- ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
- আগস্ট ২৭, ২০২৩
চর >।পর্ব ৮।

অলঙ্করণ: দেব সরকার
ধা রা বা হি ক · উ প ন্যা স
•১৫•
মালতীর এখন বসার সময় নেই। সারাদিন সারিকে নিয়ে ব্যস্ত। কতদিন নিজের হাতে সারিকে খাওয়ায়নি। কত রকমের খাবার করছে। আর দুদিন থাকবে সারি। তারপর চলে যাবে মুম্বাই। আনন্দের পাশে গোপনে গোপনে মালতীর প্রাণে বাজছে বেদনার সুর। বিচ্ছেদের সুর। মাঝে মাঝে মন খারাপও হচ্ছে তার। জামাই আসবে না। এত কাছে এসেও জামাইয়ের সাথে দেখা হবে না এটা কেমন কথা। সারিকে মালতী বার বার বলছে জামাইকে ফোন করে ডাকতে। পরাণ একবারও জামাইয়ের কথা তোলেনি। তাই সারিও জামাইকে ডাকতে পারেনি। বাপের মনের খবর পড়তে পারছে না সারি। রাতে শুয়ে স্বামীকে যে কিছু বলবে মালতী, সেই সময়টুকুও সে পাচ্ছে না। রাতে সারি, নাতি আর ছোট মেয়েকে নিয়ে এক বিছানায় চাপাচাপি করে শুয়ে থাকে। দিনের বেলা কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। পরাণকে এটা ওটা আনতে বলে। কিন্তু জামাইয়ের কথা বলতে ভুলে যায় সে।
আজ দুপুর বেলা খেতে দিয়ে মালতী পরাণকে বলল, “একবার জামাইকে খবর দাও না। নিজের মুখে একবার ডাক। এত কাছে আস্যাও জামাইয়ের সাথে দেখা হবে না, এটা ক্যামন কথা !”
খেতে খেতে বলল পরাণ, “আমারও মন যে একথা বলছে না তা নয় মালতী। আমারও তো ইচ্ছ্যা হয় জামাইকে একবার ফোন কর্যা ডাকি। হাজার হোক। নিজের জামাই তো নাকি !”
মালতী বলল, “তো ডাকনা ক্যান? একবার ডাক তুমি।”
খেতে খেতে পরাণ আবার বলল, “তোর সব কথা শুন্যাছি মালতী। কোনও কথায় না বলিনি। কিন্তুক আজ আমাকে জামাইকে ডাকতে বলিস না। এটা আমি পারব না।”
মালতী বলল, “ ক্যান ? পারবা না ক্যান ? ”
চুপ করে খেতে থাকল পরাণ। একটু পরে বলল, “এমনিতেই গ্রামের মানুষ রাগ্যা আছে আমাদের উপর। তারপরে আবার জামাই এলে আরও রাগ্যা যাবে। তাছাড়া…”
মালতী বলল, “কী তাছাড়া ?”
“তাছাড়া আমিও চাইনা জামাই এখানে আসুক। গ্রামের মানুষের হাতে অপমানিত হোক।” খাওয়া প্রায় হয়ে এসেছিল। থালাতে হাত ধুতে ধুতে বলল পরাণ।
“ক্যান ? গ্রামের মানুষ অপমানিত করবে ক্যান?” থালা তুলতে তুলতে বলল মালতী।
“তুমি জানতো। এমনিতেই গ্রামের মানুষ আমাদের উপর চট্যা আছে। তার উপর জামাই আবার হিন্দু। সবাই জান্যা গেলে কী অবস্থা হবে জানতো ?” পরাণ বলল।
“কী আর হবে শুনি ? এখনকার যুগে কতজনে কত কী করছে ? কে কার খোঁজ রাখে ? আমরা বলতে যাব নাকি যে আমাদের জামাই হিন্দু ?” মালতী থালা রাখতে রাখতে বলল।
“এখনকার যুগে বলতে হয় না মালতী। সব এমনিই জান্যা যায়।” পরাণ আবার বলল।
“দ্যাখ। কেউ জানে না। জানতেও পারবে না। তাও যদি জানে তো জানবে। তাতে আর কী করা যাবে ? তার জন্য জামাই আনব না তা হতে পারে না। তুমি ফোন কর। জামাইকে ডাক।”
এই সময় সেখানে উপস্থিত হল সারি। বাবা ও মায়ের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝতে পারল না। বলল, “কী হল মা তোমাদের ? তোমরা কী নিয়ে এত কথা বলছ ?”
পরাণ ও মালতী দুজনেই চুপ করে থাকল।
তাদের চুপ থাকতে দেখে সারি বলল, “তোমরা কি আমাকে নিয়ে কিছু বলছিলে ?”
