Advertisement
  • Uncategorized দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মে ২০, ২০২৩

এসএসকেএম ইস্যুতে বিধায়ক পদ ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মদন মিত্র, বললেন কি দিয়েছে আমায় দল? আমি মুকুল, সোনালি, শুভেন্দু নই

এসএসকেএম এর অধিকর্তা ডাক্তার মণিময় ভট্টাচার্য মদন মিত্রর এই অভিযোগ খারিজ করে বলেছেন, "সকালে এই বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁকে জানিয়েছি, মহিলা মেডিক্যাল অফিসারকে রাতে হেনস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা নিরাপদ নয়।

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
এসএসকেএম ইস্যুতে বিধায়ক পদ ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মদন মিত্র, বললেন কি দিয়েছে আমায় দল? আমি মুকুল, সোনালি, শুভেন্দু নই

এসএসকেএমকাণ্ডে মদন মিত্র এবার দল ছেড়ে দেওয়া এবং এমএলএ পদে ইস্তফা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন। বললেন, “কি হবে? কি দিয়েছে দল? একটা এমএলএ পদ? ছেড়ে দেব। তবে এক মাসের মধ্যে ভোট করতে হবে।  টিউশান করে খাব। বই লিখব। মুখ্যমন্ত্রীকে কনগ্র্যাচুলেট করছি। আমি বই লিখব, বেস্ট সেলার হবে আমার বই।বই মেলায় যা থিম থাকুক। তবে পরিবারের উপর আক্রমণ আনবেন না। আমার কোনও কথা শোনা হয় না। মুখ্যমন্ত্রী দেখা হলে বলেন ভালো আছ? আমি বলি হ্যাঁ।”

এই ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। একজন স্বাস্থ্য কর্মীকে সেই রাতে তিনি চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে এসএসকেএম তাকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে। তারপর মদন মিত্র অগ্নিশর্মা হয়ে বলেন, “এসএসকেএম হাসপাতালে দালাল চক্র চলছে। এখানে ভর্তি করতে হলে টাকা দিতে হয়। একেক রকমের রোগীর ভর্তির জন্য একেক রকম ভর্তির রেট। এটা যদি সিপিএম আমল হত আমার এক মিনিট লাগত এই রোগীকে ভর্তি করতে। এই যে ট্রমা কেয়ার ইউনিট দেখছেন, এটা জনগণের ট্রমা কেয়ার। কারও বাবা, দাদার নয়। সে নো টু পিজি, আমি মদন মিত্র বলছি। পিজির সুপার ও ডিরেক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি বিধায়ক হিসাবে। এই রোগী মরে গেলে দশ কোটি টাকার মামলা করব, আমি আমার হাতের আংটি, ঘড়ি বিক্রি করে চিকিৎসা করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইন্টারভেন করতে অনুরোধ করছি।” এই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় এশিয়ার সেরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিজেপি বা সিপিএম করেনি, করেছেন তৃণমূলের স্থপতিদের একজন, একদা মমতা ঘনিষ্ঠ এবং কামারহাটির বর্তমান বিধায়ক মদন মিত্র। মদন মিত্র এসএসকেএম এর সুপার ও অধিকর্তার অপসারণও দাবি করলেন।

তবে এসএসকেএম এর অধিকর্তা ডাক্তার মণিময় ভট্টাচার্য মদন মিত্রর এই অভিযোগ খারিজ করে বলেছেন, “সকালে এই বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁকে জানিয়েছি, মহিলা মেডিক্যাল অফিসারকে রাতে হেনস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা নিরাপদ নয়। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ঢুকে পড়েছে লোকজন। ভেন্টিলেশন ফাঁকা ছিল না। আমরা কি করে ভর্তি নেব? মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানিয়েছি।পরিষেবার ক্ষেত্রে আমারা জিরো টলারেন্স দেখাই। এসব অন্যায় মানা হবে না বলে  মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমি জানাই যে গতকাল রাতে যে হুলিগানিজম হল তার বিরুদ্ধে যা যা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।”

