Advertisement
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • জানুয়ারি ২২, ২০২২

কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিক প্রয়াত। কোভিডবিধি মেনেই শেষকৃত্য।

কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিক প্রয়াত। কোভিডবিধি মেনেই শেষকৃত্য।

শনিবার সকালে মারা গেলেন আসিয়ান জয়ী ইস্টবেঙ্গল কোচ সুভাষ ভৌমিক। অসুস্থ ছিলেন। কিডনির চিকিৎসা সাড়ে তিন মাস ধরে তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। শরীরে বাসা বেঁধেছিল করোনা ভাইরাস। সম্প্রতি বুকে সংক্রমণের জন্য ভর্তি ছিলেন একবালপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে। তাঁর চিকিৎসা যাতে ভালো ভাবে হয়, তার জন্য পাশে দাঁড়িয়েছিল বাংলার ক্রীড়ামহল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শুক্রবার রাত থেকে শারিরীক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। আজ সকালে থেমে গেলে লড়াকু ভোম্বলদার লড়াই ।

ভারতের জাতীয় দলের হয়ে ৬৯ টি ম্যাচ খেলেছেন সুভাষ ভৌমিক৷ দুর্দান্ত খেলোয়াড়ের পাশাপাশি কোচ হিসেবেও ভারতীয় ফুটবলে তাঁর অবদান বিরাট৷ক্লাব কেরিয়ারে মোট ২৭টি ট্রফি জিতেছিলেন সুভাষ। মোহনবাগানকে দিয়েছিলেন ১৬টি আর ইস্টবেঙ্গলে ১১টি ট্রফি এনে দিয়েছিলেন। ৷ কলকাতা লিগ থেকে শুরু করে আইএফএ শিল্ড- সব টু্র্নামেন্টই জিতেছেন সুভাষ ভৌমিক ৷ বাংলা ও দেশের হয়েও ট্রফি জিতেছেন সুভাষ। বাংলার সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন এই তেজিয়ান ফুটবলার।

ফুটবল থেকে অবসর নিলেও মাঠের থেকে দূরে থাকতে পারেননি। শুরু করেন কোচিং। ১৯৮৬ সালে জর্জ টেলিগ্রাফের কোচের দায়িত্ব কাঁধে নিলেন সুভাষ । এরপর ১৯৯১ সালে মোহনবাগানের কোচ হলেন। তবে সুভাষের কোচিং জীবনের সেরা সময় কেটেছে ইস্টবেঙ্গলে। লাল-হলুদের আসিয়ান কাপ জয়ের কীর্তি কোনওদিনই ভোলার নয়৷

তাঁকে হারিয়ে ময়দানে শোকের ছায়া নেমেছে।প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকার বলেছেন, শুধু কথায় নয়, কাজের মধ্যে দিয়ে নিজেকে মেলে ধরায় বিশ্বাসী ছিলেন সুভাষ ভৌমিক। অসাধারণ ফুটবলার ছিলেন। সুব্রত ভট্টাচার্য তো বললেন, ‘সুভাষবাবু না থাকলে প্রতিষ্ঠা পেতাম না। ময়দানের অত্যতম স্তম্ভকে আজ হারালাম।’ সুভাষের সতীর্থ শ্যাম থাপা — কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের জন্য লড়াই করতেন। শুধু ভাল ফুটবলার নয়, ভাল মানুষও ছিলেন সুভাষ।

তাঁর তত্ত্বাবধানে খেলা ফুটবলার প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বললেন, ‘আমার খেলা সুভাষ ভৌমিকের দারুণ পছন্দ হয়েছিল। ভালবেসে আমায় একটা সাদা মোজা উপহার দিয়েছিলেন। ক্লাবকে বলেছিলেন, আমার দিকে যেন বেশি নজর রাখা হয়। ‘ স্ট্রাইকার দীপেন্দু বিশ্বাস শোকস্তব্ধ । বললেন, ‘ইস্টবেঙ্গলে থাকাকালীন দেখেছি, ফুটবলারদের খারাপ সময়ে আত্মবিশ্বাস জোগাতেন। যে কোনও সময় যে কোনও প্রয়োজনে খেলোয়াড়দের পাশে থাকতেন।’ ময়দানে আজ তৈরি হল বিরাট শূন্যতা।

কোভিডবিধি মেনেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কিংবদন্তি ফুটবলারের। একবালপুরের বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে তাঁর মরদেহ সোজা নিয়ে আসা হবে নিমতলা মহাশ্মশানে। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর দেহ আনা হবে না ময়দানে । ফুল মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন না তাঁর অনুরাগীরা। এ যেন আরও বেদনাদায়ক । ফুটবলপ্রেমী, সতীর্থ, দেশবাসীর স্মরণেই রয়ে যাবেন সুভাষ ভৌমিক ।সুভাষ ভৌমিকের, শোকসভার আয়োজন করবে ইস্ট-মোহন দুই ক্লাবই।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!