Advertisement
  • মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
  • আগস্ট ৩০, ২০২৩

ফুটবলের পাওয়ার হাউস হওয়ার লক্ষ্যেই নেইমারদের পেছনে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সৌদির

নজরুল ইসলাম
ফুটবলের পাওয়ার হাউস হওয়ার লক্ষ্যেই নেইমারদের পেছনে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সৌদির

একসময় বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের পাওয়ার হাউস ছিল ইতালির সিরি আ। পরবর্তী কালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ সেই জায়গা দখল করে। বিশ্বের সেরা সেরা ফুটবলারদের দাপটে অন্য মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল প্রিমিয়ার লিগ। ইউরোপীয়ান ফুটবলে সেরার তকমা দখল করে। এরপর জিদান, মেসি, নেইমারদের মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারদের সৌজন্যে স্পেনের লা লিগা জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছয়। পরে মেসিরা লা লিগা ছেড়ে যোগ দেন ফরাসি লিগে। যদিও মেসি, নেইমারদের যোগদানে ফরাসি লিগ জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে পারেনি।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই সৌদি আরবের ফুটবলে ঝড় বইতে শুরু করেছে। ইউরোপীয়ান ফুটবল ছেড়ে একের পর এক তারকা যোগ দিচ্ছেন সৌদি আরবের লিগে। প্রথমেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে তুলে নেয় আল নাসের। এরপর একের পর সৌদি প্রো–লিগে নাম লেখান করিম বেঞ্জিমা, রিয়াদজ মাহরেজ, জর্ডন হেন্ডারসন, সাদিও মানে, এমনগোলো কান্তে। আর সর্বশেষ সংযোজন নেইমার জুনিয়র। সবাইকে চমকে দিয়ে পিএসজি থেকে বিশ্বাল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নেইমারকে তুলে নিয়েছে আল হিলাল।
একের পর এক তারকা ফুটবলার যোগ দেওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সৌদি আরব কি তাহলে বিশ্ব ফুটবলে নতুন পাওয়ার হাউস হতে চলেছে?‌ প্রশ্নটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সৌদি আরবকে আন্তর্জাতিক ফুটবল হাব করার উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি জানুয়ারিতে আল নাসেরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর আগমনের সাথে সাথেই শুরু হয়েছে। ৩৭০ মিলিয়ন ইউরোতে রোনাল্ডোকে সই করায় আল নাসের। গ্রীষ্মের সময় সৌদি প্রো লিগ বিদেশি ফুটবলারদের নেওয়ার জন্য ট্রান্সফার ফি বাবদ ৮৫০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার ব্যয় করেছে, যা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়।
সৌদি প্রো লিগের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা কার্লো নোহরার মতে, এটা একেবারেই স্পোর্টসওয়াশিং নয়। সৌদি আরব সরকারের লক্ষ্য আয় এবং মানের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ লিগগুলির মধ্যে সৌদি প্রো লিগকে স্থান করে দেওয়া এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ এবং লা লিগার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। নোহরা বলেছেন যে, ‘‌সৌদি প্রো লিগ তার উদ্দেশ্য অর্জন না করা পর্যন্ত বিদেশি খেলোয়াড়দের আকৃষ্ট করতে বড় খরচ চালিয়ে যাবে। আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে যতদিন সময় লাগবে, ততদিন পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে সমর্থন পাব। তবে আমরা সম্পূর্ণভাবে সরকারি মূলধনের ওপর নির্ভরশীল নই।’‌
শুধু ফুটবলেই নয়, বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশটি  ফর্মুলা ওয়ান এবং বিশ্বের তাবড় তাবড় বিদ্রোহী গল্ফারদের নিয়ে এলআইভি গঠন করে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া বক্সিংয়ের মতো খেলাতেও প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন সৌদি আরবের প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমন। তিনি বিভিন্ন খেলায় প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে প্রসারে সাহায্য করছেন। ২০২৯ সালে সৌদিতে অনুষ্ঠিত হবে শীতকালীন এশিয়ান গেমস। যার জন্য সারওয়াত পাহাড়ের ত্রোজেনা অঞ্চলে একটা নতুন শহর তৈরি করা হচ্ছে। সমালোচকরা সৌদির এই প্রয়াসকে ‘‌স্পোর্টসওয়াশিং’‌ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তবে অনেকে মনে করেন, সৌদি আরবের কৌশলের পেছনে ইমেজ এবং খ্যাতি পরিচালনাই একমাত্র কারণ নয়। সৌদির ডি ফ্যাক্টো শাসক ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমন দ্বারা পরিচালিত সরকারের ভিশন ২০৩০ প্রকল্পের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হল খেলাধুলা। অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণ কর্মসূচীটি নতুন শিল্প নির্মাণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানির রাজস্বের ওপর দেশের নির্ভরতা হ্রাস করার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। নোহরা বলেছেন, ‘‌ভিশন ২০৩০–এর অংশ হিসাবে সৌদি জনগণের জন্য বিনোদন প্রদান করা এবং একই সাথে স্থানীয় প্রতিভা বিকাশ করা যা দীর্ঘমেয়াদে সৌদি প্রো লিগের স্তরকে বাড়িয়ে তুলবে।’‌
সৌদি আরব একটা ফুটবলপ্রেমী দেশ, যেখানে জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ ফুটবল খেলা দেখে বা অনুসরণ করে। এই সাহসী বিনিয়োগগুলি লাভজনক হবে কিনা তা সময়ই বলবে। তবে কৌশলটি একটা ফুটবল পাওয়ার হাউস হওয়ার জন্য উপসাগরীয় দেশটির দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা প্রদর্শিত হয়েছে।


  • Tags:
❤ Support Us
আশ্রয় গ | ল্প রোব-e-বর্ণ
পথ ভুবনের দিনলিপি। পর্ব ১২ পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
হিরণবালা । পর্ব ১২ ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
error: Content is protected !!