Advertisement
  • এই মুহূর্তে ন | ন্দ | ন | চ | ত্ব | র
  • মে ১১, ২০২৩

রবীন্দ্রভাবনার বিশ্বজনীন স্বীকৃতি ! বিশ্ব দরবারে সমাদৃত শান্তিনেকতন

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
রবীন্দ্রভাবনার বিশ্বজনীন স্বীকৃতি ! বিশ্ব দরবারে সমাদৃত শান্তিনেকতন

জমি বিতর্কের আবহেই বিশ্বভারতীতে সুসংবাদ। দীর্ঘ এক দশক প্রচারাভিযানের পর বিশ্ব ঐতিহ্যর তকমা পেতে চলেছে শান্তিনিকেতন। ইউনেস্কোর কাউন্সিল অন মনুমেণ্টস এন্ড সাইটস তাদের তালিকায় রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত যাতে করে তার জন্য নাম সুপারিশ করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে আইকোমস বিশ্বভারতীর অন্তর্ভুক্তি সুনিশ্চিত করেছে।  কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি মঙ্গলবার টুইট বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চলতি বছরে সেপ্টেম্বর মাসে সৌদি আরবের রিয়াধে ওয়র্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্বীকৃতি প্রাপ্তি ঘোষণা করা হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অসামান্য স্বীকৃতিলাভের ঘটনায় আপ্লুত বিশ্বভারতীর প্রশাসন। এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত এক উচ্চ পদস্থ এক আধিকারিক বলেছেন, বিশ্বভারতীকে হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয় তকমা দেওয়ার কাজ চলছে। । এটি হবে বিশ্বের প্রথম হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয়। । সাধারণত একটি স্মৃতিস্তম্ভকে হেরিটেজ ট্যাগ দেওয়া হয়। তবে, প্রথমবারের মতো, একটি জীবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় যা পুরোদমে এখনও  কাজ করছে, তাকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। পৃথিবীতে আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ধারাবাহিকভাবে সাংস্কৃতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিকরাও রবীন্দ্রস্মৃতিধন্য  প্রতিষ্ঠানের বিশ্বজয়ে খুশি। তবে, এ সম্মান বিশ্বভারতী প্রশাসন  নিজেদের কাছে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান।

২০১০ সালে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর সরকার এবং পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের তৎকালীন মহানির্দেশক গৌতম সেনগুপ্তের তত্ত্বাবধানে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য প্রথম বার মেলে ধরার চেষ্টা শুরু হয়। স্বীকৃতি পাওয়ার ঘটনায়  জহর বলছেন, ইউনেস্কো তখন শান্তিনিকেতনের এলাকায় পুরসভা, পঞ্চায়েত, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সহ বিভিন্ন মালিকানার জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শান্তিনিকেতনের এলাকায় বেশ কিছু নির্মাণ কাজও ঐতিহ্য বিরোধী বলে ওঁরা আপত্তি জানান। স্থপতি আভা নারায়ণ জানিয়েছেন,  ২০২১ সালে  সব দিক বিচার বিবেচনা করে, শান্তিনিকেতনের জন্য আর্জি জানানো হয় । তিনি বলেন, শুধুমাত্র বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন ৩৬ হেক্টর জমিই ঐতিহ্য ক্ষেত্র বলে চিহ্নিত করাবার জন্য অনুরোধ করা হয়। সেখানে  সংসদের বিশ্বভারতী আইনের সুরক্ষা কবচ রয়েছে সে সম্পর্কে ইউনেস্কোকে অবহিত করা হয়।

বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্রের স্বীকৃতি পেতে ইউনেস্কোর সামনে বিশেষ সর্বজনীন মূল্য তুলে ধরতে হয়।   এ ব্যাপারে আভা বলেছেন,  শান্তিনিকেতন উপনিবেশ ধাঁচের  অনুকরণ নয়। প্রাচ্যের আধুনিকতার হাত ধরেই রবীন্দ্রনাথ সারস্বত সমাজ ও সংস্কৃতি জগৎকে মেলান। এই  ব্যাপারে গুরুত্ব  দেওয়া হয়েছে। রবীন্দ্র ভাবনা ও সাহিত্যের ছায়ায় শান্তিনিকেতনের ভবনে ভবনে স্থাপত্য, চিত্রকলা, গৃহসজ্জার সঙ্গে নিসর্গের বিন্যাসও স্থায়ী ঐতিহ্য স্মারক হিসাবে ইউনেস্কোর শর্ত পূরণ করেছে।

বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায়  আগে এ রাজ্যের দার্জিলিংয়ের টয়ট্রেন বা সুন্দরবন উঠে এসেছে। তবে,  সুন্দরবনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং টয়ট্রেনের সঙ্গে নীলগিরি পাহাড় ও শিমলার রেলগাড়িও  সে গৌরবের সমান অংশীদার। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে দুর্গাপুজোর স্বীকৃতি আসে ইউনেস্কোর অন্য একটি তালিকায়। শান্তিনিকেতনের সঙ্গে নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যান  এবং বিষ্ণুপুরের মন্দিরও দীর্ঘদিন ঐতিহ্যস্থল হিসেবে শর্তসাপেক্ষ  তালিকায় রয়েছে।  এ স্বীকৃতি এলে এ রাজ্যে শান্তিনিকেতনই একক ভাবে চূড়ান্ত ঐতিহ্য তালিকায় থাকবে।

 


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!