Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩

মাহসা আমিনীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইরানের মহিলারা বলছেন, ‘আমি এখন যা পছন্দ করি তাই পরিধান করি”

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মাহসা আমিনীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইরানের মহিলারা বলছেন,  ‘আমি এখন যা পছন্দ করি তাই পরিধান করি”

মহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর পর ইরানের সব মহিলা কী বলতে পারছেন, “আমি এখন যা পছন্দ করি তাই পরিধান করি?’ সাহসী বিদ্রোহের এই কাজগুলি এখন তেহরানের কেউ কেউ করছেন, সেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর এই সময়ে ইরানীদের কাছে এই কথা বলা  প্রায় অচিন্তনীয় ছিল। কারণ সেই সময়টা ছিল নীতি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনীর মৃত্যুর সময়, যখন তাঁর  বিরুদ্ধে হিজাব বা বোরখা সঠিকভাবে না পরার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

ফায়ার যাওয়া যাক সেই সময়টায়, যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছিল যে হাসপাতালে আমিনীকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল, সেই হাসপাতালের সামনে প্রচুর প্রতিবাদী মানুষের ভিড় ছিল, তারা ছিল নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল সেই সময়। তেহরানে সন্ধ্যার দিকে লোকজনকে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছিল সেই সময়।
একটি প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল লিখেছিল, নিরাপত্তা হেফাজতে ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনীর সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতন ও অন্যায় আচরণের যেসব অভিযোগ উঠেছে, অবশ্যই এর তদন্ত করতে হবে।

দিন বদলেছে কি বদলায়নি , সেটা সময় বলবে। তবে তাঁর মৃত্যুর ঠিক ১ বছর পর,  ১৬ সেপ্টেম্বর ,২০২৩, সেদেশের কেউ অন্তত বলতে পারছে, “আমি এখন যা পছন্দ করি তাই পরিধান করি।’ তাহলে কী সে দেশে নারীর ওপর নামিয়ে াণ সব রকম শাসনের অবসান হয়ে গেল? না সেটা নয়। তবে একটা নীতি পুলিশের অন্যায় নীতির ফলে ২২ বছরের একটি যুবতীর মৃত্যু অনেক মানুষের , মহিলার মনে অন্তত সেই সাহস জুগিয়ে দিয়ে গেল যার ফলে “না” শব্দটি মনের মধ্য থেকে, গলায় দোলা পাকিয়ে আটকে না থেকে মুখ ফুঁটে বেরিয়ে আস্তে পারছে।

সেই মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক দূত রবার্ট ম্যালি এক টুইটার পোস্টে বলেছিলেন, আমিনীর মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আমিনীর মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন ইরানি আইনজীবী সাইদ দেহঘান। তিনি বলেছিলেন, আমিনী মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন এবং তাঁর মাথার খুলির মূল অংশ ফেটে গিয়েছিল।

সেই ঘটনার আগের দিন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছিল, একটি বিশাল হলঘরের ভেতর অনেক মহিলার সঙ্গে আমিনীও আছেন। তার পর পোশাকের ব্যাপারে নির্দেশ দানকারী এক নারীর সঙ্গে তিনি তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন আমিনী। তেহরান পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা বলেছিল, তাদের কর্মকর্তা ও আমিনীর মধ্যে কোনো ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেনি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, পোশাকবিধি নিয়ে নির্দেশনা দিতে অন্য নারীদের পাশাপাশি আমিনীকেও সেদিন (মঙ্গলবার) থানায় নেওয়া হয়েছিল। তিনি হঠাৎ হলঘরে অজ্ঞান হয়ে যান।

ইরানে পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় আমিনীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল বিশ্বজুড়ে। কঠোর পোশাকবিধির আওতায় আটক হওয়ার পর মাহসা আমিনী নামের ২২ বছর বয়সী ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনাকে সন্দেহজনক বলেছিল মানবাধিকারকর্মীরা। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা।

তবে শাসন পিছু হটছে না, নারীমুক্তির আন্দোলনের একেবারে বিপরীত পথেই চলেছে । বর্তমানে পার্লামেন্টের সামনে একটি খসড়া আইন বলে তথাকথিত হিজাব এবং সতীত্ব বিল ,যেসব নারী অগ্রাহ্য করবে তাদের জন্য নতুন শাস্তি আরোপ করবে, যার মধ্যে রয়েছে ৫০০ এম থেকে ১বিএন রিয়াল  জরিমানা এবং ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। যারা এই সংগঠিত আইনি ব্যবস্থা মেনে চলবেন না বা অন্যকে আইন না মানতে উৎসাহিত করবেন তাদের জন্যও এই সাজার ব্যবস্থা রয়েছে। এই আইনকে জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা “লিঙ্গ বর্ণবৈষম্যের একটি রূপ” হিসাবে বর্ণনা করেছেন। নিউইয়র্ক-ভিত্তিক এনজিও দ্য সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরানের ডেপুটি ডিরেক্টর জেসমিন র‌্যামসে বলেছেন, সরকার “পায়ের তোলার মাটি খনন করেছে”।
কিন্তু ইরানের মহিলারা আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করে বলছেন, “আমি এখন যা পছন্দ করি তাই পরিধান করি।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!