এবার মালতী বলল, “নারে না। ভাবছিনু জামাইকে একবার ডাকব। তোরা তো আবার চল্যা যাবি। জামাই যখন আস্যাছে, সেও একবার ঘুর্যা যাক। কবে আবার আসবে কি আসবে না! দেখতে পাব কি পাব না !”
সারি বলল, “আমিও তো মনে মনে তাই ভাবছিলাম মা। কিন্তু তোমরা তো কিছু বলছ না। তাই আমি ফোনে ডাকিনি।”
মালতী বলল, “বলাবলি আর কী দরকার। তুই একবার ডাক না। আমার কথা বল একটিবার দেখতে চাইছে।” বলে মালতী পরাণের দিকে তাকাল।
পরাণ বলল, “তাই কর সারি। একবার সমীরকে ডাক। বল আমরা ডাকছি।”
সারি চুপ করে একবার বাবার দিকে তাকাল। তার মনের ইচ্ছে বাবা নিজে একবার ফোন করে ডাকুক। মেয়ের মনের কথা মালতী যেন বুঝতে পারল। সে বলল, “সারি ফোন করবে ক্যান ? তুমিই একবার ফোন করোনা। তোমার ফোন করার দাম আছে না !”
পরাণ সামান্য চুপ থাকল। তারপর বলল, “ঠিক আছে। ফোন কর। আমি কথা বুলছি।”
জামাই এল পরের দিন বিকেলের দিকে। নদীর ঘাটে সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়েছিল পরাণ। মেদিনীপুর থেকে শিয়ালদহ। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চেপে সরাসরি ভগবানগোলা ষ্টেশন। সেখান থেকে টুকটুকিতে চেপে আখরিগঞ্জের ঘাট। ঘাট পার হয়ে পরাণের সাইকেলের পেছন কেরিয়ারে বসে পরানের বাড়িতে যখন পৌঁছল সমীর। সন্ধ্যে নামতে খুব বেশি দেরি নেই। লম্বা, পাতলা। সামনের দিকে বড় বড় চুল। পেছনের দিকের চুল মেপে মেপে ছোট করে কাটা। পরণে জিন্সের প্যান্ট। গায়ে টি শার্ট। দেখে বছর পঁয়ত্রিশ ছত্রিশের মনে হচ্ছে।
সাইকেল থেকে নেমে বাড়ির ভেতরে গেল সমির। সারি ইশারায় মালতীকে দেখিয়ে বলল, “মা।”
নারী ব্যবসায়ীদের নরক থেকে সমীর সারিকে রক্ষা করেছে । এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতার অন্ত ছিল না পরাণের । কিন্তু যতবার সে শুনেছে যে সমীর হিন্দু , ততবার তার মন খারাপ হয়েছে । সারি শেষ পর্যন্ত একটা হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করল ! অতবড় শহরে একটা মুসলমান ছেলে জোটাতে পারল না !
সমীর বুঝতে পারল ইনি শাশুড়ি। তাড়াতাড়ি মালতীর পায়ে প্রণাম করে উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, “ক্যামন আছেন মা ?”
চমকে উঠল মালতী। জামাইয়ের ‘মা’ ডাক হঠাৎ তার মনের মধ্যে কিসের একটা অনুরণন তুলল। পরের ছেলের মুখে ‘মা’ ডাক ! মালতীর মনের ভেতরে আশ্চর্য এক অনুভূতির তৈরি হল। সে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল সমীরের দিকে। যেন কত দিনের চেনা, কত দিনের জানা। শুধু মাঝে কিছুদিনের জন্য দেখা হয়নি। হয়তো কোনও কারণে অভিমান করে সে চলে গিয়েছিল, কতদিন পর সব অভিমান ভুলে আবার ফিরে এসেছে।
আপন মনে মালতী বলে উঠল, “ভালো আছি বাবা ! তোমরা সব কেমন আছ ?”
সমীর এবার মালতীর হাত চেপে ধরে অদ্ভুতভাবে বলে বসল, “সালাম আলাইকুম মা। আমরা সব ভালো আছি।”
মালতী লজ্জায় আসতে করে হাত টেনে নিয়ে মাথায় কাপড় দিল। পাশে দাঁড়িয়েছিল সারি। সমীরকে বলল, “এসো। ঘরে এসো।”
সারির হাত ধরে ঘরে ঢুকে গেল সমীর।
এদিকে গ্রামে কারা রটিয়ে দিল পরাণের বাড়িতে সারির জামাই এসেছে। পরাণের বাড়িতে আরও একবার লোকের ঢল নামল। বিশেষ করে মেয়েদের দল। মাথায় ঘোমটা টেনে কেউ বা উঁকি মারে, কেউবা সরাসরি বসে পড়ে পরাণের উঠোনে। বয়স্ক মেয়েরা সমীরের গালে হাত দিয়ে, থুতনিতে আদর করে বলে, “কত সুন্দর ছেলে রি। আমাদের সারি ভাগ্য করে জন্ম্যাছিল। নাহলে এমন ছেল্যা পায় !”
