ঝাঁকিয়ে তোলে, ডুকরে উঠতে যায়, পারে না, রুদ্ধস্বরে ফসকে বেরিয়ে পড়ে জিভগলা এক শব্দ— বাবা !
কতদিন পর চন্দ্রমোহন এমনভাবে মনে পড়লো নীলুর।
কানে তুলো গুঁজে রাখা যায় না। যদি সেটা পারতো নীলু।
শ্বশুর শাশুড়ি কথা বলছিলেন। গলা যথাসম্ভব খাটো ছেঁটে। বারান্দা পেরিয়ে উঠোন। তখন সেখানে আলো পড়েনি।
স্নেহলতা চৌকিতে ঘুমিয়ে আছে। ওর এখন শোওয়ার জায়গাটা একটু বেশি দরকার। চৌকিটাও বড়ো নয়।
নীলু মেঝেতে মাদুর কাঁথা পেতে শোয়। প্রায় রাত্তিরই ওর আঘুম কাটে। অসোয়াস্তি এড়াতে আজ গায়ে চাদরটা জড়িয়ে ওই বারান্দায় এসে শ্বাস নিচ্ছিল। মনে মনে যে শূন্য অন্ধকার গুহার মুখটা ও দেখছে প্রতিক্ষণ, সেটাকে চূর্ণ করে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য কড়ির বাজি খেলছিল একা একা। তখনই আঁধার পিছলে আসা বাক্যালাপ তার কানে এসে পৌঁছেছিল।
শাশুড়ি বলছিলেন, জামাই বাবাজির কাজের বেবুস্থা কত্তি পাত্তিছেন না ! ঘেন্না, মেয়েটার দিকি যে আর তাকান যায় না।
— ক্যান, স্নেহ কিছু বলিছে ?
— ও কী আর কবে? সুয়ামি কিছু উপায় পাত্তি না করলি বোয়ের মান থাকে না। আমার স্নেহ মরমে মরি রয়িচে। ইদিকে যে আমার সোমসার চালান দায় ঠিকিছে। সবই তো আপনি বোঝেন। আপনে পুরুষ মানুষ। সহ্য করতি পারেন।আমি যে…।—বোধহয় কান্না চাপতে গিয়ে শাশুড়ির কথা হারালো।
— যাক ও সব কথা। কী কতিছিলা,কও।
— ছেলি বোয়েরে নিয়ি ভেন্ন হয়ে গেল। মুখির উপুর বউমা কী কয়ে গেল শোনতে পান নাই?
— কী কয়িচে?
— বাপ মায়ের উপর ছেলি কর্তব্য করবে। ঠিকই তো। তাগের তো ফেলান যায় না। লোকে কি কবে! তাই বলি বুন বুনপতির জুয়াল টানতি যাবে ক্যান সে? ঠাকুজ্জি আবার প্যাট বাঁধায়ে আসিছে। ছ মাসের ভরা কোঁক। কাল বাদ পরশু। আরেট্টা পুষ্যির খচ্চা ! — আরে কলো, … ঠাকুরের তো ওইটুকান মাইনে।আপনার ছেলেরেই তো বইতি লাগবে। আমারো তো সোমসার আছে। নাকি? —বলতে কাঁদছিলেন, একটু থেমে সামলালেন — দেশির কুঠিতে যে বোয়ের কথাখান সরতো না,সেই বউ মুখি বিষ তোললো ! কোন শিক্ষে পালো, এ দেশিতে আসি !
