- এই মুহূর্তে দে । শ
- আগস্ট ৩, ২০২৪
ভাগীরথীর পাড়ে ভয়াবহ ভাঙন। বিপন্ন বর্ধমানের পূর্বস্থলী, কেতুগ্রামের বহু পরিবার

ভাগীরথীর পাড় ভাঙা শুরু হয়েছে পূর্বস্থলী আর কেতুগ্রামে। পূর্বস্থলী ২নং ব্লকের ঝাউডাঙায় ভাগীরথীর ২০ মিটার পাড় ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়েছে। আর কেতুগ্রামের নতুনগ্রামে যেখানে বাবলা নদী এসে ভাগীরথীতে মিশেছে, সেখানে ভাঙন শুরু হয়েছে। বহু ঘরবাড়ি আর অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রটি একেবারে ভাঙনের নাগালে এসে দাঁড়িয়েছে।
পূর্বস্থলীর ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের ঝাউডাঙা, কাশীপুর, হালতাচরা, রুদ্রডাঙা, গঙ্গাপুর-সহ ৬টি গ্রামের একটা বড়ো অংশ নদী পেঁচানো। ফলে বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান ভরসা নদীপথ। ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। ভাঙনের হাঁ-মুখের সামনে দাঁড়িয়ে কংক্রিটের রাস্তা, মন্দির, শতাধিক বসতবাড়ি। ৫০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে স্কুল, পঞ্চায়েত কার্যালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২০০৬ সালে ঝাউডাঙায় বোল্ডার, বাঁশের খাঁচা দিয়ে পাড় বাঁধানোর কাজ হয়। সেই অংশও এবার ভাঙতে শুরু করেছে। গ্রামের বাসিন্দা নির্মল দে, প্রভাত দে-রা জানান, ‘ভাঙনের বিষয়টি সেচ দপ্তরের নজরে আনা হয়েছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। বর্ষা শুরু হলে তখন আর ভাঙন কোনওভাবে আটকানো যাবে না।’
একই অবস্থা কেতুগ্রামেও। এখানকার ভাঙন কবলিত মউগ্রাম পঞ্চায়েতের নতুনগ্রাম গোটা থানা এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত। থানা, হাইস্কুল, কলেজ, অফিস-কাছারি, হাসপাতাল সবই যেতে হয় নদী পেরিয়ে। ভাঙনের কোপে পড়ে বাইরের জগৎ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হওয়ার আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে এলাকার বাসিন্দাদের। ভাঙনের গ্রাসে রোজই খানিকটা করে কৃষিজমি নদীর পেটে চলে যাচ্ছে। দিনরাত ঝুপঝুপ করে মাটি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে। বেশকিছু বসতবাড়ি, ১১১নং অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রটি নদীতে তলিয়ে যাওয়ার প্রহর গুনছে। গ্রামের বাসিন্দা আবু তালেব শেখ, ইয়াসমিন বিবিরা জানালেন, ‘কয়েক বছরে কত এলাকা যে নদী গিলেছে, তার ইয়ত্তা নেই। বহু মানুষ ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। যাদের কোথাও যাওয়ার উপায় নেই, তারা রয়ে গিয়েছেন আর ভাঙনের কোপে একটু একটু করে জমি, ভিটে হারাচ্ছেন।’ গ্রামে সাড়ে ৪ হাজার লোকের বাস। তারমধ্যে শ’তিনেক পরিবার কমবেশি ভাঙনের কবলে। এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘এখানকার ভাঙন যে ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে, তাতে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন বাড়তেই থাকবে। ভাঙনের সমস্যা সেচ দফতরের নজরে আনা হয়েছে।’
❤ Support Us