সমীর লজ্জায় মাথা নীচু করে থাকে।
ধীরে ধীরে পরাণের মনের মধ্যেও একটা ভালো লাগা জেগে উঠছিল। যে মেয়েকে সে ভুলে গিয়েছিল, সে মেয়ে নিজের ইচ্ছেয় যখন এসে পড়েছে, তখন তাকে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। শুধু তার বিয়ে নিয়ে মনের মধ্যে একটা খচখচানি ছিল পরাণের। নারী ব্যবসায়ীদের নরক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছে সারি। এজন্য সারির প্রতি তার ভালোবাসা আরও বেশি জমে উঠেছিল। সমীর তাকে একটা সুস্থ জীবন দিয়েছে। সেজন্য তার প্রতিও কৃতজ্ঞতার অন্ত ছিল না। কিন্তু যতবার সে শুনেছে সে হিন্দু ছেলে, ততবার তার মন খারাপ হয়েছে। সারি শেষ পর্যন্ত একটা হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করল ! অতবড় শহরে একটা মুসলমান ছেলে জোটাতে পারল না !
এ নিয়ে দুদিন আগে মালতীকে বলেছিল পরাণ, “জান মালতী। সারিকে ফির্যা পায়্যা আমার মন যে কত খুশি হয়্যাছে তোমাকে বুঝাতে পারব না। শুধু একটা কারণে মন খচখচ করছে। মন যতবার খুশিতে ভর্যা উঠছে, ততবার বিষিয়েও উঠছে। সে একটা মুসলমান ছেল্যা জোটাতে পারেনি ?”
মালতী চুপ করে থেকে বলেছিল, “যা হয়্যা গ্যাছে, তা নিয়ে এত ভেবেনা তো ! মন ঠিক করো। সব ঠিক হয়্যা যাবে। যে মাইয়্যার বাঁচার কথা ছিলনা, সে বাঁচ্যা ঘুর্যা আস্যাছে, এটা কম নাকি! কোথায় ছেল্যাটার সুনাম করবে, নাতো যত সব আজেবাজে কথা।”
“আমি তো চেষ্টা করছি মালতী! কিন্তু যতবার সারির কথা মনে আসছে, যতবার সারি আমার চোখের সামনে পড়ছে, ততবারই সেই হিন্দু ছেলের কথা মনে পড়্যা যাচ্ছে। আমি কী করব!” পরাণ মালতীর পাশে বসে বলেছিল।
“যত তোমার মনের দোষ ! মন ঠিক কর। সব ভালো লাগবে। হিন্দু হোক আর মুসলমান। আমাদের জামাই মানুষ কিনা দেখ। মানুষ না হলে একটা বেশ্যাখানার মায়্যাকে কেহ বিহ্যা করতে আসে। এসব লিয়্যা আর ভাববা না।”
এই সময় ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল সারি। বলেছিল, “আমি ঘরে থেকে তোমাদের সব কথা শুনেছি বাবা। সমীরকে নিয়ে যদি তোমাদের খুব সমস্যা থাকে তাহলে সরাসরি বল। আমি এখনই তোমাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি।”
সারি যে ঘরে ছিল পরাণ বুঝতে পারেনি। সারির কথা শুনে চুপ করে গিয়েছিল পরাণ। পাশ থেকে মালতী বলেছিল, “বাবার কথা শুন্যা মন খারাপ করিস না সারি। এমনিতে লোকটা তোকে লিয়্যা ভাব্যা ভাব্যা সারা হয়্যা গেছে। তার উপর ওকে আর কথা শুনাস না। ও তো তোর জন্যই বলছে। তুই চল্যা যাবার পর কদিন তো ও পাগল হয়্যা গেছিল। আমরা সবাই ভেবেছিলাম ও হয়তো পাগল হয়্যা যাবে। ”
সারি মায়ের কথা শুনে নিজের কথায় লজ্জা পেল। পরাণের কাছে গিয়ে বলল, “তুমি আমার উপর রাগ করো না বাবা। তুমি জান না কীভাবে আমি ওই নরক থেকে বের হয়ে এসেছি। সমীর আমাকে সাহায্য না করলে আমি কোনোদিন ওই নরক থেকে বেরিয়ে আসতে পারতাম না। তুমি জান না বাবা সমীর কত ভালো ছেলে!” সারির চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়েছিল।
