- এই মুহূর্তে বি। দে । শ
- ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
সামরিক আইন জারি করেও প্রবল বিক্ষোভে প্রত্যাহার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউনের

গত কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায়। মঙ্গলবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে দেশে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওল। সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। বুধবার তাঁকে সমস্ত ক্ষমতা ও দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশের আইনপ্রণেতারা।
মঙ্গলবার টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওল বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রের দেশ উত্তর কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়াপন্থী রাষ্ট্রবিরোধী বাহিনীগুলো থেকে দেশকে এবং অবাধ সাংবিধানিক শৃঙ্খলাকে সুরক্ষিত রাখতে সামরিক আইন জরুরি। উদারপন্থী দক্ষিণ কোরিয়াকে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন শক্তি নির্মূল করতে আমি জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করছি। কমিউনিস্ট বাহিনীর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
ইউন সুক–ইওলের এই ঘোষণার পরপরই রাজধানী সিওলে পার্লামেন্ট ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের বাইরে জড়ো হয়। প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। একসময় সেনানা পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। পার্লামেন্ট ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার নামতেও দেখা যায়। আকাশে সেনা হেলিকপ্টার টহল দিতে শুরু করে। পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। পার্লামেন্টে নিরাপত্তারক্ষীরা সেনাদের হটাতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র থেকে স্প্রে করেন। বাইরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতেই নিরাপত্তা বাহিনীকে এড়িয়ে ১৯০ জন আইনপ্রণেতা পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন। তাঁরা সামরিক আইন জারির বিরুদ্ধে ভোট দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে বেশির ভাগ সদস্য চাইলে সামরিক আইন তুলে নেওয়া যাবে। প্রস্তাব পাস হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন জারির ঘোষণা প্রত্যাহার করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ইউনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। পদত্যাগ না করলে প্রেসিডেন্টের সমস্ত ক্ষমতা ও দায়িত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়ে পার্লামেন্টে একটা বিল উত্থাপনের পরিকল্পনা করছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিল নিয়ে ভোটাভুটি হবে। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও দায়িত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য দুই–তৃতীয়াংশের বেশি আইনপ্রণেতার ভোট প্রয়োজন হবে।
❤ Support Us