Advertisement
  • এই মুহূর্তে
  • এপ্রিল ৪, ২০২২

খয়রাতিতে রাশ না টানলে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে, মোদিকে রিপোর্ট দিয়ে জালালেন কেন্দ্রীয় সচিব

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
খয়রাতিতে রাশ না টানলে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে, মোদিকে রিপোর্ট দিয়ে জালালেন কেন্দ্রীয় সচিব

‘খয়রাতির প্রকল্পে হাজার-হাজার কোটি টাকা ঢেলে দেওয়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুযোগ কমছে।’অতিরিক্ত খয়রাতি বন্ধ নাহলে ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কা বা গ্রিসের মতো অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হতে পারে ভারতের বহু রাজ্য। তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, দিল্লির মতো রাজ্যও রয়েছে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রের কয়েকজন উচ্চপদস্থ সচিব এমনই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার মোদীর সঙ্গে চার ঘণ্টার বৈঠকে কয়েকজন সচিব জানিয়েছেন যে বিভিন্ন রাজ্যে যেভাবে খয়রাতি করা হচ্ছে, ভোটের আগে বিনামূল্যে একাধিক প্রকল্পের সূচনা করা হচ্ছে। এতে ধীরে ধীরে কোমায় চলে যাচ্ছে রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা। এমন সব প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে এবং পরবর্তীতে চালু করা হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক দিক থেকে একেবারেই কার্যকরী নয়। তার ফলে রাজ্যের কোষাগারের উপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে। ঋণের বোঝায় ডুবে যাচ্ছে সেই রাজ্যগুলি। অবিলম্বে সেই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে বলে ওই উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, দিল্লি, তেলাঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্য সরকারের তরফে যে প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে, তা অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপজ্জনক বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, খয়রাতির প্রকল্পে হাজার-হাজার কোটি টাকা ঢেলে দেওয়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুযোগ কমছে। যা যে কোনও রাজ্যের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকী কয়েকটি রাজ্য যদি ভারতের অন্তর্গত না হত, তাহলে সেগুলির অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠত বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

এমনিতে ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলই বহু প্রকল্প ঘোষণা করে থাকে। গত বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ইস্তাহারে তেমন কয়েকটি প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল। বিভিন্ন রাজ্যে বিনামূল্য বিদ্যুতের মতো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধারও ঘোষণা করা হয়ে থাকে। তাতে অবশ্য পিছিয়ে থাকে না বিজেপিও। চলতি বছর উত্তরপ্রদেশ এবং গোয়ার ভোটের আগে খয়রাতি প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। যদিও বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির দাবি, কেন্দ্র প্রাপ্য টাকা দেয় না বলেই কোষাগারে চাপ বাড়তে থাকে। সেই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন শ্রীলঙ্কার মানুষ। আকাল দেখা দিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর। দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীয় দাম লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এতটা ভয়ঙ্কর অবস্থার মুখে পড়তে হয়নি ২.২ কোটি জনসংখ্যা বিশিষ্ট দেশকে।বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিদেশি মুদ্রার ঘাটতি থেকেই শ্রীলঙ্কায় সমস্যার সূত্রপাত। গত দেড় মাস ধরে শ্রীলঙ্কার সরকারের পেট্রল-ডিজেল-সহ আমদানি বন্ধ এক রকম। ঋণে ডুবে থাকা শ্রীলঙ্কার এই অবস্থা একদিনে হয়নি। পরপর সরকার বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেখানে দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকেনি। চিনের মতো দেশের সঙ্গে বিদেশনীতি কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে। এছাড়া কোভিড পরিস্থিতির জন্য গত দুই বছর শ্রীলঙ্কা সরকার ১৪ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে।এহেন পরিস্থিতিতে প্রবল আর্থিক দুরাবস্থায় অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ ।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!