Advertisement
  • পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
  • অক্টোবর ৬, ২০২৪

তিস্তা পারের লৌকিক শারদ পার্বণ । আরাধ্য দেবী যেখানে পুরুষ

সিদ্ধার্থ নাহা
তিস্তা পারের লৌকিক শারদ পার্বণ । আরাধ্য দেবী যেখানে পুরুষ

লোকসংস্কৃতি শুধু বিনোদন নয়। লোকসংস্কৃতি মানুষের জীবনচর্চার সঙ্গে সংপৃক্ত। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উৎসারিত। সে কারণে তাতে থাকে হৃদয়ের স্পন্দন। থাকে সোঁদা মাটির গন্ধ। লোকসংস্কৃতির বিভিন্নতার কারণ আঞ্চলিক বৈচিত্র । স্বাভাবিক নিয়মেই লোক-ধর্মাচার প্রবর্তনের পেছনে কোন শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা থাকে না। থাকে শুধু জীবনচর্চা আর অভিজ্ঞতা নির্ভর লোকগাথা, জনশ্রুতি এবং বিশ্বাসের শক্ত শেকড়। যা স্বতঃস্ফূর্ত ফল্গুধারার মত উৎসারিত।

শরতে সূচিত হয়েছিল শ্রীরামচন্দ্রের অকাল বোধনের দুর্গা পুজোর। যা পরবর্তীতে ধর্মাচারের গন্ডীকে অতিক্রম করে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে সার্বজনীন উৎসবের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষত জলপাইগুড়িতে তফশিলি রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে ওঠে লৌকিক দুর্গা পুজোয় । এই জেলার ভূমিপুত্র রাজবংশী জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ। জলপাইগুড়ি জেলায় রাজবংশী সমাজের লৌকিক পুজোয় দেবী দুর্গারই আরাধনা হয়। কিন্তু ভিন্ন নামে। দুর্গা এখানে কোথাও ভান্ডানী দেবী আবার কোথাও ভান্ডার বা কুবের দেব রূপে পূজিত হন । সাড়ম্বরে ভান্ডানী পুজো অনুষ্ঠিত হয় তিস্তার দুপার জুড়ে। ভান্ডার বা কুবের দেবের আরধনা হয় শুধুমাত্র মাল ব্লকের ক্রান্তিতে।
দেবী দুর্গা দশভুজা। কিন্তু ভান্ডানী দেবীর চার হাত। হাতে কোন অস্ত্র নেই । মহিষাসুরমর্দিনী রূপেও থাকেন না দেবী ভান্ডানী। হাত থাকে আশীর্বাদের ভঙ্গিতে। দেবীর বাহন বাঘ। দেবীর রং ঘোর লাল বর্ণের। অতীতে ভান্ডানীর সঙ্গে সন্তানদের দেখা যেত না। কিন্তু বর্তমানে দেবীর দুপাশে পরিচিত রুপেই থাকেন চার সন্তান, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্ত্তিক এবং গণেশ।

