Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • জুলাই ৯, ২০২৪

হাথ্রস কাণ্ডে রিপোর্ট জমা সিটের, অভিযোগের তীর আয়োজকদের দিকে, বরখাস্ত ৬ পুলিশ আধিকারিক

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
হাথ্রস কাণ্ডে রিপোর্ট জমা সিটের, অভিযোগের তীর আয়োজকদের দিকে, বরখাস্ত ৬ পুলিশ আধিকারিক

হাথরসে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় উত্তর প্রদেশ পুলিশের তরফে একটি ‘স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম’ বা ‘সিট’ গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মঙ্গলবার এ ডি জি অনুপম কুলক্ষেত্র ও আলীগড়ের কমিশনার চৈতরা ভি-র উপস্থিতিতে সেই তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকে ৩০০পাতার একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে । পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ১১৯ জন ও তাঁদের পরিবারবর্গের জবানবন্দী রেকর্ড করেছে। তাঁদের রিপোর্টে তাঁরা সরাসরি ‘সৎসঙ্গ’ আয়োজকদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
সিটের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, আয়োজকেরা অনুমোদিত সংস্থার অতিরিক্ত মানুষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা। সিটের সুপারিশ ক্রমে ৬ জন পুলিশ আধিকারিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারণ উপর মহলের অনুমতি সত্বেও তাঁরা ঘটনাস্থলটি পরিদর্শন করেননি।বরখাস্তকৃত আধিকারিকদের মধ্যে রয়েছে- সিকান্দরারাও-এর সাব ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সার্কেল অফিসার, স্টেশন অফিসার, তহসিলদার, কচোরার থানার ইনচার্জ এবং পোড়ার থানা আধিকারিক৷
পুলিশ হাথরসের জেলাশাসক আশিস কুমার, এস পি নিপুন আগরওয়াল, এস ডি এম সিকান্দার রাওয়ের জবানবন্দীও রেকর্ড করেছে। ওই সৎসঙ্গের অনুমতি দিয়েছিলেন এরা। পাশাপাশি সভাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের জবানবন্দীও রেকর্ড করেছে পুলিশ।
ঘটনাস্থলে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সৎসঙ্গের শেষে ভোলে বাবার পায়ের ধুলো নিতে গেলে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাটি ঘটে । অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সভা শেষ হলে ভোলে বাবা নিজেই ঘোষণা করেন যে ভক্তরা এবার তাঁর পায়ের ধুলো নিতে পারেন । তখন অনুগামীদের মধ্যে পদধূলি সংগ্রহ করার জন্য হুড়োহুড়ি পরে যায়। তখনই বহু মানুষ পদপিষ্ট হন।
পরিস্থিতি বুঝে ‘ভোলে বাবা’ তাঁর কনভয়ে চড়ে মুহূর্তে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসন তখন আহতদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন।
ইতিমধ্যে স্বঘোষিত ধর্মগুরুর উকিল এপি সিং দাবি করেছেন, সভাস্থলে কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বিষাক্ত রাসায়নিক স্প্রে করেন। তাই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁর দাবি, সৎসঙ্গে পদপিষ্টের ঘটনা নিছক কোনও দুর্ঘটনা নয় । এটি একটি ষড়যন্ত্র।’
গত সপ্তাহে শনিবার উত্তর প্রদেশে হাথরসে ধর্মীয় সভায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার মূল অভিযুক্ত দেবপ্রকাশ মধুকর দিল্লি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁকে উত্তর প্রদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর ওই দিনই তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। কোর্ট তাঁর ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ।
হাথরসে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ‘ভোলে বাবা’র সভায় ১২১ জনের পদপিষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনার পর থেকে মূল ‘সেবাদার’ দেবপ্রকাশ ফেরার ছিলেন। ৪ জুলাই উত্তর প্রদেশের পুলিশের তরফে ১ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরষ্কার ঘোষণা করা হয় । পাশাপাশি পুলিশি তৎপরতাও অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। পার্শ্ববর্তী রাজ্য রাজস্থান, দিল্লি ও হরিয়ানার পুলিশের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল। শেষমেশ ঘটনার চারদিন পর শনিবার দিল্লির নজফগড় থানায় আত্মসমর্পণ করেন দেবপ্রকাশ মধুকর।
‘ভোলে বাবা’র ঘনিষ্ঠ দেবপ্রকাশ হাথরসে ‘সৎসঙ্গে’র আয়োজনের মূল দায়িত্বে ছিলেন । ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা ছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। তবে ওই এফআইআরে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ‘ভোলে বাবা’র নাম ছিলনা, যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক সৃষ্টি হয় । রাজস্থানের দউসা নামক স্থানে নিয়মিত ‘সৎসঙ্গ’ হত। মধুকরের খোঁজে রাজস্থানেও তল্লাশি চালানো হয়। পাশের রাজ্যে জোরদার খোঁজখবর চলাকালীনই দিল্লির পুলিশের কাছে ধরা দেন তিনি।
শনিবার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্বঘোষিত ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার ওরফে সুরজ পাল সিং ওরফে ‘ভোলে বাবা’ হাথরসে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ট্রাস্ট মৃতের পরিবারের শিক্ষা, স্বাস্থ্য , বিবাহের খরচ বহন করবে। তাঁর বক্তব্য ইতিমধ্যে তিনি তাঁর ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!