Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মার্চ ১৮, ২০২৪

নিম্নমানের ওষুধ তৈরির অভিযোগ ৭ সংস্থার বিরুদ্ধে।দায় এড়াতেই কি ঢাল নির্বাচনী বন্ড ?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
নিম্নমানের ওষুধ তৈরির অভিযোগ ৭ সংস্থার বিরুদ্ধে।দায় এড়াতেই কি ঢাল নির্বাচনী বন্ড ?

ভারতের ৩৫টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে ১ হাজার কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে। ১৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী বন্ড নিয়ে প্রকাশিত তালিকায় এমন তথ্য সামনে এসেছে। এই ৩৫টি কোম্পানির মধ্যে নিম্নমানের ওষুধ তৈরির জন্য ৭টি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিকস অ্যাক্ট ১৯৪০ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই আইনে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন যে কোনও সময় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি পরিদর্শনের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি হওয়া ওষুধের গুণমান পরীক্ষা করতে পারে। যদি কোনও ওষুধ গুনগতমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশের যে কোনও রাজ্যের প্রশাসন ওই সংস্থাকে নোটিশ পাঠাতে পারে।  শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে উৎপাদন স্থগিত এবং লাইসেন্স বাতিল পর্যন্ত করতে পারে।

ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল এথিক্স–এর সম্পাদক অমর জেসানি বলেছেন, ‘‌আমরা প্রায়ই রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে ওষুধ নিয়ন্ত্রকদের শিথিল দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই৷ ফার্মা সংস্থাগুলি যদি রাজ্যস্তরে  আপস করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে অর্থ প্রদান করে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’‌ ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প সবসময় সরকারে কাছ থেকে ছাড় চায়। ওষুধ কোম্পানিগুলি সরকারের কাছ থেকে সস্তায় জমি, কর ‌ছাড়ের প্রত্যাশায় থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটা তাৎপর্যপূর্ণ যে, ওষুধ কোম্পানিগুলি রাজনৈতিক দলগুলির অর্থ সরবরাহের একটা বড় ক্ষেত্র। কিন্তু তাদের এই অনুদান কখনো নিরপেক্ষ নয়।

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া যে ৭টি কোম্পানি অর্থ দিয়েছে, সেগুলির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই কোম্পানিগুলির মধ্যে রয়েছে হেট্রাে ল্যাব এবং হেট্রো হেলথ কেয়ার। যারা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৩৯ কোটি টাকায় নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল। হায়দরাবাদের এই সংস্থাকে মহারাষ্ট্র সরকার খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন নিম্নমানের ওষুধের জন্য ৬ বার নোটিশ জারি করেছে।

টোরেন্ট ফার্মা ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৭৭.‌৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। গুজরাটভিত্তিক এই কোম্পানির অ্যান্টিপ্ল্যাটলেট মেডিসিন ডেপ্লাট–১৫০ স্যালিসিলিক অ্যাসিড পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল এবং ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্র ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দ্বারা নিম্নমানের ঘোষণা করা হয়েছিল। গুজরাট সরকার এই ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। জাইডাস হেলথ কেয়ার ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৯ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। ২০২১ সালে বিহারের ওষুধ নিয়ন্ত্রক গুজরাটভিত্তিক কোম্পানির দ্বারা উৎপাদিত রেমডেসিভির ওষুধের একটি ব্যাচকে জাল হিসাবে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু গুজরাট সরকার কোনও পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

গ্লেনমার্ক ২০২২ এবং ২০২৩ সালের মধ্যে নিম্নমানের ওষুধের জন্য ৫ বার নোটিশ পেয়েছিল৷ মহারাষ্ট্র ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তাদের নামে চারটি নোটিশ জারি করেছিল। সিপ্লা ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে নিম্নমানের ওষুধের জন্য চারবার শোকজ নোটিশ পেয়েছে। এই সংস্থাটি ২০১৯ সাল থেকে এপর্যন্ত ৩৯.‌২ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে।

আইপিসিএ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড ২০২২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ অক্টোবরের মধ্যে ১৩.‌৫ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে। ২০১৮ সালে নিম্নমানের ওষুধ তৈরির জন্য মুম্বই ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন শোকজ করেছিল। ইনটাস ফার্মাসিউটিক্যাল ২০২২ সালের অক্টোবরে ২০ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!