Advertisement
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • জানুয়ারি ১০, ২০২৩

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে দেশের উচ্চশিক্ষা, প্রতিবাদে সরব দেশের একাধিক শিক্ষক সংগঠন

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে দেশের উচ্চশিক্ষা, প্রতিবাদে সরব দেশের একাধিক শিক্ষক সংগঠন

বিদেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার বিরোধিতায় নামল দেশের একাধিক শিক্ষক ও অধ্যাপকদের সংগঠন। দেশের সার্বভৌমিকতার ওপর আঘাত হানতে চলেছে কেন্দ্রের বর্তমান সরকার বলে অভিযোগ জানালেন তাঁরা।

সম্প্রতি স্ট্যানফোর্ড, ইয়েল সহ একাধিক বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতে ক্যাম্পাস খুলতে অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি এ সংক্রান্ত খসড়া বিধি নিয়মও বানিয়ে ফেলেছেন। যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে দেশের শিক্ষক ও অধ্যাপক মহলে। অধিকাংশ শিক্ষক সংগঠনে এ ভাবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা করেছেন। আম আদমি পার্টির শিক্ষক সংগঠন অ্যাকাডেমিক ফর অ্যাকশন আণ্ড ডেভেলপমেণ্ট দিল্লি টিচার্স অ্যাসোসিয়শন বা আডটা ইউজিসি-এর এই নতুন খসড়া বিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেছে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেশের ক্যাম্পাস খুলতে দিলে দেশের ছাতার মত গড়ে ওঠা কোচিং ইনস্টিউটগুলো লাভবান হতে পারে, শিক্ষার্থীরা নয়। ভারতের মত দেশে যেখানে আর্থিক বৈষম্য চূড়ান্ত, উচ্চশিক্ষা যেখানে মহার্ঘ্য সেখানে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে মুষ্টিমেয় কিছু পরিবারের পড়ুয়ারা। প্রান্তিক অংশের শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চশিক্ষা অধরাই থেকে যাবে বলে মত সংগঠনের কর্তাব্যক্তিদের।

অ্যাকাডেমিক ফর অ্যাকশন আণ্ড ডেভেলপমেণ্ট দিল্লি টিচার্স অ্যাসোসিয়শন বা আডটা তাদের এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই সব বিদেশি ক্যাম্পাসগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য যদি এই প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে এই সব প্রতিষ্ঠানে পড়া ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত সম্পর্কে কি ভাবছে তা স্পষ্ট করে জানাক ইউজিসি। তারা আরও জানান যে খসড়া বিধিতে সমাজের অবহেলিত দলিত অংশের মানুষের শিক্ষার  জন্য সংরক্ষণের  কথা কোনোভাবেই উল্লেখ করা হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে তাঁর কোনো সুষ্পষ্ট রূপরেখা এখনও দেয়নি ইউজিসি। ফলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল যে আগামী দিনে কিরূপ হতে চলেছে তা নিয়েই চিন্তিত তারা।

উদ্বেগ জানিয়েছে ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স ফেডারেশনও। তাঁদেরও মত এর ফলে দেশের শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের পথই প্রশস্ত হবে।সংগঠনের নেতারা জানাচ্ছেন যে এই সব বিদেশি প্রতিষ্ঠানে ন্যায্য মূল্যে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের সরকারি দাবি মূর্খের স্বপ্ন ব্যতীত আর কিছু নয়। এই অসব বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভারতের জনসংখ্যার এক বড় অংশই এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর ব্যয়ভার বহন করতে পারবেন না। কারণ বেতন কাঠামো, ভর্তির ফি নির্ধারণের ব্যাপারে এদের সম্পূর্ণ স্বাধিকার দিয়েছে কেন্দ্র।

দেশের শিক্ষা আজ পণ্যে পরিণত হতে চলেছে। যার হাতে অর্থ সেই উচ্চ শিক্ষার ব্যয় বহন করতে পারবে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়কে এখানে পূর্ণ স্বাতন্ত্র্যসহ শিক্ষা প্রসারের অধিকার দিলে সমাজের প্রান্তিক ও আর্থ সামাজিক ভাবে অনগ্রসর মানুষরা শিক্ষার সু্যোগ থেকে বঞ্চিত হবে।  এমন আশঙ্কা দেশের শিক্ষক ও অধ্যাপক সমাজের একাংশের । আজ তাই প্রতিবাদে সামিল তাঁরা। যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ছাত্র ও  অভিভাবকদের।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!