Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩

গ্রুপ-ডি চাকরি প্রার্থীদের ক্যামাক স্ট্রিটের মিছিলে শুভেন্দু-কৌস্তুভ, পতাকা ছেড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযানের ডাক শুভেন্দুর

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
গ্রুপ-ডি চাকরি প্রার্থীদের ক্যামাক স্ট্রিটের মিছিলে শুভেন্দু-কৌস্তুভ,  পতাকা ছেড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযানের ডাক শুভেন্দুর

রাজনৈতিক পতাকা সরিয়ে রেখে চাকরি ও দাবি আদায়ের আন্দোলনে নবান্ন অভিযানের ডাক দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী। বুধবার গ্রুপ-ডি চাকরি প্রার্থীদের মিছিলে একসঙ্গে পা মেলালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী। রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস ও বিজেপি ভিন্ন পথের যাত্রী। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই দুই পরস্পর বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকে এক পথে হাঁটিয়ে ছাড়লেন চাকরির দাবিতে। শুভেন্দু অধিকারী ও কৌস্তুভ বাগচী বলেন, এই আন্দোলন মানুষের দাবি আদায়ের অরাজনৈতিক আন্দোলন। এখানে কোনও পতাকা নেই। বিজেপি বা কংগ্রেসের পতাকা থাকলে আমরা আসতাম না। শুভেন্দু বলেন, “সমস্ত পতাকা সরিয়ে রেখে আসুন নবান্ন অভিযান করি। দেখি সরকারের পুলিশের কত গুলি, লাঠি আছে।” কৌস্তুভ বাগচীও বলেন, “লক্ষাধিক মানুষের মিছিল নিয়ে রাজনৈতিক ছুৎমার্গ ছেড়ে আমি রাস্তায় নামতে রাজি নবান্ন অভিযানে।”

শুভেন্দু অধিকারী আগেই বলেছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকারকে রাজ্যের শাসন ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে লড়াইয়ে তাঁর আপত্তি নেই। এর আগেও ডিএ -র দাবিতে আন্দোলনরত রাজ্য সরকারি কর্মীদের হাজরার সভায় শুভেন্দু অধিকারী গিয়েছিলেন। সেবারও হাজরার ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনকারীদের সভায় কৌস্তভ বাগচী ছিলেন, তবে শুভেন্দু অধিকারী মঞ্চায় উঠতেই কৌস্তভ নেমে আসেন। তবে আবার শুভেন্দুর পাশে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি চাকরি প্রার্থীদের দাবি আদায়ের মিছিলে ক্যামাক স্ট্রিট-এর রাস্তায় এক সঙ্গে হাঁটলেন শুভেন্দু এবং কৌস্তভ।
ক্যামাক স্ট্রিটে মিছিলের জন্য শুভেন্দু অধিকারীর আগে পৌঁছে কৌস্তভ বললেন, “বৃহত্তর স্বার্থে আমার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে হাটতে কোনও অসুবিধা নেই। এই মিছিলে কী কংগ্রেসের বা বিজেপির পতাকা আছে? তাই দলের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমি চাকরি বঞ্চিতদের চাকরির দাবিতে ,চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে আমি একজন ব্যক্তি হিসেবে, আইনজ্ঞ হিসেবে পথে হাঁটছি। আমার ব্যক্তি অস্তিত্ব আছে ,সেটা দল নিয়ন্ত্রিত নয়। তাই আমার মনে হয় এই মিছিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের কোনও নেতা থাকলেও আমি এই মিছিলে হাঁটতাম, আমার কোনও অসুবিধা হতো না। আমার মনে হয় এই মিছিলে হাঁটার জন্য কংগ্রেস দল আমার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে না।”
এই মিছিল যাতে ক্যামাক স্ট্রিট দিয়ে যেতে না পারে তার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে আবেদন জানানো হলেও আদালত রাজ্যের সেই দাবি খারিজ করে ক্যামাক স্ট্রিট থেকে রবীন্দ্র সদন হয়ে মিছিল যাওয়ার অনুমতি দেয়। আদালত বলে, এটা মিছিল, সভা নয়। রাজ্য এই মিছিল ক্যামাক স্ট্রিট দিয়ে যেতে না দিলে প্রশ্ন উঠতে পারে ২১ জুলাই-এর তৃণমূলের শহীদ দিবসের সভা নিয়ে। সেই সভা রাস্তা আটকে হয়, এই মিছিল রাস্তা দিয়ে চলে যাবে, রাস্তা আটকাবে না। এর পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসার পাশ দিয়ে গ্রুপ- ডি চাকরি প্রার্থীদের মিছিলে হাঁটলেন শুভেন্দু-কৌস্তুভ।
কৌস্তুভ আরও জানিয়েছেন, “এই মিছিলে যদি বিজেপি-র পতাকা থাকতো তাহলে দল আমায় কিছু বলতে পারত। মিছিলে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা নেই। এটা সম্পূর্ণ চাকরির দাবিতে হচ্ছে। আগে মানুষ ল্যান্ডলাইন টেলিফোন ব্যবহার কোর্ট। এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। অপেক্ষা করুন, আরও কিছু হয়তো দেখা যেতে পারে।”
মিছিলে চাকরি প্রার্থীদের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলে হাঁটলেন শুভেন্দু-কৌস্তুভ । ক্যামাক স্ট্রিট থেকে মিছিলে হেঁটে নিজাম প্যালেসের সামনে এসে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবার পুলিশকে বাদ দিয়ে শূন্য। সব ভোটে পুলিশদের দিয়ে ক্ষমতা দখল করছে। এই রাস্তা করোও পৈতৃক জমিদারি নয়। আদালতের নির্দেশে গ্রুপ-ডি চাকরি প্রার্থী আজ রাস্তায় নেমেছেন। আগামী দিনে এদের সঙ্গে আমি সভা করব। আজ ২০০০ পুলিশ, ২০ জন আইপিএসকে দিয়ে কয়লা ভাইপোকে পাহারা দিতে হচ্ছে। আমি যদি এদের জায়গায় থাকতাম তাহলে চাকরি প্রার্থীদের স্মারকলিপি নিয়ে বলতাম আমাদের সরকার দেউলিয়া, তাই চাকরি দিতে পারছি না। কালীঘাটে, ক্যামাক স্ট্রিটে মিছিল করতে দেবে না, মনে হয় রাস্তাটা ওদের বাবার। আমি ৩ অক্টোবর এদের সঙ্গে আইনি লড়াই করবো এবং রাজপথের আন্দোলনে থাকবো। এই আন্দোলন অরাজনৈতিক। আমি বিরোধী দলনেতা হিসেবে এসেছি। আমাদ মতাদর্শের বাইরে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চাকরি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কৌস্তুভ লড়ছেন। আমি মনে করি এটা ন্যায্য দাবি, তাই এই মিছিলে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রী স্পেন যাচ্ছেন আর চাকরি, ডিএ -র দাবিতে ১০টি সংগঠন রাস্তায় রয়েছে। রাজ্যের শাসক দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সব রকমের আন্দোলনে আমি থাকব। পার্থ চ্যাটার্জীর বাড়িতে চাকরি চুরির সিডি পাওয়া গেছে। চাকরি চুরির টাকা গেছে তৃণমূলের, ভাইপোর অফিস। আমি বলছি, নবান্ন অভিযানের আন্দোলন করুন পতাকা ছেড়ে। আমি থাকবো। দেখি পুলিশের কত গুলি, লাঠি আছে। জোট বাঁধুন।”


  • Tags:
❤ Support Us
Advertisement
error: Content is protected !!