- কে | রি | য়া | র-ক্যা | ম্পা | স খাস-কলম
- ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
মেলাবেন তিনি মেলাবেন
সত্যম রায়চৌধুরী স্বপ্নময় পুরুষ। স্বপ্ন আর বাস্তবের সাধনা তাঁর অন্যতম অভিমুখ। ভাবনা চিন্তার নিঃশব্দ, নিরন্তর প্রয়োগের ভেতর দিয়ে, তাঁর সাংগঠনিক তৎপরতা যেভাবে সমাজকে, সমাজের নানা রকম অঙ্গীকারকে ছুঁয়ে থাকে, তা বহু পরিসরে সচরাচর দেখা যায় না। স্বপ্ন আর আত্মবিশ্বাসের দৌলতেই, গত কয়েক বছরের মধ্যে সত্যমের ঐকান্তিকতাকে স্পর্শ করে সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয় ( এসএনইউ) দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষানিকেতন হয়ে ওঠার যে সচেতন যাত্রার সূচনা করেছে, প্রকৃতি আর গতি তার সাবলীল। স্বতঃস্ফূর্ত। আমাদের বিশ্বাস, ভবিষ্যতে বহুমুখী বিদ্যার পঠন-পাঠনে এসএনইউ প্রাচ্যের নালন্দা, মধ্যযুগীয় কার্ডোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারা ধারণ করবে, তার ছত্রছায়ায় এসে জড়ো হবেন পূর্ব-পশ্চিমের বিদ্যান্বেষীরা। সম্ভবত সানন্দে আমরা বলতে পারব, উৎকর্ষের নিরিখে, বিস্তৃত আয়তনেও সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ।দৃষ্টি তার উন্মুক্ত।পঠন পাঠনের প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে উর্ধ্বারোহী। আপোস যেখানে বর্জিত; মানুষের প্রচেষ্টা আর বিদ্যার নিহিত দিকনির্ণয় প্রশ্নাতীতভাবে অর্জিত।
ভগিনী নিবেদিতা ভারতের আবেগ আর যুক্তিতে যে নির্মল কর্ষণ শুরু করেছিলেন, বিলম্বিত হলেও, তাঁর আদর্শকে, তাঁর শিক্ষাদর্শনকের সময় উপযোগী করে তোলবার প্রাঙ্গন সৃষ্টিতে আত্মনিয়োগ করেছে এসএনইউ ।
স্বপ্ন আর বিশ্বাসের এই বাস্তবকে, ২১ ফেব্রুয়ারি, সংযমী বাক্যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে ব্যক্ত করলেন আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী, বহুচেনা গুণীদের উপস্থিতিতে। বিনম্র, সংযত ভঙ্গিতে।
কী অদ্ভুত, বিস্ময়কর সমীকরণ, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ইজ্জত রক্ষার দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এসএনইউ এর প্রতিষ্ঠা দিবস। সূচনার দিনটি, কতটা সচেতনভাবে গৃহীত, তা আমাদের জানা নেই, তবু বলতে আর ভাবতে ভালো লাগছে, বিশ্ব মানব হয়ে ওঠার মনোহর সাধনার সঙ্গে নিজের অঙ্গীকার স্পষ্ট করেছে এসএনইউ। এও আরেক দুর্লভ, ইঙ্গিতধর্মী স্মরণীয় মুহূর্ত। বিশ্ব আজ যেরকম মহান একুশের ইমারত দেখে বিস্মিত, তেমনি এসএনইউ-র ভাবাবেগ আর বিস্তারে অবারিত ক্যাম্পাসের ছবি দেখবে, প্রাণিত করবে বিশ্বমানব। এটা নিছক চিত্র-চিহ্ন নয়, আয়োজিত অপরিহার্য বাস্তব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সত্যম রায়চৌধুরী বলেছেন, উৎকর্ষের সন্ধান এসএনইউ এর ভিত্তি। বহুমুখী সঙ্কল্পের বাস্তব তার নির্ণীত ভবিষ্যৎ। ভুল বলেননি, বিশ্ববিদ্যার নির্মেদ সংগঠক। তাঁর প্রচেষ্টা, তাঁর মননের কর্ম আর ধর্মকে স্বাগত জানালেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, মার্টিন কেম্পশেন, সুগত বসু, প্রমীলা কুমারী, শোভন দেব, ভোলা থাপা সহ বহু বিদগ্ধ। সুগত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বলেছেন, সিস্টার নিবেদিতা স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ আর জগদীশ বসুর সাধনার মধ্যে যে সংযোগ নির্মাণ করেছিলেন, তারই ছায়াপাত এই মুহূর্তে আরো বেশি প্রয়োজন এবং প্রাসঙ্গিক। সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সমৃদ্ধ বোধ করছি ।
সুগত মেধাবি ঐতিহাসিক, তাঁর রক্তে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর দীপ্ত, আন্দোলিত প্রবাহ।নেতাজি ভারতকে নবীন পথে, নবীন অঙ্গীকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা এখনো অসম্পূর্ণ। কাজের ব্যাপ্তি আর গম্ভীরকে সঙ্গে নিয়ে নেতাজির সঙ্কল্প আর মহিয়ষী নিবেদিতার বিশ্বাসের বাস্তবকে, বাস্তবের উচ্চারণ ও উত্তরণকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলবে এসএনইউ। এটাই তার ঘোষিত সঙ্কল্প।প্রকারান্তরে জানালেন বহুবচনের সহযাত্রী সত্যম রায়চৌধুরী।
আমরা এরকম ভাবি। এরকম বাস্তবের ছবি দেখছি।আমাদের চোখের সামনে ফুটে উঠছে তারুণ্য আর বিদ্যার কাঙ্খিত ক্যাম্পাস। যেখানে, গোলাপ আর রজনীগন্ধা নাচবে, গলা খুলে গাইবে তরুণতর ছন্দে। উদ্ভাসিত আনন্দে।
বিশ্বভারতীকে ঘিরে এরকম স্বপ্ন দেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।আমাদের বিশ্বাস, বিশ্ব কবির দূরদর্শিতা আর মুক্তশিক্ষার আহবানকে নবরূপে আলিঙ্গন করতে বার্তা জোগাবেন সত্যম, মেলাবেন তিনি গ্রাম আর শহরকে, পূর্ব আর পশ্চিমের বহুমাত্রিক স্বরকেও।
❤ Support Us