কথা আর কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য সমাধানের বিষয়ে তিনি আলোচনার জন্য উন্মুখ। এই কথা বলার পরের দিনই রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে বোমাবর্ষণ করেছে।
রবিবার ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক জেলায় ১০ টিরও বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কুপিয়ানস্ক–লাইমান ফ্রন্টলাইন বরাবর ২৫টিরও বেশি শহরে গোলা বর্ষণ করেছে। এছাড়া জাপোরিঝিয়াতে প্রায় ২০টি শহরে আঘাত করেছে। এমনই দাবি করেছে ইউক্রেনের শীর্ষ সামরিক কমান্ড। এই রকেট হামলাকে মস্কো একটি ‘বিশেষ অভিযান’ বলে অভিহিত করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা কুপিয়ানস্ক–লাইমান যোগাযোগের লাইন বরাবর রকেট হামলা চালিয়ে প্রায় ৬০ জন ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করেছে এবং ইউক্রেনের অসংখ্য সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে।
ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়ার রকেট হামলার ফলে কুপিয়ানস্ক–লাইমান ফ্রন্টলাইন এলাকায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, মস্কো ২০২২ সালের শেষ কয়েকটা দিন রাশিয়া তাঁদের অন্ধকারে রাখার চেষ্টা করছে এবং জীবনকে কঠিন করে তুলছে। বড়দিনের সন্ধ্যায় ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া এবছর যা যা করতে পারে, তার সবকিছুই করছে। আমি জানি অন্ধকার আমাদের দখলদারদের নতুন পরাজয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া থেকে বাধা দেবে না। কিন্তু আমাদের যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে রাশিয়া–ইউক্রেন সবচেয়ে মারাত্মক ইউরোপীয় সংঘাত এবং ১৯৬২ সালের কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর থেকে মস্কো এবং পশ্চিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। আলোচনার জন্য পুতিনের সর্বশেষ প্রস্তাব সত্ত্বেও গত ১০ মাসের মধ্যে সংঘাতের কোন শেষ নেই। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক টুইট করে বলেছেন, পুতিনকে বাস্তবে ফিরে আসতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে যে রাশিয়াই আলোচনা চায় না। তিনি আরও বলেছেন, ‘রাশিয়া এককভাবে ইউক্রেনে আক্রমণ করছে এবং নাগরিকদের হত্যা করছে। রাশিয়া আলোচনা চায় না, দায়িত্ব এড়াতে চেষ্টা করে।’