- কে | রি | য়া | র-ক্যা | ম্পা | স ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
- সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
ধারাবাহিক আত্মকথা : আমাদের বিদ্যানিকেতন

১৯৯২, মস্কোর লমোনসভ বিশ্ববিদ্যালয়
আমিত্বহীনতার বৃত্তান্ত
তাসখন্দ থেকে বিমানের সঙ্গে উড়াল দিয়ে মস্কোতে হাজির অসমের শিক্ষাব্রতী পর্যটক। বয়স কম, নির্মেদ শরীর, মাথায় কালো চুলের চমৎকার তরঙ্গ। দেখলেই বোঝা যায় ভারতীয়। রাশিয়ার স্বাভাবিক মিত্র। মস্কোতে নামতেই বিস্ময়, প্রগাঢ় বিস্ময় অভিবাদন জানাল তাঁকে, চারদিকে ঝকঝকে গাড়ি, ঝকঝকে মানুষ, ঝকঝকে রাস্তা। নৃত্যরত বিশ্বের অন্যতম বড়ো শহর খুলে দিয়েছে সে তার সমস্ত আবরণ, কোথাও কোনো আচ্ছাদন নেই, মুক্ত বিহঙ্গেরা উড়ছে, ছুটছে, প্রাণ লেগেছে প্রাণে, জোয়ার তুলছে নাগরিকতার ঢেউ।লেখকের আশঙ্কা ছিল, চারদিকে শুধু ভাঙন আর হতাশার চিহ্ন দেখতে পাবেন। মুদ্রাস্ফীতি, উর্ধ্বগামী পণ্যমূল্য, বে-আবরু যাপনের চিত্র তাঁকে ভড়কে দেবে, পেছন দিকে তাকাতে, আরো বেশি তাকিয়ে দেখতে বাধ্য করবে ! না, এরকম আবহ তৈরি হল না, ‘এলেম নতুন দেশে’-এর সফরানন্দ উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত করে রাখল টানা একমাস। প্রতিদিন ছুটে বেড়ালেন মহানগরের ভেতরে ও বাইরে। প্রান্তিক অঞ্চলেও। এরকম ছুটতে ছুটতে খতিয়ে দেখলেন বলশেভিক বিপ্লব, প্রথম মহাযুদ্ধ, যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি আর পশ্চিমি বিরোধিতা অতিক্রম করে কীভাবে অরোপিত সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে উঠল। সাম্যবাদী ঔপনিবেশিকতার নির্মাণ আর বিনির্মানের যান্ত্রিকতায় পথ হারাল কল্যানমুখী, অনুশাসিত রাষ্ট্র। গত শতাব্দীর ৮০ এর দশক থেকে ৯১-৯২ পর্যন্ত সবরকমের ভাঙ্গণমুখর, জাতিদাঙ্গা, আত্মকলহ আর পশ্চিমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে কেন উদিত দেশটি, এসব কাহিনীও খুঁজলেন বৃহৎ পরিসরে। জাকির ইতিহাসের ছাত্র নন, ইতিহাসকে এড়াতে চাইলেও ইতিহাস তাঁর সঙ্গ ছাড়ে না, ফিরে তাকাতে, শিকড়ে ফিরে যেতে বাধ্য করে ঘটনা প্রবাহের ধারাবাহিকতা। একথাই কি তাঁর এবারের উদ্দেশ্যমূলক ভ্রমণ-পর্বের সারকথা ?