যেহেতু লৌকিক পুজো, তাই ভান্ডানী দেবীর পুজোর কোনো শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা নেই। রয়েছে কিছু লোকগাথা এবং জনশ্রুতি । সবচেয়ে প্রচলিত লোকগাঁথাটি হলো, সপ্তমী থেকে দশমী চারদিন মর্তলোকে ভক্তদের পুজো নিয়ে একবার দশমীর রাতে দেবী দুর্গা সন্তানদের নিয়ে তিস্তা পার দিয়ে কৈলাসে ফিরছিলেন। সে সময় সেখানকার কিছু মানুষ দেবীর দর্শন পান। তিস্তা পারের আবাদী জমিতে সেবার ছিল ঘোর অজন্মা। এই অজন্মার কবল থেকে মুক্তি পেতে ফসলের ভান্ডার রক্ষা করার জন্য দেবী দুর্গার কাছে মিনতি জানিয়েছিলেন। ভক্তদের দুর্দশায় দেবী ব্যথিত হন। সে রাতে কৈলাসে যাত্রা স্থগিত রেখে দেবী তিস্তা পারে অবস্থান করেন। পরদিন একাদশীতে, দেবী দুর্গা ভক্তদের পুজো নিয়েছিলেন। ধারন করেছিলেন ভাণ্ডানী দেবীর রূপ। পরে সন্তুষ্ট হয়ে অজন্মার করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করেছিলেন ভক্তদের ফসলের ভান্ডার। এই লোকগাথা এবং জনশ্রুতির ওপর বিশ্বাসেই কালের প্রবাহে দুর্গা পুজোর একাদশীতে তিস্তার দুপার জুড়ে ছড়িয়ে যায় লৌকিক ভাণ্ডানী দেবীর পুজো । আর তাকে ঘিরে রয়েছে আরও একটি লোকগাঁথা। এক সময় তিস্তা পার জুড়ে ছিল বিস্তীর্ণ ঘন কাশবন। কাশবনে ছিল বাঘের আড্ডা। বাঘের পেটে যেতে হত অনেক মানুষকে। একবার মর্তলোকে চারদিন পূজো নিয়ে দশমীর রাতে তিস্তা পার দিয়ে কৈলাসে ফিরছিলেন দেবী দুর্গা। সে সময় কিছু মানুষ দেবীর দর্শন পান। তারা বাঘের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা জানান । ভক্তদের দুর্গতি দেখে দেবী দুর্গা সে রাতে তিস্তা পারে অবস্থান করেন। পরদিন একাদশীতে ভক্তদের পুজোয় খুশি হয়ে বাঘের উপদ্রব থেকে রক্ষা করেছিলেন এলাকার মানুষদের। সেই সময় দেবী দুর্গা ব্যাঘ্র দেবীর রূপ ধারন করেছিলেন। তাই সিংহের বদলে দেবী বাঘের পিঠে আসীন থাকেন । ব্যাঘ্র দেবীর হাতের ভঙ্গি ভক্তদের আশ্বস্ত করার মত। এই লোকগাঁথার পুজো মনে করিয়ে দেয় সুন্দরবনে ব্যাঘ্র দেবীর কথা । তিস্তা পারের ত্রিসীমানায় কোথাও এখন বাঘ নেই। তাই এই অঞ্চলে সেই দেবীর পুজোও এখন অনেকটাই ম্লান। কিন্তু, তিস্তা নদীর দুপার ধরে একাদশীতে লৌকিক ভান্ডানী দেবীর পুজোর ব্যপকতা ক্রম বর্ধমান। আড়ম্বর জৌলুস জাঁকজমকের ঘটাও দিন দিন বাড়ছে । জলপাইগুড়ি জেলার সীমানা টপকে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারেও ভান্ডানী দেবীর আরাধনা হয় । এমনকি উত্তরবঙ্গ সংলগ্ন অসমের বিভিন্ন অংশে মহা ধুমধাম করে পূজিত হন দেবী। এখন অনেক জায়গায় তা সার্বজনীন আকার নিয়েছে ।

ক্রান্তিতে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয় কুবের দেবের পুজো । এখানে দেবী দুর্গা পূজিত হন পুরুষ রূপে । মূর্তির মুখে থাকে পুরুষ্টু গোঁফ। দুপাশে চার সন্তানেরা, লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্ত্তিক এবং গণেশ থাকেন পরিচিত রূপেই। দুর্গার পুরুষ রূপের দুই হাত। হাত দুটি থাকে আশীর্বাদের ভঙ্গিতে। অতীতে ভান্ডার দেব আসীন থাকতেন বাঘের ওপর। এখন থাকেন সিংহের পিঠে

তিস্তা পারের সর্বত্র ভান্ডানী আরধনায় মাতোয়ারা থাকলেও মূল পুজোটি অনুষ্ঠিত হয় জলপাইগুড়ি শহর থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে বার্ণিশে। এক সময় বার্ণিশে ছিল তিস্তার সবচেয়ে বড়ো খেয়া ঘাট। নদীর ওপর সেতু তৈরির আগে ছোট বড়ো যানবাহন এবং যাত্রীদের নৌকোয় বার্ণিশ ঘাট হয়ে যেতে হত ডুয়ার্স, অসম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে। খেয়া ঘাটকে কেন্দ্র করে অত্যন্ত বর্ধিষ্ণু এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল ময়ানাগুড়ি ব্লকের বার্ণিশ। বার্ণিশের উল্লারডাবরি গ্রামে প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল দেবী দুর্গার লৌকিক রূপের ভাণ্ডানী পুজো । জনশ্রুতি, গ্রামের অত্যন্ত সম্পন্ন ভূস্বামী মল্লিকদের কোন এক পূর্বপুরুষ বরুয়া মোহন মল্লিক নাকি স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে প্রথম পুজো শুরু করেছিলেন। সেই পুজো এখন সার্বজনীন রূপ পেয়েছে । অন্যদিকে দেবী ভান্ডানী এখন আর শুধু রাজবংশী সমাজের মধ্যে আবদ্ধ নয়। সর্বস্তরের, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ এখন ভান্ডানীর পুজোর অংশীদার । উল্লারডাবরি গ্রামে গড়া হয়েছে ভাণ্ডানী দেবীর মন্দির। মন্দিরের সামনের বিশাল মাঠে পুজোকে ঘিরে বসে মেলা। কলেবর অনেক বেড়ে যাওয়ায় মেলার দায়িত্বে এখন বার্ণিশ গ্রাম পঞ্চায়েত। মেলা প্রাঙ্গনে লোকসংস্কৃতি অনুষ্ঠানের জন্য গড়া হয় আলাদা বড়ো মঞ্চ। এটি এখন জেলার অন্যতম বড় মেলা। দূর দূরান্তের সর্বস্তরের মানুষ তাদের মনষ্কামনা পূরণ করার জন্য সারা বছর ধরে ভান্ডানী দেবীর উদ্দেশ্যে পাঁঠা ও পায়রা মানত করেন। যেহেতু লৌকিক পুজো তাই ভান্ডানী দেবীর আরাধনায় সংস্কৃত শাস্ত্রীয় কোন মন্ত্র উচ্চারিত হয় না। সাদামাটা বাংলায় করা হয় দেবীর আরাধনা। যেমন, দেবীর ঘট স্থাপনার মন্ত্র হল, ‘ ঘটে মা বস দেবী ভাণ্ডানী । তোমারি আসনে। ‘