চোখে জল দেখে সারিকে বুকে টেনে নিয়েছিল পরাণ। যেন ছেলেবেলার সেই ছোট্ট চঞ্চল মেয়েটি, যে বাবার বুকে মাথা গুঁজে দিয়ে বলত, “বাবা ! আমি শহরে যাব। তুমি আমাকে পুতুল কিনে দিবে ! খই কিনে দিবে !” আর পরাণ সারিকে আরও বুকের ভেতরে টেনে নিতে নিতে বলত, “শুক্কুরবারের হাটের দিনে তোকে লিয়্যা যাবরে সারি। তুই যা চাহাবি তাই দিব।”
সারিকে বুকে টেনে নিয়ে পরাণ বলেছিল, “আমার ভুল হয়ে গেছেরে মা। আমি আর ওসব কথা বলব না, ভাবব না।”
সারি পরাণের বুকে মাথা গুঁজে দিয়ে বলেছিল, “তুমি একবার ভেবে দেখ বাবা। যারা আমাকে এখান থেকে ভুলিয়ে ডেকে নিয়ে গেল, তারাতো সব মুসলমান। তারাতো আমাকে রক্ষা না করে বিক্রি করে দিয়েছিল। আর যে ছেলেটি আমার কথা শুনে, আমার দুঃখ দেখে আমাকে রক্ষা করল, সে তো হিন্দু! কিন্তু আমার কাছে ও হিন্দু না বাবা, ও একটা মানুষ। আমার কাছে হিন্দু-মুসলমান সবাই সমান বাবা। আমি সেদিন থেকে মানুষকে আলাদা করে দেখিনা। আলাদা করে ভাবিনা।”
পরাণ সারির কথা শুনে চুপ করে গিয়েছিল। আর কোনও কথা তার মুখ দিয়ে বের হয়নি। শুধু সমীরকে দেখে পরাণের মনে হয়েছিল সারি ঠিকই বলেছে। এ ছেলে ভালো না হয়ে পারে না। সমীর খুব সুন্দর ছেল। দেখতেও সুন্দর, ব্যবহার আরও বেশি সুন্দর। এ ছেলেকে পরিচয়ের কোনও বাঁধন দিয়ে বেঁধে রাখা যায় না। এ ছেলে সবার, সব ধর্মের, সব বর্ণের। তাকে আলাদা করে দেখা ঠিক হয়নি। মনের মধ্যে একটা গোপন ভালো লাগা শুরু হয়েছিল পরাণের। সেই ভালো লাগা থেকে পরাণ সারিকে ডেকে বলেছিল, “তোর কথা ঠিকরে সারি। এ ছেলে ভালো না হয়ে পারে না।”
“তোমার ভালো লেগেছে বাবা !” মুখে গোপন হাসি নিয়ে এসে বলেছিল সারি।
আর পরাণ হেসে বলেছিল, “সমীরকে আমার খুব পছন্দ হয়্যাছেরে। তোরা সুখে থাকিস। এটাই আমার একমাত্র চাওয়া। আমি আর কিছু চাইনারে।”
সারি পরাণের পা ছুঁয়ে চুমো খেয়ে বলেছিল, “তোমরা আমার জন্য দোয়া কর বাবা। তোমাদের দোয়া মিথ্যা হবে না।”
আর পরাণ সারির মাথায় হাত দিয়ে বলেছিল, “তোদের জন্য আলাদা করে দোয়া করতে হয়নারে মা। তোদের জন্য সারা বছর এমনিই দোয়া কর্যা থাকি। তোরা সুখে থাকলেই আমার দোয়া সার্থক হবেরে।”
মুম্বাইয়ে ফেরার টিকিট বুকিং করেই এসেছিল সারিরা। দুদিন থাকার পর সারিকে নিয়ে চলে গেল সমীর।
•১৬•
সকাল সকাল বিছানা ছাড়ল সফর আলি। শহরে যেতে হবে। বেশকিছু কেনাকাটার আছে। কিছু ওষুধ, বাড়ির কিছু কাপড় চোপড়, মায়ের জন্য একখানা শাড়ি, চটি, নিজের জন্য একটি জামা, প্যান্ট। একটা পাঞ্জাবী কেনার ইচ্ছেও আছে সফরের। অনেকগুলি কাজ। ফিরতে হবে আজই। সময় বেশি পাওয়া যাবে না। মা সকালে উঠে রুটি আর চা বানিয়ে দিয়েছিল, খেয়ে সাইকেলটা টেনে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল সফর আলি। সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিয়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই দেখল রূপসী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
সফর আলিকে দেখে দৌড়ে এল রূপসী। বলল, “সাত সকালে সেজেগুজে কোথায় যাবা সফর ভাই? কার কী হল?”