সম্পাদক
১০.০৯.২০২৩
• পর্ব ১১ •
বলশেভিক বিপ্লবের পর থেকে, ৬৩ বছর জুড়ে, সাম্যবাদী ঔপিনিবেশিকতার প্রসার ছিল সোভিয়েত রাশিয়ার অন্যতম লক্ষ্য। পূর্ব ইউরোপ থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত সে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে, বিশাল অস্ত্রভান্ডার গড়েছে। ক্ষমতাবলয়ের আওতায় নিয়ে আসতে চেয়েছে বহুদেশীয় কমিউনিস্টদের। এক্ষেত্রে কোথাও সে সফল, কোথাও ব্যর্থ। ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা সহ একাধিক দেশের বহু জাতি, উপজাতি আর দেশকে কমিউনিজমমুখী করে তুলতে সোভিয়েত রাশিয়ার প্রচেষ্টা আর সাফল্যের মানচিত্রকে হেয় করা যাবে না। কালমার্কসের স্বপ্নের প্রয়োগ জার্মানিতে খন্ডিত। তাঁর দশর্নের ফলিত চেহারা ফুটে ওঠে প্রথমত রাশিয়ায়। দ্বিতীয়ত মাও সেতুং-এর চিনে। কমিউনিস্ট মতাদর্শকে অবলম্বন করে মার্কস এঞ্জেলসের সামাজিক আর অর্থনৈতিক দর্শনকে শাসনতন্ত্রের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন রুশ বিপ্লবীরা। নাড়িয়ে দিয়েছিলেন পশ্চিমের পুঁজিবাদ আর সামন্তবাদের ভিত্। মানবসভ্যতার ইতিহাসে সংহত সাম্যবাদের উত্থানকে কখনো খাটো করা যাবে না। মার্ক্সীয় দর্শনের বুদ্ধিদীপ্ত পাঠ আর অনুশীলনে সোভিয়েত রাশিয়া সমাজবদলের ডাক দেয়, বদলে দিতে চায় জোরজবরদস্তির শাসনতন্ত্র। ফলিত দর্শনকে অনুসরণ ও অনুকরণ যোগ্য করে তোলে। মার্কস আর এঞ্জেলের দর্শনের সঠিক প্রয়োগ ঘটে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার সংলগ্ন অঞ্চলে। একই সত্যের উপলব্ধী আর বাস্তবায়নে যোগ দেয় সোভিয়েত রাশিয়ার রিপাবলিক গুলি।
ইতিহাসের পুর্ণমূল্যায়ণ আমার উদ্দেশ্য নয়। মানুষের জুলুমের অবসানে মানবিক সাধনা কত দূরদর্শী হতে পারে, তা বুঝতে চেয়েছি আমি। কীভাবে এক বিশাল ভূখন্ড একই ছত্রছায়ায় জড়ো হয়ে বিংশ শতকের শাসনতান্ত্রিক কাঠামোকে বদলে দিল, কীভাবে ইহজাগতিক দর্শন সমাজের পরিবর্তন চিত্রিত করল, নেতৃত্ব সঁপে দিতে চাইল গণসত্তার হেপাজতে এবং কালক্রমে, কয়েক দশকের মধ্যেই কেবল ভৌগোলিক আয়তনে নয়, বহুবিদ্যার অনুশীলনের বহু পথে ছুটতে ছুটতে বিশ্বের সেরা দেশ আর অন্যতম মহাশক্তি হয়ে উঠল, তারই চেহারা আমি আমার মতোই খুঁজতে চাইছি। উদীয়মান চিন্তা আর বিশ্বের যুবশক্তিকে মাকর্সবাদ যেভাবে আলোড়িত করেছিল, কোনো দেশেই গত কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসে, এরকম দৃষ্টান্ত পাওয়া কঠিন। যিশুর খ্রিষ্টধর্ম, গৌতমের বৌদ্ধ ধর্ম এবং হজরত মহম্মদের ইসলাম সহ কোনো ধর্ম বা মতাদর্শ এত দ্রুত এভাবে বিশ্বজয়ী হয়ে ওঠেনি।