জলপাইগুড়ির মাল ব্লকের তিস্তা পারের ক্রান্তিতে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয় কুবের দেবের পুজো । এখানে দেবী দুর্গা পূজিত হন পুরুষ রূপে । মূর্তির মুখে থাকে পুরুষ্টু গোঁফ। দুপাশে চার সন্তানেরা, লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্ত্তিক এবং গণেশ থাকেন পরিচিত রূপেই। দুর্গার পুরুষ রূপের দুই হাত। হাত দুটি থাকে আশীর্বাদের ভঙ্গিতে। অতীতে ভান্ডার দেব আসীন থাকতেন বাঘের ওপর। এখন থাকেন সিংহের পিঠে।

রাজবংশী সমাজের লোকায়ত সমাজ জীবন উৎস হলেও ভান্ডার দেবের লৌকিক পুজো এখন সর্ব ধর্মের বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষের অংশগ্রহণে উত্তরবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসবের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। ক্রান্তির এক জায়গায় এক সময় ছিল বিস্তীর্ণ ঘন চেকেন্দা বন। চেকেন্দা গাছের উচ্চতা চার পাঁচ ফুট। সারা গাছ ঢাকা থাকে মাঝারি আকৃতির গোল গোল চেকেন্দা পাতায়। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে গাছের সব পাতা গুটিয়ে যায় । আবার পরদিন সূর্যের আলো ফোঁটার সাথে সাথে মেলে যেতে থাকে গাছের পাতা। জনশ্রুতি, এই ঘন চেকেন্দা বনেই প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভান্ডার বা কুবের দেবের পুজো । সেই থেকে অনেকের কাছে এই পুজো পরিচিতি চেকেন্দা ভান্ডার পুজো বলেও। যদিও বিস্তীর্ণ চেকেন্দা বনে এখন একটিও চেকেন্দা গাছ নেই। উন্মুক্ত বিশাল এলাকাটি এখন ভান্ডার দেবের পুজো এবং মেলার জন্য সংরক্ষিত। এই দেব আরাদনাকে ঘিরেও রয়েছে কিছু লোকগাথা। সবচেয়ে প্রচলিত লোকগাঁথা হলো, দেবী দুর্গা যেবার দশমীর পরদিন একাদশীতে তিস্তা পারে ভক্তদের মনোবাসনা পূরণ করতে ভান্ডানী দেবীর রূপ ধারন করে পূজা গ্রহন করেছিলেন, সেবার দেবীর কৈলাসে ফিরতে স্বাভাবিক ভাবেই একদিন দেরি হয়ে যায়। স্বয়ং মহাদেব তখন দেবী দুর্গা এবং সন্তানদের খোঁজে মর্তলোকে চলে আসেন। তিস্তা পারে ক্রান্তির চেকেন্দা বনে সন্তানদের সমেত দেবীর দেখা পান মহাদেব। সে সময় এলাকার কিছু মানুষও দেবী দুর্গার দর্শন পান। সেবার ক্রান্তিতেও অনাবৃষ্টিতে কৃষকদের শষ্য ভান্ডার ছিল শূন্য। তারা নিজেদের দুর্দশার কথা দেবীকে জানিয়েছিলেন। প্রার্থনা করেছিলেন তাদের ফসলের ভান্ডার রক্ষা করার জন্য। ভক্তদের দুর্দশা দেখে ব্যথিত হন দেবী। সম্পদ এবং শষ্য ভান্ডারের রক্ষক দেবতা হলেন কুবের দেব। দেবী দুর্গা তাই পুরুষ কুবের দেবের রূপ ধারন করে ভক্তদের পুজো নিয়েছিলেন। সন্তুষ্ট হয়ে দেবীদুর্গা রক্ষা করেছিলেন ভক্তদের শস্য ভান্ডার। সেই থেকে এই লৌকিক পূজার প্রচলন। দেবী ফসলের ভান্ডার রক্ষা করেছিলেন বলে কালের প্রবাহে এই লৌকিক দুর্গা পূজা ভান্ডার দেবের পূজা বলে পরিচিতি পেয়ে যায়। জনশ্রুতি, রাজবংশী সমাজের একজন, ‘দেওসি’ (পুরোহিত) ফুকুন্দ রায় এই পুজো করার জন্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়েছিলেন। তার উদ্যেগে ক্রান্তির চেকেন্দা বনে আরও তিনজন প্রথম এই লৌকিক পুজো করেছিলেন। পরবর্তীতে এই পুজোর কলেবর দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তবে তিস্তা পারে ক্রান্তিতেই শুধু অনুষ্ঠিত হয় এই লৌকিক পুজো । অন্যদিকে, লক্ষ্মী ঠাকুর হলেন সম্পদের দেবী। তাই ভান্ডার লৌকিক পূজার ঘট বসে লক্ষ্মী পুজোর রাতে। মূল পুজো শুরু হয় লক্ষ্মী পূজার দুদিন পর থেকে। চলে টানা পাঁচদিন। পুজোয় প্রতিদিন বলি হয় অন্ততঃ হাজার দুই তিন পাঁঠা। কয়েক হাজার পায়রা। সারা বছর ধরে দেবীর উদ্দেশ্য বিভিন্ন অঞ্চলের ভক্তদের মানত করা পাঁঠা ও পায়রা বলি দেওয়া হয় বাৎসরিক পূজা উৎসবে। এখন অবশ্য অনেকে মানত করা পায়রা পূজোয় দেবীকে উৎসর্গ করে আকাশে উড়িয়ে দেন । পুজার পাঁচদিন ঘিরে বসে জমজমাট মেলা।
কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় পুজো এবং মেলা পরিচালনার জন্য গড়া হয়েছে ট্রাস্টি বোর্ড। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মেলা পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ক্রান্তি গ্রাম পঞ্চায়েত। কলেবর আরও বেড়ে যাওয়ায়, ১৯৯৫ থেকে মেলা পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করেছে মাল পঞ্চায়েত সমিতি। ২০০২ সালে গড়ে ওঠে স্থায়ী মন্দির। এরপর ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালে পুরনো মন্দির ভেঙে ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গড়া হয় নতুন সুদৃশ্য মন্দির। মন্দিরে পূজিত হন মাটির তৈরি ভান্ডার দেব। প্রতি বছর উৎসবের আগে গড়া হয় নতুন মূর্তি। নিত্যদিন মন্দিরে পুজো হয় ভান্ডার দেবের। বাৎসরিক উৎসব শুরুর আগে পুরনো মূর্তি বিসর্জন দিয়ে মন্দিরে আনা হয় নতুন মূর্তি। এটি এখন জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা। এ মেলার বৈশিষ্ট হল, প্রতিদিন সন্ধ্যায় শুরু হয় মেলা। চলে সারারাত ধরে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলায় বাড়তে থাকে ভিড়। দিনের বেলা মেলা থাকে বন্ধ। সম্ভবত, চাষাবাদ এবং দিনের অন্যান্য কাজকর্মের ক্ষতি না করে সন্ধ্যায় যাতে লোকজন মেলায় আসতে পারে সে কারণেই চালু হয়েছিল এই ব্যবস্থা। পুজো, মেলা এবং লোকসংস্কৃতির আসরে অংশ নিতে দূর দূরান্ত থেকে আসে বিভিন্ন ধর্ম বর্ণ সম্প্রদায় নির্বিশেষে নানা জনগোষ্ঠীর মানুষেরা। এজন্য উৎসবের পাঁচদিন সারারাত ধরে থাকে বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াতের ব্যবস্থা। এই লৌকিক পুজো, মেলা এবং লোকসংস্কৃতির আসরকে কেন্দ্র করে তিস্তা পারের ক্রান্তি হয়ে ওঠে সম্প্রীতির উৎসবের এক উজ্জ্বল মহা মিলন ক্ষেত্র।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!