“কারও কিছু হয়নিরে রূপসী। একটু শহরে যাব। তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। তাই সকাল সকাল বেরিয়েছি।”
“একটু দাঁড়াও সফর ভাই।”
বলেই রূপসী ছুটল ঘরের দিকে। মিনিট দুয়েক পর ছুটতে ছুটতে বেরিয়ে এল ঘর থেকে। সফর আলির হাতে পাঁচশো টাকা দিয়ে বলল, “আমার জন্য একটি শাড়ি আর ব্লাউজ নিয়ে আসবা সফর ভাই।”
সফর আলি পাঁচশো টাকার নোট রূপসীর হাতে ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা করল। বলল, “এখন টাকা লাগবে না রূপসী। আমি নিয়ে আসি। তারপর দিস।”
রূপসী টাকা নিল না। বলল, “না সফর ভাই। তুমি ফিরে এসে আর টাকা নিবানা। ওসব হবে না। তুমি টাকা নিয়ে যাও।”
সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেল সফর আলি। পদ্মার পাড় দিয়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই বসিরদের থান। থানের পাশ দিয়ে যেতে যেতে থানের দিকে তাকাল সফর আলি। পদ্মার পাড়ে বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে পাটকাটি আর বাঁশের বাতা দিয়ে টাটি বেঁধে ঘর তোলা হয়েছে। খড়ের চালা। ঘরের ভেতরে মাটি দিয়ে একটা কবর মতো করা হয়েছে। তার উপর সাদা কাপড় বিছানো। সাদা কাপড়ের ধারে ধারে আঁচলের মতো করে চিকচিকে ঝালর লাগানো। কবরটি কারও নয়। এখানে কোনোকালে কোনও কবর ছিল না। থান করতে গিয়ে একটা প্রতীকী কবর দেখানো হয়েছে। ঘরের সামনের বেশ চওড়া আর উঁচু দরজা। দরজার পাশ দিয়ে লম্বা বাঁশের মাথায় চাঁদতারা লাগানো চিকমিকে কাপড়ের একটি বড়ো পতাকা। পূবালি হাওয়ায় পত পত করে উড়ছে। ভেতরের দিকে কিছুটা জায়গা জুড়ে মাটি উঁচু করে রাখা হয়েছে। উঁচু মাটির পাশে একটা লগড়া ডালের নিচে পাশাপাশি দুটো চেয়ারে দুজন বসে আছে। একজনের মুখে লম্বা দাড়ি। আরেকজনের ছোট করে কাটা। আর মাটিতে বসে আছে জনা চারেক মেয়ে। সবার মাথায় কালো কাপড় গোল করে জড়ানো। তবে সব কিছু সাজানো গুছানো হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক করে গুছাতে এখনও সময় লাগবে।
সফর আলি পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যেতেই থানের দিক থেকে কে ডেকে উঠল, “আরে সফর ভাই। সাতসকালে যাচ্ছ কোথায় ? শহরে বুঝি ?”
সফর পাশ ফিরে তাকাল। দেখল সেই লম্বা দাড়িওয়ালা লোকটি তাকে ডাকছে। প্রথমে সে চিনতে পারেনি। কিন্তু গলার স্বর শুনে বুঝতে পারল বসির। তাহলে বসির পুরোপুরি দাড়ি ছেড়ে দিল ! লম্বা দাড়ি ! আগে বসির দু’দিন তিন দিন পরপর দাড়ি কামিয়ে ফেলত। কেমন ভাবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়ে গেল বসিরের।
বসিরের ডাক শুনে মাটিতে পা ঠেকিয়ে দাঁড়াল সফর আলি। বলল, “হ্যাঁ বসির। শহরের দিকে যাচ্ছি। কিছু কাজ আছে।”
বসির সেখান থেকেই জোরে জোরে আবার বলল, “একবার এদিকে এসো ভায়া। থানের দিকে ঘুর্যা যাও।”
“একদিন আসব বসির ভাই। তোমাদের কাজ কাম দেখব। এখন সময় নাই। তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে।” সফর আলি সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিল।
