Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪

অসাংবিধানিক নির্বাচনী বন্ড স্কিম বাতিল, রায় শীর্ষ আদালতের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
অসাংবিধানিক নির্বাচনী বন্ড স্কিম বাতিল, রায় শীর্ষ আদালতের

নির্বাচনী বন্ড আইনসিদ্ধ নয়, অভিমত দেশের শীর্ষ আদালতের । বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট, নির্বাচনী বন্ড স্কিমের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশনের রায়ে প্রকল্পটি বাতিল বলে ঘোষণা করে । দেশের শীর্ষ আদালতে তরফে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৯(১)(এ) অনুচ্ছেদে নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার লঙ্ঘন করছে এই প্রকল্প ।

ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতূত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ, নির্বাচনী বন্ডের দাতাদের গোপনীয়তা বজায় রাখার বিষয়টির বৈধতার পিটিশনে গত বছরের ২ নভেম্বর রায় সংরক্ষণ করে ।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে, রাজনৈতিক তহবিলের জন্য নির্বাচনী বন্ড চালু করে কেন্দ্র । এর পক্ষে যুক্তি,নগদ অনুদানের বদলে এই বন্ড রাজনৈতিক তহবিলের স্বচ্ছতা বাড়াবে । যদিও সূচনা থেকেই এই বন্ডকে ঘিরে প্রশ্ন ছিল । কংগ্রেস নেতা জয়া ঠাকুর, সিপিআই( মার্কসিস্ট) সহ অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, তহবিলে দাতাদের গোপনীয়তাকে ঘিরে আপত্তি জানায় । তারা বলেন এখানে নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে । কেন্দ্রের তরফে পাল্টা দাবি করা হয় এই বন্ডগুলির মাধ্যমে শুধুমাত্র যোগ্য রাজনৈতিক দলগুলিই অনুমোদিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ টাকা পাচ্ছে । যা কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইকে সুনিশ্তিত করে ।

এই স্কিমের মাধ্যমে ভারতের যেকোনও নাগরিক বা দেশের প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী বন্ড কিনতে পারতেন। বন্ডগুলির মূল্য ১০০০ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত । একমাত্র স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমেই সুদমুক্ত বন্ড কেনা যেত ।

বিজেপি সরকারের লাঘু করা এই স্কিমের বিরোধীতা করে, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীরা যুক্তি দেন যে নির্বাচনী বন্ড নাগরিকদের রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলের উৎস সম্পর্কে অবহিত হাওয়ার অধিকারকে নষ্ট করে । যা ভারতীয় সংবিধান স্বীকূত একটি মৌলিক অধিকার ।

আজ এই মামলার শুনানিতে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক এবং স্বেচ্ছাচারী প্রকল্প। এটি রাজনৈতিক দল এবং দাতাদের মধ্যে একটি গোপন সমঝোতা , যা কখনোই কালো টাকা রোধ করার একমাত্র উপায় নয় ।

গত নভেম্বরে এই মামলা শুরু হওয়ার আগেই , নির্বাচনী বন্ডের স্বপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমানি বলেন, ইলেক্টোরাল বন্ড স্কিম নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও ক্লিন মানির প্রতীক। এপ্রসঙ্গে তথ্য জানার অধিকার নিয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল ‘সবকিছু’ জানার একটি সীমাহীন অধিকার হতে পারে না কোনো আইন, তারও সীমাবদ্ধতা আছে ।

বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সময়  পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই বন্ডের সীমাবদ্ধতার দিকটিও নির্দেশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দল চাইলে, কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমে, ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিরোধীদের তহবিলে কে বা কোন প্রতিষ্ঠান টাকা দিচ্ছে জানতে পারে, কিন্তু বিরোধীরা শুধুমাত্র নিজেদের তহবিলের দাতাদের সম্পর্কেই জানতে পারছে । পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষরা দাতাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য জানতে পারছে না, যা শুধু তথ্য জানার অধিকার আইনেরই পরিপন্থি নয়, প্রকল্পের স্বচ্ছতা ঘিরেও প্রশ্ন উঠছে।

এদিনের শুনাতিতে শীর্ষ আদালতের ওই বেঞ্চ দেশের নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের তহবিলে এই বন্ডের মাধ্যমে টাকা পেয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য অবিলম্বে মুখবন্ধ খামে আদালতে পেশ করতে হবে।

শীর্ষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন কপিল সিব্বাল সহ একাধিক কংগ্রেস নেতা । কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত মানুষের স্বাধীন ভোটাধিকারকে সুনিশ্চিত করে। এপ্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি জয়রাম রমেশ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, দেশের শীর্ষ আদালত মোদি সরকারে ইলেক্টরাল বন্ডকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনী বন্ড ভারতীয় সংবিধান স্বীকৃত এবং সংসদে পাশ হওয়া তথ্যের অধিকার আইনকে লঙ্ঘন করছিল।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!