এদিকে এই বিষয়ে মদন মিত্রকে শনিবার প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,  “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, যাকে নিয়ে গেছিলাম সে স্বাস্থ্যকর্মী। তাকে চিকিৎসকরা দেখেননি। যা বলছেন তা ঠিক নয়। কি দিয়েছে আমায় দল? একটা এমএলএ পদ? আমায় তাড়িয়ে দিলে দল ছেড়ে দেব। তবে এক মাসের মধ্যে ভোট করতে হবে। আমি শুভেন্দু, মুকুল, দীনেশ ত্রিবেদী, সোনালী গুহ নয়। কুণাল ঘোষের নামে অত মামলা ছিল, এখন সে দলের সেরা মুখপাত্র। আমি কি ডরাই কভু ভিখারি রাঘবে? এমএলএ পদ ছেড়ে দেব। এক মাসের মধ্যে ভোট করতে হবে। দরকারে টিউশন করে খাব। আমি বই লিখব। মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি আমার বই বেস্ট সেলার হবে। পেশেন্টকে না দেখে অধিকর্তা বলে দিলেন রেগীকে দেখেছেন? আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দিত করছি। যাকে নিয়ে গেছি সে স্বাস্থ কর্মী। তাই গেছি। অন্যায় থাকলে বলুক। আমায় গ্রেফতার করবে? আমি নিজেই যাব। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, আপনার নামে অধিকর্তা বেড বুক করে রাখেন। আপনি কেউ নয়। কেউ কিছু বলছেন না মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ওই পদে বসিয়ে রেখেছেন বলে।এসএসকেএম এর ট্রমা কেয়ার ইউনিট জনগনের। ওখানে অধিকর্তার কোনও ভূমিকা নেই। আর আমায় ওই চাকর-বাকর বলছেন আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে? আমি এমএলএ। আমি ওকে ইমপিচ করব। বিধানসভায় নিয়ে যাব টেনে। আমি আজ ভয় পাচ্ছি।কারণ ও বলেছে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে তাই। আমায় যখন বলতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে ডেলোতে মমতা, সুদীপ্ত সেন, গৌতম কুণ্ডুর কি বৈঠক হয়েছে, আমি কিছু বলি নি। আজ দল ও মুখ্যমন্ত্রীর আমার পাশে থাকার দরকার নেই। আমি বুঝে নেব।”

দুর্ঘটনায় আহত শুভদীপ পাল নামের এক যুবককে শুক্রবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য নিয়ে আসেন মদন মিত্র। অভিযোগ, হাসপাতাল ওই আহত রোগীকে ভর্তি নিতে চাননি। তারপর ওই রাতেই সংবাদ মাধ্যমে এই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মদন। তিনি দাবি করেন “এসএসকেএম হাসপাতালে দালাল রাজ চলছে। টাকা দিলে হাসপাতালে ভর্তি করা যায়।”
কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রর এই অভিযোগের উত্তরে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ভেন্টিলেটরের রোগীর ক্ষেত্রে আগে নাম  লিখিয়ে রাখতে হয়। এরপর ভেন্টিলেটর খালি হলে সেখানে রোগী ভর্তি করা হয়। বিষয়টি মদন মিত্রকে বলাও হয়েছিল হাসপাতালের তরফে। মদন মিত্র আমাকে রাত ১২টা ১৫-য় ফোন করেছিলেন, তার আগে করেননি। আমি খবর নিয়ে পুরো বিষয়টি জানি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে। আগে থেকে না জানিয়ে যদি কোনও ভেন্টিলেশন রোগীকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে আসে সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র মদন মিত্র এনেছেন বলে আলাদা করে কোনও সুবিধা তিনি পেতে পারেন না।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন সমস্ত রোগীর ক্ষেত্রে একই নিয়ম। মদন মিত্রের রোগী বলে অন্য কাউকে ভেন্টিলেশন থেকে নামিয়ে তাঁকে সেই জায়গায় দেওয়া সম্ভব নয়। মদন মিত্র কেন এসব বলছেন তা নিয়েও চন্দ্রিমা ভাট্টাচার্য বিস্ময় প্রকাশ করেছে।
তবে সবার সব বক্তব্যকে ছাপিয়ে গেল মদন মিত্রর এসএসকেএম ইস্যুতে দল ছাড়ার হুঙ্কারে।

  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!