নদীর ঘাটে যখন পৌছল সফর আলি, বেলা প্রায় আট’টা বেজে গেছে। দূর থেকে দেখল নৌকা ছেড়ে দিয়েছে। পরের খেয়ার জন্য বসে থাকতে হবে। এখনও প্রায় আধ ঘন্টা বা পঁয়তাল্লিশ মিনিট। ঘাট পার হয়ে ট্রেকারে চেপে ভগবানগোলা ষ্টেশন। সেখান থেকে ট্রেনে চেপে সদর বহরমপুর। এজন্যই লোকে বলে ‘এক নদী হাজার ক্রোশ’।
সফর আলি শহরে পৌঁছল সাড়ে দশটার সময়। প্রথমে গেল ওষুধের দোকানে। একটি ডিজিট্যাল বি পি মেসিন, সুগার মাপার কয়েকটি কিটস, একটি ওয়েট মেশিন, আর কিছু মেয়েদের প্যাড কিনল। চরের মেয়েরা কেউ প্যাড ব্যবহার করে না। কোনও দোকানে বিক্রিও হয় না। তাই সফর ভেবেছে নিজেই কিছু প্যাড নিয়ে যাবে। চেম্বারে রাখবে। কম দামে মেয়েদের বিক্রি করবে আর বোঝাবে কেন তাদের প্যাড ব্যবহার করা উচিত। সবগুলোকে একটি বড় ব্যাগে ঢুকিয়ে সফর আলি গেল কাপড়ের দোকান। নিজের একটা জামা, গেঞ্জী, আর একটি পাঞ্জাবী কিনল। তারপর মায়ের একটি শাড়ি। সব কেনার পর সমস্যায় পড়ল রূপসীর শাড়ি কিনতে গিয়ে। এমনিতেই এখন সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তারপর রূপসী কেমন শাড়ি পছন্দ করবে কে জানে ? অনেক ভেবে সফর আলি আটশো টাকা দামের একটি সবুজ পাড়ের সুতির ছাপা শাড়ি পছন্দ করল। আর মেরুন রঙের ব্লাউজ। রূপসীর গায়ের রঙ ফর্সা। মনে মনে রূপসীকে কল্পনা করে সফর আলি সব গুলো কিনে আলাদা প্যাকেটে রাখল। বাড়ি গিয়ে যাতে খোঁজাখুঁজি করতে না হয়।
সমস্ত কেনাকাটা শেষ করে সফর আলি ঘড়ির দিকে তাকাল। বিকেল চারটে বেজে গেছে। পাঁচটা দশ মিনিটে ফেরার ট্রেন।
সফর আলি ভগবানগোলা ষ্টেশনে যখন পৌঁছল, সন্ধ্যে ছ’টা বেজে গেছে। এখান থেকে ট্রেকারে চেপে আখরীগঞ্জের ঘাট। ঘাট পার হয়ে সাইকেলে চেপে বাড়ি। বৃষ্টি না হলে ভালো, বৃষ্টি হলে সারা রাস্তা কাদায় সাইকেল ঠেলে যেতে হবে। তাতে রাত প্রায় দশটা – সাড়ে দশটা বেজে যাবে। স্ট্যান্ডে বেশি ট্রেকার ছিল না। সফর আলি তাড়াতাড়ি করে সামনের দিকে একটি জায়গা করে নিল। গাদাগাদি করে বসার পরেও যারা জায়গা পেল না, তারা ট্রেকারের পাদানিতে কেউবা সাইডে ঝুলে পড়ল। শেষে এমন অবস্থা হল ট্রেকারটাকে আর দেখাও যায়না, চেনাও যায় না। দূর থেকে দেখে মনে হতে লাগল অসংখ্য মানুষের একটি ছোট্ট ঢিবি প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলেছে।
বাঁশির সুর ছড়িয়ে পড়ে চারিধারে। গ্রাম , মাঠ , সীমান্ত ছাড়িয়েও চলে যায় দূরে, বহুদূরে। পরাণের মাঝে মাঝে মনে হয় এই যে সীমান্ত। ওপারে যেতে মানা। ওপারের এপারে আসা বারণ। কিন্তু বাঁশির সুর ! তারতো কোনও সীমান্ত নেই। সীমানার হাজারটা কাঁটাতার দিয়ে তাকে বেঁধে রাখে কার সাধ্য। এইতো সে নিজের মতো করে বাঁশি বাজায়। সেই বাঁশির সুর ছড়িয়ে পড়ে দূর থেকে দূরান্তরে
সফর আলি যখন আখরীগঞ্জের ঘাটে পৌঁছল, সন্ধ্যা সাতটার কাছাকাছি। নৌকা ঘাটেই ছিল। বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হলনা। নৌকায় চাপতেই ছেড়ে দিল নৌকা।