—দু:খু বাদ দেও, স্নেহের মা। দেখি, কী করা যায়। বাবাজীবনের নিজির তাগেদখানও যে কম।বেয়াই বেয়ানেরে যে পত্তর লেখবো,উপায় নাই ! ডাক যাতায়াতে ভীষণ গন্ডগোল! কবে যে চেডিখান সে বাড়ি যাবে! কে কবে।
— যা হয়, কিছু করেন। আপনের তো কত জানাশুনা। মান—সনমানের কথা ভাবলি চলবে না। বাবাজি দুডে ট্যাকা কামালিই স্নেহের মোখে হাসি ফোটবে। আপনি দেখেন। —শিশিরের মতো মিনতি ঝরছিল সে শাশুড়ি মায়ের।
যাদবচন্দ্রের সমস্যাটা গভীরতর।
খুলনা টাউনে তিনি ছিলেন হিন্দু মহাসভার মাতব্বর গোছের। দেশত্যাগের সময় তার ও ছেলে হরীশের কাজের অফিসে ট্রান্সফারের ঝামেলাটার সুরাহা করে দিয়েছিলেন দেবপ্রসাদ ঘোষ—ডি পি ঘোষ নামে বিখ্যাত। মহাসভার ডাকসাইটে নেতা।ডি পি জির সঙ্গে যাদবচন্দ্রের যোগটা কিন্তু মহাসভা নয়। অন্যত্র।প্রথম যৌবনে যাদবচন্দ্র ছিলেন গনিতের মেধাবী ছাত্র। গণিতবিদ অধ্যাপক ছাত্রকে স্নেহ করতেন। সংসারকৃচ্ছতায় যাদবচন্দ্রের বেশি দূর এগোনো হলো না। গুরুশিষ্যের সম্পর্ক বন্ধনটি রয়ে গেছিল।ছাত্রের সঙ্গে ক্বচিৎ দেখা হলে ডি পি ঘোষ খেদ করতেন— এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট একটা ব্রাইট বয়কে হারালো।সেটাই বিপদকালে কাজে লাগিয়েছিলেন যাদবচন্দ্র।স্যারও দেশ ছেড়েছেন।এদেশে এসে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলে তৈরি করেছেন নতুন দল—ভারতীয় জনসংঘ।
যাদবচন্দ্রের সমস্যাটা সেখানেও নয়।ভেবেছিলেন হিন্দু বাংলায় মহাসভার জোর থাকবে।মালদায় পা ফেলেই অনুভব করলেন এখানে বরং উলটো।রতনলাল ব্রাহ্মণ নামের এক কমিউনিস্টির প্রভাব সব ঘরে। আরো একজন আছেন, তার নাম ত্রিদিব চৌধুরী,তার দলের নাম বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী দল,তিনিও কম যাচ্ছেন না।মালদায় ওই দুজনে মিলে তামাম মানুষকে জঙ্গি বানিয়ে তুলেছে। কাজেই জামাইয়ের ব্যাপারে নিজের সংযোগসূত্রে কিছু জোগাড় করা যে কঠিন।
অফিসেও তার সমস্যা। অবসরের ঘন্টা বাজলো বলে। কাগজপত্তর তৈরি করা যাচ্ছে না। তথ্যসাবুদ পড়ে আছে ফেলে আসা দেশে। কাজ ফুরোলে হাতে কী পরিমান টাকা পাবেন চিন্তায় কত রাতে চোখের পাতা মনি ঢাকে না। তবু অফিসের বড়ো কর্তাকে ধরেছিলেন, বিনীতভাবেই —পিওন টিওনের কাজও যদি হয় !—সাহেব সদাশয়, বলেছেন—দেখছি। এখনও দেখে উঠতে পারেননি।
বইটা বাবার অবকাশ যাপনের খেয়াল ছিল। বিশেষ কাজে লেগেছে তা নয়।তবু হাতের কাছে রাখতেন। কখনো পুস্তকাদেশ মেনে কিছু করেছেন। ফল হয়েছে কিনা তার সঠিক সাক্ষ্য ও সাক্ষী উভয় পাওয়াই মুশকিল
সহকর্মীদের কাছে মুখ খুলতে বাধো ঠেকে। সকলেই ব্রাহ্মণ, নয় চৌধুরী ঘেঁষা। হয়তো ব্যঙ্গ ছিটিয়ে দিল— সে কী, যাদবদা ! আপনার তো লম্বা হাত। কত নাম বলেন ! ডি পি ঘোষ, শ্যামাপ্রসাদ, লক্ষীকান্ত মৈত্রেয় !
