- পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
- অক্টোবর ১, ২০২৩
নির্ভীক, স্থিতধী অভিযাত্রী
ভাষিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁর নির্ভীক লেখনী সবসময় সরব ছিল।

সাহিত্য পত্রিকার দফতরে
আমি ছাপ্পান্ন বছর ধরে যাঁর সঙ্গে যুক্ত, সেই অগ্রজ সহযাত্রী বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। দশটি কাব্যগ্রন্থ ও বহু অগ্রন্থিত কবিতা ছাড়াও প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা, উপন্যাস লেখায় তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তাঁর সম্পাদনায় কৃত্তিবাস প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আসামের বারোজন কবির কবিতা সংকলন”এই আলো হাওয়া রৌদ্রে”(১৯৬৯)পাঠক মহলে সাড়া ফেলেছিল।পরে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথ সম্পাদনায় বিশ্বজ্ঞান প্রকাশনী থেকে বইটির বর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় (১৯৮৭)। সাহিত্য আকাদেমি থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর অনূদিত অসমিয়া কবি হরেকৃষ্ণ ডেকার কাব্যগ্রন্থ।
বিজিৎদার শ্রেষ্ঠ কীর্তি ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা । ৫৭ বছর ধরে তাঁর জীবৎকালে ১৬০টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। গ্রাহকনির্ভর এই পত্রিকা উত্তর পূর্বাঞ্চলে বাংলা সাহিত্য চর্চাকে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেছে। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, অনুবাদ চিঠিপত্র সবধরণের রচনায় ভরপুর এই পত্রিকা আঞ্চলিক গন্ডী পেরিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সাহিত্য প্রকাশনী থেকে সাত খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্য পত্রিকার নির্বাচিত রচনা। ১৯৭৯ সালে, আমার “মেঘ কারো বাড়ি গাড়ি নয়” কাব্যগ্রন্থ দিয়ে এই প্রকাশনীর যাত্রা শুরু হয়েছিল।
বিজিৎদা উত্তর পূর্বাঞ্চল -কে বাংলা সাহিত্যের তৃতীয় ভুবন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে অনলস কাজ করে গেছেন। ভাষিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁর নির্ভীক লেখনী সবসময় সরব ছিল।
বরাক উপত্যকার প্রবাহ ও কলকাতার আরিত্রিক পত্রিকা তাঁকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছিল।। স্বনামধন্য কবি, বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। একই সঙ্গে কবি ও কর্মী,সংগঠক ও সম্পাদক। তাঁর অনমনীয় ব্যক্তিত্ব আজ আর সশরীরে আমাদের মধ্যে নেই, নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, তাঁর কীর্তি ও প্রেরণা ভবিষ্যত প্রজন্মকে পথ দেখাবে।
♦—♦♦—♦♦—♦
❤ Support Us