ঘাট পার হয়ে সাইকেল নিয়ে রাস্তায় নামল সফর আলি। নৌকার উপরেই মাঝির কাছে শুনেছিল বিকেলের দিকে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তাই রাস্তায় কাদা থাকতে পারে। সফর আলি হাতের ব্যাগ দুটোকে সাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে দিয়ে কাঁধের ব্যাগটি পিঠে ঝুলিয়ে নিল। তারপর প্যান্টের নিচের দিকটি ভালোভাবে গুটিয়ে টর্চ হাতে সাইকেলে চেপে প্যাডেলে চাপ দিল। কিছুদূর যেতেই হালকা কাদা। সাইকেল চালিয়ে যাওয়া যাবে না। অগত্যা সাইকেল থেকে নেমে যেতে হল তাকে। টর্চ মেরে তাকিয়ে দেখল রাস্তার ধারে পাটের জমির ভেতর দিয়ে কেউ কেউ সাইকেল ঠেলে নিয়ে গেছে। সফর আলি তাই করল। সাইকেল ঠেলে পাশ দিয়ে পার হয়ে আবার সাইকেলে চেপে বসল সে। কিছুদূর এগিয়ে আবার দেখল রাস্তায় কাদা। এবার কাদা আর জল মাখামাখি হয়ে আছে। ঠিক কী করতে হবে বুঝতে পারছিল না সে। কে জানত আজ এভাবে বিপদে পড়তে হবে ! টর্চ মেরে এদিক ওদিক তাকিয়েও কোনও রাস্তা দেখতে পেল না। ঘোলা জলে সাইকেল ঠেলেই পার হতে হবে। এছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। রাস্তার দুই ধারে উঁচু উঁচু পাট। হাওয়ায় সব মাথা নীচু করে আছে। টর্চ বন্ধ করলেই প্রচণ্ড অন্ধকার।
কোনও উপায় না পেয়ে সফর আলি সাইকেল থেকে নেমে পড়ল। পায়ের চটি খুলে নিল হাতে। তারপর কাদাজলে পা রাখল সে। বালি মাটি। তাই বেশি কাদা নেই জলে। তবে জল প্রায় এক হাঁটু। প্যান্টের নিচের দিকটি ভিজে গেল। কাদাজল পার হয়ে আবার সাইকেলে চাপল। এভাবে কখনও সাইকেলে, কখনও হেঁটে যখন সে পদ্মার পাড়ের রাস্তায় পৌঁছল, রাত সড়ে ন’টা বেজে গেছে। পদ্মার পাড়ের রাস্তা কিছুটা শুকনো। সাইকেল চালানো যাবে। সফর আলি সাইকেল চালিয়ে থানের পাশ দিয়ে যেতে যেতে দেখল বসির থানের ভেতরে বসে আছে। তার পাশে জনা তিনেক লোক বিড় বিড় করে কিছু একটা বলছে। কি বলছে বোঝা যাচ্ছেনা।
সফর আলি নীরবে থানের পাশ এগিয়ে গেল। কেউ বুঝতে পারল না। সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই দূর থেকে ভেসে এল গানের সুর। ভাটিয়ালি গান। এই গান শুনলে সফর আলির ভেতরটা কেমন করে উঠে। উদাসী হাওয়ায় তার উদাসী মন কোথায় হারিয়ে যায়। সফর আলি কান উড়িয়ে বুঝতে পারল এ স্বর পরাণের।
পদ্মার পাড়ে বসে পরাণ গাইছে –
সর্বনাশা পদ্মা নদী তোর কাছে শুধাই
বল আমারে তোর কি রে আর
কুল কিনারা নাই, কুল কিনারা নাই
ও নদীর কুল কিনারা নাই।।
পাড়ির আশায় তাড়াতাড়ি
সকাল বেলা ধরলাম পাড়ি
আমার দিন যে গেল সন্ধ্যা হলো
তবু না কুল পাই।।
পদ্মারে তোর তুফান দেইখা
পরান কাঁপে ডরে
ফেইলা আমায় মারিসনা তোর
সর্বনাশা ঝড়ে।।
পরাণ মাঝে মাঝেই পদ্মার পাড়ে বসে গান গায়। বাঁশি বাজায়। যখন ওর মনের ভেতরে কথা কয় ! কত কথা ! যে কথার কোনও মানে হয়না। কাউকে বোঝাতে পারেনা। কেবল নীরবে মনের ভেতরে মাথা কূটে মরে। তখন চুপি চুপি পদ্মার পাড়ে এসে বসে সে। কখনও ভাটিয়ালি সুরে বাঁশি বাজায়। বাঁশির সুর ছড়িয়ে পড়ে চারিধারে। গ্রাম ছাড়িয়ে, মাঠ ছাড়িয়ে, সীমান্ত ছাড়িয়েও চলে যায় দূরে, বহুদূরে। পরাণের মাঝে মাঝে মনে হয় এই যে সীমান্ত। ওপারে যেতে মানা। ওপারের এপারে আসা বারণ। কিন্তু বাঁশির সুর ! তারতো কোনও সীমান্ত নেই। সীমানার হাজারটা কাঁটাতার দিয়ে তাকে বেঁধে রাখে কার সাধ্য। এইতো সে নিজের মতো করে বাঁশি বাজায়। সেই বাঁশির সুর ছড়িয়ে পড়ে দূর থেকে দূরান্তরে। সীমান্তের এপার থেকে ওপারের কোনও এক সুদূরে ভেসে বেড়াই সেই সুর। কেউ তো তাকে বাঁধতে আসেনা !
