- দে । শ
- জুন ৩, ২০২৩
“করমণ্ডল দুর্ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে”, বালেশ্বরে পৌঁছে ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার বালেশ্বরে পৌঁছে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘‘যাঁরা জড়িত, তাঁদের কাউকে ছাড়া হবে না। কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’’
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওড়িশায় বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। এই ৩ ট্রেনের দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিনটি ট্রেনের চালকেরই।
ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় এখন প্রশ্নের মুখে নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিরোধীরা রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে। রেলের প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে সিগনালিং ব্যবস্থার ত্রুটির জন্যই বিপুল পরিমাণ মানুষের করমণ্ডল যাত্রা শেষ যাত্রায় পরিণত হল। এই আবহেই শনিবার বালাসোরে বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী শনিবার বালেশ্বরে দাঁড়িয়ে আশ্বাস দিয়ে বলেন, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় কেউ যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে দোষীদের কোনওরকম ভাবে ক্ষমা করা হবে না। উচ্চপর্যায়ের তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত এবং মৃতদের পরিবারের পাশে তাঁর সরকার আছে। ওই পরিবারগুলিকে সবরকম সাহায্য করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
শনিবার বালাসোরের হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে কথাবার্তার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক রাজ্যের নাগরিক এই দুর্ঘটনায় কিছু না কিছু খুইয়েছেন। মৃত্যুর ঘটনায় মন বিচলিত হয়ে উঠেছে।”
শুক্রবার রাতেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার সকালে এই ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তার পরেই বালেশ্বরের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার বিকেল পৌনে ৪টা নাগাদ বালেশ্বরে পৌঁছয় মোদির কপ্টার। এর পর রেলমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী । সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রের আরও এক মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। খতিয়ে দেখেন উদ্ধারকাজ।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বালেশ্বর হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। তার পরই রেল দুর্ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের বার্তা প্রধানমন্ত্রী দেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘এটা দুঃখজনক ঘটনা। আহতদের চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি রাখবে না সরকার। এটা খুবই গুরুতর ঘটনা। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’’
শনিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী। তার পর সেখানে যান ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ বাহানগায় পৌঁছন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে। সঠিক তদন্ত করা হোক।’’ রেলে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ করেছেন মমতা। তার পরেই বিকেলে বালেশ্বর পৌঁছন মোদী। কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনা আহতদের দেখতে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও এনআরএস হাসপাতালে যান শনিবার। আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল।
❤ Support Us