- প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ৩১, ২০২২
যুদ্ধের ২৫০ দিন অতিক্রান্ত। ইউক্রেনে ঘনঘন মিসাইল হামলা রাশিয়ার। স্থায়ীযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে উপদ্রুত বিশ্বে

ইউক্রেন নিয়ে হত্যা গণহত্যা একটু থমকে গিয়েছিল। এরই ফাঁকে রাশিয়া পরবর্তী হামলার অঙ্ক কষছিল।ন্যাটো, আমেরিকা, পশ্চিম দুনিয়া সতর্ক ছিল। কিন্তু নতুন রুশ হামলা রোখার কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেনি, অন্তত প্রকাশ্যে। গোপনে ইউক্রেনকে অস্ত্র আর অর্থ যোগাচ্ছিল। রাশিয়া তার বিরুদ্ধ দেশগুলির নরম-গরম ভুমিকায় সুযোগ নিয়ে আবার ইউক্রেন দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আবার আক্রমণ করেছে কিভ শহরে। সংবাদ সংস্থা বিবিসি বলছে, কিভসহ ইউক্রেনের প্রধান শহর গুলিতে মূহুর্মুহু মিসাইল ছাড়ছে রাশিয়া।শহরগুলি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, অন্ধকারে আচ্ছন্ন। নতুন রুশ হামলার মোকবিলায় ইউক্রেন প্রস্তুত নয়। হিসেব কষছে ন্যাটো, সরাসরি প্রত্যাঘাত করবে না, দূর থেকে হুমকি দিয়ে যাবে। রুশ মিত্র চিন স্বাভাবিকভাবে নীরব। আমেরিকাও চুপ।
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত কারকিভে গভীর অন্ধকার। বিদ্যুত নেই। জল সরবারহ নেই।রুশ সংলগ্ন ক্রিমিয়ার কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নৌবহর হামলার প্রতিক্রিয়ায় মস্কো ক্ষিপ্ত। সোমবার সকালে মধ্য ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে হামলা চালায় রাশিয়া। হতাহতের খবর জানা যায়নি। তবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বিস্তৃত অঞ্চল। আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিভিন্ন শহরে। রুশ হামলা প্রলম্বিত হলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে। হ্যাঁ, বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা নেই।তবে যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের কয়েকটি দেশ জড়িয়ে পড়তে পারে।
আমরা গোড়া থেকেই বলে এসেছি, ন্যাটোর মনস্তাত্ত্বিক আগ্রাসন রুখতে রাশিয়া সঙ্কল্পবদ্ধ। ক্ষমতাসীন পুতিন তীব্র জাতীয়তাবাদী। রুশ জাতি চিন্তা তাঁকে ক্রমশ শক্তিশালী জাতিরাষ্ট্র গড়ে তোলার উসকানি যোগাচ্ছে। বিশ্বের দরবারে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু মার্কিন আধিপত্য রাশিয়াকে আবার বৃহৎশক্তি হয়ে ওঠার প্ররোচনা যোগাচ্ছে। বিশ্বের দ্বিতীয়ত্তম বৃহৎশক্তি চিন রাশিয়ার পাশে। সে সমাজতান্ত্রিক আধিপত্যবাদের চাইতে, বিশ্বের নানা প্রান্তে নিজের অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য বিস্তারে অধিকতর আগ্রহী। রাশিয়া তার পথে প্রতিবন্দক নয়।বরং সহযোগী। লড়াই মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ও চিনের মধ্যে। এ লড়াইয়ের সশস্ত্র রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ইউক্রেন। ন্যাটো ঘেঁষা, ইহুদি জাতীয়তাবাদী ভলোদিমির জেলেনেস্কির নেতৃত্বাধীন ইউক্রেনকে ভুগতে হবে। উদ্ধাস্তুর স্রোত বইবে পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ ইউরোপের দিকে। মানবিকতার খাতিরে শরণার্থীদের আমেরিকা কতটা জায়গা ছাড়বে, একটি জটিল প্রশ্ন। দুর্বলচিত্তের জো বাইডেন ঝুঁকি নিলেই ডোনাল্ড ট্র্যাম্প আর রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা ময়দানে ছুটতে শুরু করবে। বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি নেই। কিন্তু যে খন্ডচিত্র দে্খা যাচ্ছে, তা বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে কম ভয়ঙ্কর নয়। দুনিয়া জুড়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট, সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন দেশের বৈরিতা আর গণতন্ত্রের ছদ্মবেশ নিয়ে নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রের কৌশলপ্রিয় অবস্থান বিশ্বকে অপ্রতিরোধ্য, অনিবার্য স্থায়ী যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
❤ Support Us