পরাণ আজ গান ধরেছিল। পদ্মা নদীর গান। পদ্মা নদীকে সে যেন তার কথা শোনাচ্ছে। মনের কথা। দুঃখের কথা। মান অভিমানের কথা। কত অভিযোগ ! কত ক্ষোভ ! তারপরেও সে পদ্মার বুকেই নিজেকে সঁপে দিতে চায়। পদ্মার বুকেই ডিঙা ভাসিয়ে নিশ্চিন্তে ভেসে যেতে চায়।
সফর আলি কাছে এসে পড়েছিল। বলল, “কী গান ধরেছ পরাণ ভাই! এই গান যে আমার কানের ভেতর দিয়ে মরমে ঢুকে পড়ছে গো !”
পরাণ গান বন্ধ করে সফর আলির দিকে তাকাল। বলল, “কিগো সফর ! এত রাতে কুথা থাক্যা আসছ ? সাইকেলে মেলায় মালপত্র দেখছি। ওসব কী ?”
সফর আলি বলল, “শহরে গিয়েছিনু ভাই। কিছু কেনাকাটার ছিল। ফিরে দেখছি বৃষ্টি হয়েছে। কাদাজলে ফিরতে খুব কষ্ট হল ভাই। ক্লান্ত হয়ে গেছি।”
“আগে বলোনি কেন সফর ভাই। একটা জিনিস আনতে দিতাম। আর আমি তোমাকে আনতে সন্ধ্যা বেলায় ঘাটে গিয়ে বসে থাকতাম।”
উঠে দাঁড়াল পরাণ। সফর আলির কাছে গিয়ে বলল, “চল তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।”
সফর আলি বলল, “না পরাণ। আমি তো চলেই এসেছি। আর মিনিট পাঁচেক রাস্তা। একাই যেতে পারব। তুমি বরং নদীর পাড়ে বসে আরও কিছু গান গাও।”
সামনের দিকে এগিয়ে গেল সফর আলি। যেতে যেতে শুনতে পেল পরাণ গাইছে –
আমি যে গহীন গাঙের নাইয়া।
সাঁঝের বেলায় নাও বাইয়া যাই,
আপন মনে চাইয়া
ভাটির টানে বাইয়া চলি, ভাইটালি সুরে গাইয়া।
বাড়ি পৌঁছনোর কিছু আগে রূপসীর বাড়ি। সফর আলি ভাবল এখন রূপসীকে ডাকব না। সকালে ডেকে তার হাতে শাড়ির ব্যাগটি ধরিয়ে দিব। রূপসীর বাড়ির সামনে আসতেই দেখল বাড়ির উঠোনে অন্ধকারে চুপ করে বসে আছে রূপসী।
সফর আলি না দেখার ভান করে এগিয়ে যেতেই রূপসী ডাকল, “সফর ভাই। এতক্ষণে এলে গো। রাস্তায় কী কষ্ট হল তোমার। আজ বিকেলে মেঘ হয়েছে। তখন থেকে ভাবছি সফর ভাইয়ের ফিরতে আজ খুব কষ্ট হবে।”
সফর আলি বলল, “তুই আমার জন্য এখনও জেগে আছিস রূপসী ?”
“জেগে কী গো ! সেই কখন থেকে এখানে বসে আছি জান। তুমি তো আসছই না। একবার ভাবছি বাড়ি চলে গেছে নাকি। আবার ভাবছি কখন গেল। আমিতো এখানেই বসে আছি। তোমার জন্য খুব চিন্তা করছিলাম সফর ভাই।”
সফর আলির খুব ক্লান্তি লাগছিল। বলল, “এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছেনারে রূপসী। সকালে আসিস। তোর শাড়িটা নিয়ে যাস।”
মিনিট খানেক বাদেই বাড়ি। সফর আলি সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিল।
ক্রমশ…
♦—♦♦—♦♦—♦♦—♦
পূর্ববর্তী পর্ব পড়ুন : চর (সপ্তম পর্ব)
❤ Support Us