যে অসংহত চিন্তা যৌবনে প্রতিবাদের ভাষা খোঁজে, মাকর্সবাদের প্রভাবে, কখনো কখনো সক্রিয় অংশগ্রহণে সে সংহত বিপ্লবের আকার ধারণ করে। এটাই যেন তার উঠতি বয়সের ধর্ম। কিন্তু এ প্রবণতা বেশিদিন টেকে না, অন্যদিকে মোড় নেয়। কোথাও ধর্মীয় সংশয়ের সর্বস্তরে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার দাবি কারো কারো চিন্তা ও কর্মে একসময় যে-ঝড় তোলে, তার রেশ থেকে যায় প্রায় আমৃত্যু। কোথাও এই চেহারা সমাজিক দায়বদ্ধতার, কোথাও স্বেচ্ছাসেবার, কোথাও ধর্মাচ্ছন্ন কিংবা ভাষা কেন্দ্রিক জাতীয়তার কবলে পড়ে পথ হারায়।
ধর্ম আর ভাষিক আত্মপরিচিতির বন্ধন থেকে মানুষের অব্যাহতি নেই। দুর্ভাগ্য, সোভিয়েত রাশিয়ার বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের বিকাশ ও সাফল্যও তাঁকে ধর্ম আর জাতি চেতনা থেকে বেশিদিন দূরে সরিয়ে রাখতে পারেনি। মধ্য এশিয়ার ধর্মীয় আর জাতিসত্তা নিয়ে প্রবল সতর্ক ছিলেন লেনিন। কখনও জোর খাটাতে চাননি। রাশিয়ার অপেক্ষাকৃত আধুনিক জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্র বদলাতে চেয়েছে, চার্চ নিয়ন্ত্রিত ধর্মের পরিবর্তে সাম্যবাদক বিকল্প আসনে বসিয়ে। সে চেষ্টা যে ব্যর্থ, তার দম্ভিত রূপ দেখা গেল রাশিয়ায় চার্চের পুনরুত্থানে। একইভাবে, বিভিন্ন রিপাবলিকও তাদের পরিচিতির প্রত্যাবর্তন দাবি করল। এই দাবিতে সঙ্ঘাত আর জাতি দাঙ্গার উগ্রতা ছড়িয়ে পড়ল এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের শিকড়ে জাগিয়ে তুলল প্রশ্ন। একে একে ধসে পড়ল একক আদর্শ ও একভাবনায় প্রাণিত সহঅবস্থানের আত্মীয়তাবোধ।
যে অসংহত চিন্তা যৌবনে প্রতিবাদের ভাষা খোঁজে, মাকর্সবাদের প্রভাবে, কখনো কখনো সক্রিয় অংশগ্রহণে সে সংহত বিপ্লবের আকার ধারণ করে। এটাই যেন তার উঠতি বয়সের ধর্ম। কিন্তু এ প্রবণতা বেশিদিন টেকে না, অন্যদিকে মোড় নেয়। কোথাও ধর্মীয় সংশয়ের সর্বস্তরে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার দাবি কারো কারো চিন্তা ও কর্মে একসময় যে-ঝড় তোলে, তার রেশ থেকে যায় প্রায় আমৃত্যু
বাইরের উসকানি ছিল, ভেতরের দূর্বলতাও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনকে ত্বরান্বিত করতে যথেষ্ট শক্তি জুগিয়েছে। রুশ অহমিকাকে উচ্ছেদ করেনি রাষ্ট্র। প্রশাসনে, আভ্যন্তরীণ নীতির রচনা আর অপপ্রয়োগে অ-রুশদের মনোভাবকে সমান গুরুত্ব পায়নি। পলিটব্যুরোতে তাদের প্রভাব ছিল সীমিত। তলে তলে ক্ষোভ জমছিল, ক্ষোভের বিস্ফোরণে ঘটছিল একাধিক রিপারলিকে, গত