- মা | ঠে-ম | য় | দা | নে স | হ | জ | পা | ঠ
- মে ৮, ২০২৩
প্রণয়ে ছেদ, পেটের টানে ভিন্ন পথে শেরপারা
নিজেদের ঐতিহ্যগত পেশা ছেড়ে নতুন পেশার সন্ধানে পা বাড়াচ্ছেন নেপালের একাধিক শেরপা। গোর্খা জনজাতির মধ্যে একটা বড়ো অংশই পর্বতারোহণে পর্বতারোহীদের সঙ্গ দিয়ে থাকেন। বসন্ত থেকে প্রাক বর্ষা পর্যন্ত পর্বতারোহণের উপযুক্ত সময় কিন্তু এসময় পাহাড় চড়তে শেরপাদের কেন এত অনীহা তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। যাঁরা উঁচু থেকে উঁচু পর্বতের শৃঙ্গে আরোহণ করতে চান, শেরপাদের কাজ ছাড়ার প্রবণতায় তাঁরাও সমস্যায় পড়েছেন।
নেপালে পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে শেরপাদের সহযোগিতা গ্রহণ বাধ্যতামূলক। কারণ পাহাড়কে যেভাবে তাঁরা চেনেন , তাতে অন্য কেউ একাজে একা অংশ নিলে বিপদ প্রতিমুহুর্তে নিত্য সঙ্গী হয়ের ওঠে। নেপালে ৪১৪ খানা ২০,০০০ ফুট উচ্চতার পর্বত রয়েছে। যেখানে উঠতে গেলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শেরপার প্রয়োজন। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই এ প্রশ্ন আসে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কোন কারণে শেরপারা পেশা ত্যাগের কথা ভাবছেন ? এমনকি নিজের সন্তানদের এ পেশায় আসতে উৎসাহ দেন না। এর কারণ নির্ণয় করতে গিয়ে শেরপা জীবনের অনিশ্চয়তাকে দায়ী করছেন অনেকে। অধিকাংশ শেরপা পাহাড়ে চড়তে গিয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হলে বা আহত হলে তার পরিবারের কী হবে, সে ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। সরকারি সাহায্য প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বীমা প্রকল্প থেকে যে টাকা পাওয়া যায় তা সীমিত। সরকারের পক্ষ থেকে শেরপাদের জন্য কোনো ফাণ্ডের ব্যবস্থা করা হয়নি। মূলত এ কারণের অন্য কোনো লাভজনক পেশা ও আর্থিক নিরাপত্তার সন্ধানে বাইরে চলে যাচ্ছেন বহু নেপালি শেরপা, যারা সে দেশে থাকছেন তাঁরাও অন্য কাজ খুঁজে নিচ্ছেন।
যেসব পরিবার বংশ পরম্পরায় শেরপার কাজ করেছেন তাঁরাও এখন নিজের পরিবারের সন্তানদের অন্য জীবিকা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করেছেন। জনৈক এক শেরপা ঘরণী জানিয়েছেন, নিজের কষ্ট কর বড় করা সন্তানদের শেরপার কাজে পাঠাতে চান না। এচিত্র শুধু একটি পরিবার নয় , নেপালের বহু পরিবারেরই একই দশা। অনেক শেরপা পরবারের ছেলে মেয়ে এখন বাইরে তথ্য প্রযুক্তি নিয় পড়াশোনা করছেন বা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে পড়ছেন।
২০১৪ সালে নেপালে একটি বড়ো তুষারঝড় দেখা দেয়। যাতে ১৬ জন শেরপা মারা যান। বহু পরিবারের আশা ছিল এরপর সরকারি সাহায্যের পরিমাণ বাড়বে। কিন্তু দেখা যায়, মৃত্যু হলে ১১,০০০টাকা আর আহতদের ক্ষেত্রে পরিবারের জন্য এককালীন ৩০০০টাকা বরাদ্দ করে সরকার। সম্প্রতি, নেপাল সরকার ঘোষণা করে যে পর্বতারোহীরা তাঁদের সঙ্গের জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চমরী গাইয়ের ব্যবহার করতে পারবেন। এরকম নানাবিধ কারণের সমন্বয়ে শেরপাদের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে।
❤ Support Us