Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • এপ্রিল ২৪, ২০২৩

সুদানে যুদ্ধ বিরতি ধুলিস্মাৎ। দুই বাহিনীর লড়াই অব্যাহত।খারতুমে লুটের শাসন, পুড়ছে ঘরবাড়ি। আটক ভারতীয়রা ফিরছেন দেশে

গৃহযুদ্ধের নেপথ্যে কে? ইয়েমেন শান্ত হতেই কেন তেলসমৃদ্ধ সুদানে রক্তক্ষয়ের আরম্ভ

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সুদানে যুদ্ধ বিরতি ধুলিস্মাৎ। দুই বাহিনীর লড়াই অব্যাহত।খারতুমে লুটের শাসন, পুড়ছে ঘরবাড়ি। আটক ভারতীয়রা ফিরছেন দেশে

গৃহযুদ্ধে সুদান বিধ্বস্ত। আরো স্পষ্ট করে বলতে হলে, বলা উচিত, দুই সেনাধক্ষ্যের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে মিশর ও লিবিয়া ঘেষাঁ পূর্ব আফ্রিকার দেশটি ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ পালাতে ব্যস্ত। এপর্যন্ত যুদ্ধের শিকার হয়েছেন চারশতাধিক। আহতের সংখ্যা অজ্ঞাত। একবছরে রুশ ইউক্রেন যুদ্ধে যে বিপুল মানব সম্পদের অস্তিত্ব বিলোপ হয়েছে, কয়েক সপ্তাহে সুদানের ক্ষয়ক্ষতি সে তুলনায় অনেক বেশি। জনগণের দুর্দশার শেষ নেই। খারতুম সহ বিভিন্ন শহরে মানুষ আতঙ্কে গৃহবন্দী। খাবার নেই। পানীয় জল নেই। ১৫ এপ্রিল দুই সেনা প্রধানের অনুগত সেনা আর আধাসেনা (আরএসএফ) ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত সেনা, আধাসেনা ও নিরীহের মৃতের সংখ্যা অন্তত ৪২০। ইদের আগে যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুপক্ষ। পরে কেউ তা গ্রাহ্য করেনি। একদিনের জন্যও সশস্ত্র যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। প্রতিবেশী ও ইউরোপ আমেরিকা দূতাবাস থেকে, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেদের লোক সরাতে ব্যস্ত। অনেককেই সরিয়ে নিয়ে এসেছে। যেসব ভারতীয় আটকা পড়েছিলেন, তাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর টুইটে জানিয়েছেন, ভারতীয় বিমান এবং জাহাজ ইতিমধ্যেই আটক ভারতীয়দের উদ্ধারে রওনা দিয়েছে। সুদানে আটক ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার এই মিশনের না্ম দেওয়া হয়েছে অপারেশন কাবেরি। ইতিমধ্যেই ৫০০ ভারতীয় পোর্ট সুদানে জড়ো হয়েছেন।তাদের জলপথে ফিরিয়ে আনা হবে।

 

বহু দেশে তাঁদের নাগরিকদের উদ্ধার করতে খারতুমে বিমান পাঠিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, নির্বিঘ্নে বিদেশি নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফেরানো সম্ভব হয়ে উঠছে। মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে ট্যাঙ্ক। গৃহে গৃহে আগুন জ্বলছে। লুটেরারা রাস্তায় নেমে দোকানপাঠ ফাঁকা করে দিচ্ছে।

আমেরিকা এমএই৪৭ চিনুক কপ্টার পাঠিয়ে ১০০ জনকে উদ্ধার করেছে।ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক বলেছেন, তাঁদের সেনাবাহিনী ব্রিটিশ কূটনীতিক ও তাঁদের পরিবারকে উদ্ধার করে দেশে নিয়ে এসেছে। তুস্ক, মিশর, সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমির শাহি, জাপান তাদের কূটনীতিক ও সাধারণ নাগরিকদের আশ্বাস দিয়েছে, তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।মিশরের দশ হাদার বাসিন্দা সুদানে কর্মরত। জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ড, গ্রিস তাদের নাগরিকদের উদ্ধার শুরু করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, উদ্ধারকারী একটি বিমান বিভিন্ন দেশের ১০০ নাগরিককে নিয়ে জিবুতিতে অবতরণ করেছে।আরও একটি বিমান রবিবার সুদানের উদ্দেশে রওনা দেয়। লোহিত সাগরের সুদানপোর্টে হাজির হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অসংখ্য উদ্ধার যান। রবিবার সৌদি আরব বলেছে, এপর্যন্ত ১৫৭জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বলাবাহুল্য, চিন ছাড়া এশিয়া ইউরোপে এমন কোনও দেশ নেই, যাঁদের নাগরিকদের গৃহযুদ্ধের দুর্বিসহ আবহে আটকা পড়েননি।হাজার হাজার সুদানি নাগরিক দিশেহারা। কোথায় পালাবেন, ঠিকানা অজানা।গৃহহীন, স্বজনহীনদের আরও এক প্রবল স্রোত ঝাঁপিয়ে পড়বে সমুদ্রে। ঘোর সঙ্কট।সুদান মধ্য আয়ের দেশ। এতদিন রাজনৈতিক স্থিতি ছিল। সেনা প্ৰধান আবদুল ফাতহা আল বুরহান এবং আধাসেনার জেনারেল হামদান ডাগলো এক হয়ে ক্ষমতাচু্যত করেছিলেন দীর্ঘমেয়াদি শাসক উমর আল বিরকে। সুষ্ঠ নির্বাচন ও নতুন সরকার গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কারণ জানা যায়নি, কেন পুরনো দুই স্বাভাবিক মিত্রের বাহিনী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল।যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির পেছনে কে ? চিন না আমেরিকা ? চিন বিশ্বকূটনীতিতে অবতীর্ণ। ইয়ামেন নিয়ে চিনের মধ্যস্থতা সফল হতেই তেলসমূদ্ধ সুদানে্ খুলে গেল গৃহযুদ্ধের রক্তাক্ত মুখ। সন্নিকটে নীলনদ আর লোহিতসাগর। বহুদেশীয় বাণিজ্য তার স্থল ও জলপথের ওপর নির্ভরশীল। বাণিজ্যপথের কিনারে গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে ফায়দা তুলতে চায় কোন দুর্বোধ্য শক্তিধর ?


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!