শতাব্দীর আশির দশকের গোড়া থেকে। এর প্রথম বিঘোষিত, দৃটান্ত দেখি ১৯৮৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর। রিগা ক্যাথেড্রাল স্কোয়ার থেকে লেলিন অ্যাভিনিউ-র দিকে মার্চ করে ছুটতে থাকল ৩০০ লিথুভিয়ান যুবক-যুবতী। কণ্ঠে তাদের সঙ্ঘবদ্ধ চিৎকার, সোভিয়েত রাশিয়া আউট, ফ্রি লিথুভিয়া। ৮৬ সাল থেকে, একইভাবে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর যুবশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে। একাধিক সংগঠন গড়ে উঠল বাল্টিক, লিথুনিয়া, কোকাসাস অঞ্চলে। ধীরে ধীরে উত্থান ঘটল নব জামানার কমিউনিস্ট গর্বাচভের আর উগ্র জাতিয়তাবাদী ইয়েলিৎসিনের। তাঁদের ঊদ্ধারোহনে উদ্বুদ্ধ পশ্চিমি শক্তিবর্গ, নবীন নেতৃত্বকে স্বাগত জানাল নবপ্রজন্মের কমিউনিস্ট খেতাব পরিয়ে। ৮৮ সালেই রক্ষণশীল কার্ল ভারোনকে সরিয়ে দিলেন গর্বাচভ, একে একে কট্টরপন্থীদের বিদায় নিতে হল।
পরের ইতিহাস বিশেষ জটিল নয়, প্রায় একই ধরনের ঘটনা প্রবাহ বইতে থাকে। পলিটব্যুবোরর ভেতরে আর বাইরে ক্ষমতার লড়াই চলছে, রক্ষণশীল কমিউনিস্টরা জেদ বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাদের গণভিত্তির দুর্বলতা আর ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা সুযোগ নিতে থাকল বিভিন্ন জনগোষ্ঠী। স্বপ্নপূরণের দাবি তুলতে লাগল স্বপ্নকে ছুঁয়ে থাকল অসন্তোষ আর জাতি বিদ্বেষ। সবই একইভাবে আঞ্চলিকতা দিয়ে রচিত, প্ররোচিত। রুশ অস্মিতা তখনো ক্ষমতা বলয়ের কেন্দ্রে থাকতে চাইল। ভরসা ভাবল গর্বাচভকে। ইয়েলিৎসিন কোণঠাসা, সুপ্রিম সোভিয়েতের একটি আসন তাঁর দখলে, তাঁরই নেতৃত্বে তৈরি হল সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম বিরোধী দল—ওয়ারশোপ্যাকেটের শর্ত মেনে। পূর্ব ইউরোপ তখন নামকে ওয়াস্তে স্বাধীন; ইতিমধ্যে গর্বাচভকে মদত যোগাচ্ছে পশ্চিম দেশগুলি, আভ্যন্তরীণ চাপে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থেকে সরতে হল তাঁকে। পরে ফিরেও এলেন। তবু সোভিয়েত ইউনিয়নের ঐক্য ধরে রাখা গেল না, পরাজয় মনস্কতার শিকার হয়ে কমিউনিস্টরা দিশাহীন। গর্বাচভ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারাচ্ছেন, বিদায় তার আসন্ন হয়ে উঠল, তলে তলে রুশ অধ্যুষিত ভূখন্ড ছাড়া প্রায় সব রিপাবলিক স্বাধীনতা ঘোষণা করল, পূর্ণ হল তাদের কাঙ্খিত ইচ্ছা।