হরীশ চাকরিটা পেয়েছে সেটেলমেন্টে। হরেক ফিকির সে দপ্তরের ঘর, বারান্দায়, উঠোনেও। ভগ্নীপতির জন্য একটু চেষ্টা করা যেতো না? ছোটো বোনটা তো ওরই ! করলো না। আজকালকার ছেলে ! বাপই এখন ত্যাজ্য।
ভাবনার থই না পেয়ে যাদবচন্দ্র হাহাকার করেন। মনে মনে। একা।
নীলুর আশ্রয় বলতে একখানা বই।
বইটা বাবার অবকাশ যাপনের খেয়াল ছিল। বিশেষ কাজে লেগেছে তা নয়।তবু হাতের কাছে রাখতেন। কখনো পুস্তকাদেশ মেনে কিছু করেছেন। ফল হয়েছে কিনা তার সঠিক সাক্ষ্য ও সাক্ষী উভয় পাওয়াই মুশকিল। বইটা চন্দ্রমোহনের অহংকার ছিল।
স্নেহকে নিয়ে চলে আসার সময় নটঘটে নীলাম্বরের সুটকেসে ঢুকে যায়।এখন মরাজীবনে সেটাই তাকে রূপকথার স্বপ্নভূমিতে নিয়ে যায়। এতখানি জীয়নকাঠি ! কিছুই যেন বাস্তব নয়। অথচ সবটাই ভরাবাস্তব। আশ্চর্য রকমের। ফ্যানটাসির এই খেলাতে ডুবে যায় নীলু, হঠাৎ ভাঙা খেয়ালে দেয়ালভাঙ্গা আওয়াজে হেসে ফেলে। তারপরই লজ্জা পায়, কেউ শোনেনি তো ! ভয় তাকে গিলে ফেলে। তার যে বিমর্ষ থাকা উচিত।
গ্রন্থটি ডা: শশীকরণ মজুমদার প্রণীত— এডভান্সড মেটেরিয়া মেডিকা(হোমিও) ও তার প্রয়োগ বিধি।
কতবার পড়া। প্রায় মুখস্তই। তবু একটা পৃষ্ঠা বেছে পড়তে শুরু করলো নীলাম্বর।লেখা আছে—
আমি তখন আসানসোলে বাসা করিয়াছি। প্রভাত হইলেও বেলা অধিক হয় নাই। এমতকালে পালকি চাপিয়া তিন চারিজন ঊর্ধ্বশ্বাসে আমার প্রাঙ্গনে প্রবেশ করিল। ডাকিয়া ঢুকিবার ভদ্রতাজ্ঞানও যেন তাহাদের লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। জানিলাম, তাহাদের রুগী গৃহে মুমূর্ষুপ্রায় হইয়াছে। কলেরার প্রকোপ দেখা দিয়াছে গ্রামে।রুগীর উদরযন্ত্রণা ও দাস্ত হইতেছে। নিকটস্থ সরকারি আরোগ্য নিকেতন হইতে ঔষধ আনিয়া খাওয়ানো হইয়াছে। কিছুমাত্র উপকার সাধিত হয় নাই।বুঝিলাম, বাইতে হইবে। তখনো আমার প্রাত;কৃত্যাদি, প্রভাতাহ্নিক ও প্রাতরাশ কিছুই হয় নাই। চিকিৎসা বিদ্যার এই এক সমস্যা ! যাহাই হউক কোনক্রমে প্রস্তুত হইয়া, ঔষধের পেটিকা লইয়া,পালকিতে উঠিয়া বসিলাম। বেহারারা প্রাণপণে টানিতে লাগিল।অনুমান করি, প্রায় বিষ ক্রোশ আসিয়াছিলাম। পঁহুছিয়া দেখিলাম, রুগীকে উঠানে নামান হইয়াছে। অন্তিম সম্ভাবনায় একটু দূর করিয়া খোল করতাল সহযোগে হরি নামগান শুরু হইয়াছে চাপাকন্ঠে। আরো শুনিলাম, ভেদবমিও সকাল দশ ঘটিকা হইতে আরম্ভ করিয়াছে। এখন বেলা দ্বিপ্রহর গড়াইয়া যাইতেছে।বুঝিলাম, অপচিকিৎসার(এলোপেথিক) এইরূপ বিপর্যয়। কী আর করি !মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দ্বয় ও মহাত্মা হ্যানিমেনের নাম একত্রে স্মরণ করিয়া পেটিকা হইতে কনোট অক্সিটিয়াম ৬০০ শক্তির শিশিটি বাহির করিলাম। রুগী নয় রুগিনী। এই ঘরে নবাগতা নববধূ। তাহার ওষ্ট টানিয়া দেখি দাঁত প্রায় লাগিয়ে গিয়াছে। এদিকে নাড়ীর গতি প্রায় শূন্য হইবার মুখে। চামচ দিয়া দাঁত ফাঁক করিয়া অতিকষ্টে এক মাত্রা ঔষধ জিভে দিলাম। বসিয়া রহিলাম প্রায় দুই ঘন্টা কাল। বৈকালে ওই রুগিনী বালতি লইয়া প্রাঙ্গণ প্রান্তে স্থিত কূপ হইতে জল তুলিতে গেল। সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন করিলাম। সারাদিন প্রায় অনশনে।আতুরে নিয়মো নাস্তি।অতএব প্রথমে আহ্নিক সারিয়া পরে মলত্যাগ করিয়াই খাইলাম।নীলাম্বর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বই বন্ধ করে। আহা ! জীবনটা এরকম চমকিয়া কুহুকিয়া হতে পারে না।
ক্রমশ…
আগের পর্ব পড়ুন: পর্ব ৬
❤ Support Us