Advertisement
  • Uncategorized দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুলাই ২৫, ২০২৪

সংসদে পাঁচ জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উদ্ভট দাবি পেশ বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তের। জঘন্য সাম্প্রদায়িক উস্কানি, বললেন সৌগত, বিকাশ

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সংসদে পাঁচ জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উদ্ভট দাবি পেশ বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তের। জঘন্য সাম্প্রদায়িক উস্কানি, বললেন সৌগত, বিকাশ

একদিকে রাজ্যভাগ, অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক উসকানির বক্তব্যকে ঘিরে ফের সরগরম হল সংসদ চত্বর । পৃথক কোচবিহার রাজ্য, উত্তরবঙ্গ জুড়ুক উত্তরপূর্বে এসব দাবি নিয়ে পদ্ম শিবিরের রাজ্য নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের প্রকাশ্যে মন্তব্য এবং দিল্লিতে দরবারও করেছেন । এবার ঝাড়খন্ডের সাংসদ সংসদে দাঁড়িয়ে ধর্মের ভিত্তিতে দেশের পাঁচ জেলাকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবিতে সরব হলেন ।

বৃহস্পতিবার, সংসদে নিজের বক্তৃতায় গোড্ডার সাংসদ দাবি করেন, বাংলা সংলগ্ন ঝাড়খন্ডে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এবং মালদা, মুর্শিদাবাদের একাংশ মানুষ নাকি জোড় করে, ওই অঞ্চলের আদিবাসীদের উৎখাত করছে । গ্রামের পর গ্রামে নাকি পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশেষ সম্প্রদায়ভূক্ত মানুষ গিয়ে তান্ডব চালাচ্ছেন । তাতে গ্রামের পর গ্রাম খালি হয়ে যাচ্ছে । সাংসদ নিশিকান্ত দুবের আরও দাবি তাদেরকে মদত জোগাচ্ছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পুলিশ । আর সবটা দেখেও উদাসীন ঝাড়খন্ডের পুলিশ । এবিষয়ে তাঁর দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হলে তিনি পদত্যাগ করবেন । এই পরিস্থিতিতে সেখানে একটি সর্বদলীয় সাংসদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর আবেদন জানান এদিন, সঙ্গে বলেন তাতে যেন তৃণমূল সাংসদদের উপস্থিতি সুনিশ্চিত করা হয় ।

পাশাপাশি দেশে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অবিলম্বে এনআরসি লাগু করা উচিত । এরপরেই তিনি বলেন, মালদা, মুর্শিদাবাদ, কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া, কাটিহার এবং পুরো সাঁওতাল পরগণাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা উচিত, নইলে হিন্দুদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে । তাঁর দাবি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশের ফলে এই পাঁচ জেলার জনবিন্যাস পাল্টে গিয়েছে । কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল না করা হলে হিন্দুদের অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি । তার দাবি, ধর্মান্তরণ এবং বিবাহের ক্ষেত্রে অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হোক ।

এর আগে বিজেপি শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও দাবি করেছিলেন, অসমে মুসলিম জনসংখ্যা ৪০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে, যা ১৯৫১ সালে ছিল ১২ শতাংশ। আমরা জেলার পর জেলা হারিয়েছি। আমার জন্য এটা জীবন-মরণের সওয়াল।” বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সম্প্রতি বলেন, “যারা অনুপ্রবেশ করে ঢুকছে, তারা হিন্দু,-মুসলিম, দুই পক্ষেরই জায়গা নিয়ে নিচ্ছে । হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্তব্যকে পূর্ণ সমর্থন করি ।” এর পরই গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে তাঁর কাছে উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি-র অনন্ত মহারাজ আবার পৃথক গ্রেটার কোচবিহার রাজ্য আগে গঠন করতে হবে বলে সুর চড়িয়েছেন ।

নিশিকান্ত দুবের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায় সংবাদ মাধ্যমে বলেন,বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্র হচ্ছে । বিজেপি বাংলায় কিছু করতে পারছে না, মমতা বন্দোপাধ্যায়কে হারাতে পারছেন, তাই জঘন্য কথা সব । নিশিকান্ত দুবে যা বলছেন, এর চেয়ে বড় সাম্প্রদায়িক কথা আমি শুনিনি । এমন চললে তো আর একটা দেশে পাকিস্তান হয়ে যাবে! বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত বলছেন উত্তরবঙ্গকে আলাদা করতে হবে, ইনি বলছেন, মুসলিম জেলাকে আলাদা করতে হবে, এগুলি বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত । আমরা এসব হতে দেব না ।

সিপিএম-এর রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “নির্বাচনের আগে থেকেই মোদি একটি কুপ্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন, হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটা প্রবণতা ছিল তাঁর। নির্বাচনে ধাক্কা খেয়ে খানিকটা পিছু হটলেও, একেবারেই হতদ্যোম হননি । তাই দলের লোকেদের দিয়ে এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবি তুলছেন । স্পিকারের উচিত ছিল না, ওঁকে সংসদে দাঁড়িয়ে বিভাজনমূলক মন্তব্য করতে দেওয়ার । দেশটাকে যদি ভাঙতে চান, সরাসরি বলুন । কেন মানুষের মধ্যে এসব বিভ্রান্তি তৈরি করছেন? এখনও ওদের মাথা থেকে হিন্দুরাষ্ট্রের ভূত যায়নি । ওই ভূত তাড়ানোর জন্য পথে নামতে হবে সকলকে ।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!