একসময় গ্রিসে রোমান সাম্রাজ্য বা আরব সাম্রাজ্যকে খ্রিস্টধর্ম কিংবা ইসলাম যেভাবে একই মানচিত্রের আওতায় রাখতে পারেনি, ঠিক সেভাবে ‘কমিউনিস্ট ঈশ্বর’ অখন্ড সোভিয়েত ইউনিয়নকে সামাজিক অথবা বৈজ্ঞানিক সাম্যবাদের প্রশ্নহীন আনুগত্য ছড়িয়ে একই মানচিত্রে আওতায় ধরে রাখতে পারলেন না। রুশশাসন ব্যবস্থা, অতিশয় নিয়মতান্ত্রিকতা প্রবল বিরুদ্ধ হয়ে উঠল। খড়-বিছুলির দালান কোঠার মতো ভেঙে পড়ল ইমারত। সাম্যবাদের জায়গা দখল করল বৃহৎ রুশ জাতিরাষ্ট্রের ভাবাবেগ। তবু, সে টিকে থাকল বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো দেশের চেহারা নিয়ে, সমরাস্ত্রের অযুত ভান্ডার নিয়ে। তার এ রূপান্তরকেও মেনে নিতে গররাজি পশ্চিমি ন্যাটো ও মার্কিন জোট।পুতিনের আমলে এ লড়াই আরো বাড়ল।
রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের আপাত স্থায়িত্ব রাশিয়ার রাজনৈতিক আর রাষ্ট্রীয় ভাগ্যকে বিপজ্জনক রাস্তায় ঠেলে দিতে পারে। প্রাক্তন কে জে বি প্রধান পুতিন বড্ড বেশি জেদি আর একগুঁয়ে। রাশিয়াকে আবার পরাশক্তির পরিসরে নিয়ে যাবার প্রবণতা তাঁকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দেবার আশঙ্কা অমূলক নয়। পুতিনের সৌভাগ্য, অনাড়ম্বর কৌশলে চিন এখন তাঁর পাশে। চিনের প্রভাবে ইরানও রাশিয়ার শক্তিমান মিত্রশক্তি। পশ্চিম এশিয়া আমেরিকার দাদাগিরি থেকে অব্যাহতি চায়, এখানে চিন ও রাশিয়া তার অবলম্বন হয়ে উঠবে। তার মানে, রাশিয়া তার পূর্বক্ষমতা হারানোর পরেও শক্তিধর বিকল্প হয়ে ওঠার ইচ্ছাজ্ঞাপন করছে, পূর্ব ইউরোপকে ন্যাটোর প্রভাবমুক্ত করে রাখা তার অন্যতম কৌশল, আর এ কারণেই ক্ষমতা প্রদর্শনে, আভ্যন্তরীণ বিকাশে নগরায়ন আর যোগাযোগ ব্যবস্তার উদ্ধারোহনকে উঁচিয়ে ধরে সে বলতে চায়, আমার প্রাণশক্তি ফুরিয়ে যায়নি। দরজা-জানলা খুলে দিয়েছি, মুক্ত পবনে উড়ছে আত্মপরিচিতির সমস্ত নতুন বিন্যাস। বিন্যাসের প্রস্তুতিতে ধুম লেগেছে ব্যাপক। আমার যা কিছু সামার্থ্য, সবই আমার একান্ত।
স্বঅর্জিত। ৩০ দিনের রুশ সফরে, রাষ্ট্রীয় ভাঙনের প্রথম পর্বে এই রাশিয়াকেই আমি খুঁজে পেয়েছি। এখনও সেই নব জাগ্রত দেশ ইশারায় আমন্ত্রণ করে আমাকে। সম্ভবত, আবার যেতে হবে। ৩৭ বছর আগে দেখা চালচিত্রের ধারাবাহিকতা আর পুনরজাগরণের প্রাথমিক ছায়াছবি নির্মাণের পরিসর খতিয়ে দেখতে। আশা করি, আমার জন্য বিস্ময় এখনো অপেক্ষমান। প্রথম স্পর্শের এই কাতরতা ছুঁয়ে থাকবে হৃদয়কে, অবাধে ঘুরে বেড়াব শহরের ভেতরে, বাইরে, প্রসারমান প্রান্তিকের সাজানো বাগিচায়।
♦—♦♦—♦♦—♦♦—♦
লেখক: উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম বেসরকারি কলেজ গোষ্ঠী এন.ই.এফ-এর চেয়ারম্যান। গুয়াহাটির বাসিন্দা
আগের পর্ব পড়ুন: দশম পর্ব
❤ Support Us