Advertisement
  • ন | ন্দ | ন | চ | ত্ব | র
  • ডিসেম্বর ৮, ২০২২

টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে ২০২২ সালের ‘‌হিরোজ অফ দ্য ইয়ার’‌ সম্মান পাচ্ছেন ইরানের রোয়া

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে ২০২২ সালের ‘‌হিরোজ অফ দ্য ইয়ার’‌ সম্মান পাচ্ছেন ইরানের রোয়া

বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে ২০২২ সালের ‘‌হিরোজ অফ দ্য ইয়ার’‌ সম্মান পাচ্ছেন ইরানের রোয়া পিরায়েইকে। হিজাব বিতর্ক নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তাঁর মা ইরানের পুলিশের হাতে নিহত হয়েছিলেন। নিরাপত্তার কারণে দেশ ছেড়ে এখন ফ্রান্সে রয়েছেন রোয়া।
ইরানের কেরমানশাহ শহরে বাবা–মা’‌র সঙ্গে থাকতেন রোয়া। মাশা আমিনির পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর ২০ সেপ্টেম্বর, রোয়ার মা মিনু মাজিদি, অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। তিনি যখন স্লোগান দিচ্ছিলেন, মোটরবাইকে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। ১৬৭টি শটগানের গুলি ঝাঁঝরা করে দেয় মিনু মাজিদির শরীর। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
মায়েরক শেষকৃত্যের পর নিরাপত্তার জন্য দেশ ছেড়ে চলে যান রোয়া। মায়ের মৃত্যু তাঁর কাছে ছিল ‘‌হ্যারিকেন’‌–এর মতো। সবকিছু কেড়ে নিয়েছিল। রোয়া মনে করেন, মায়ের সঙ্গে যেন তাঁকেও কবর দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্স থেকে তাঁর দুঃখ এবং ইরানের ভবিষ্যতের জন্য তাঁর আশার কথা শেয়ার করেছেন রোয়া। তিনি বলেছেন, ‘‌ আমার হৃদয়ে যে ক্ষত, তা যেন প্রতিদিন নতুন করে জেগে উঠছে। আমি স্থিতিশীল থাকার চেষ্টা করছি। কিন্তু এটা সত্যিই কঠিন। আমাকে এগিয়ে যেতে হবে, কারণ আমার মা এবং অন্য যাদের হত্যা করা হচ্ছে তাদের নীরব কণ্ঠস্বর হওয়ার জন্য আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। আমার মা, মাহসা এবং আমার মতো সমস্ত তরুণ প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।’‌
ইরানের ভয়ঙ্কর অবস্থার কথা তুলে ধরে রোয়া আরও বলেছেন, ‘ইরানে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে কারও স্বাভাবিক জীবন নেই। কিন্তু আমি সত্যিই আমার পরিবারকে সবসময় পাশে পেয়েছি। আমি যা পছন্দ করি তাই করতে পেরেছি, একেবারে স্বাধীন ছিলাম। চাপটা বেশি ছিল সমাজের, সরকারের কাছ থেকে। আমি সত্যিই আমার পরিবারের কাছাকাছি ছিলাম। আমি তাই নিজেকে ধন্য মনে করি। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র আমাদের সমাজকে অন্ধকারের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।’‌
এর আগেও হিজাব বিতর্ক নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এবারের বিক্ষোভ একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে রোয়ার কাছে। তিনি বলেন, ‘‌নারীদের স্বাধীনতার দাবিতে এই বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। মাশার মৃত্যু স্ফুলিঙ্গের মতো ছিল। আমরা অনেক কিছুর সাথে লড়াই করছিলাম। সব সংস্থায় দুর্নীতি,  শিক্ষা ব্যবস্থায়, রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে এবং প্রশাসনে। এখন ইরানের চারপাশের সব জাতিসত্তা একত্রিত হয়েছে। সব মানুষ তাদের দেশ ফিরিয়ে নিতে চায়। পুরুষ এবং মহিলা একে অপরের পাশাপাশি লড়াই করছে। এট একটা বড় ব্যাপার। কারণ সবাই জানে যে, নারীর স্বাধীনতা দাবি করলেই সমস্ত সমাজের স্বাধীনতা হয়।’‌
দেশে এখন পরিবর্তনের আশায় দিন গুনছেন রোয়া। তিনি বলেন, ‘‌এটা একটা দীর্ঘ পথ। কিন্তু তারা সেই অন্ধকারে ফিরে যাবে না। তারা বুঝতে পেরেছে যে এই শাসন স্থির করা যাবে না। তাই আমি মনে করি তাদের ঐক্যই বিজয়ের চাবিকাঠি এবং এই বিপ্লবে জয়লাভ করা। আরেকটি বিষয় হল আমাদের জন্য অন্যান্য দেশের সমর্থন রয়েছে। বিরোধী দলের সবাই বলছে, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে, কূটনীতিকদের বিদেশ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। আমি জানি যে আমাদের কণ্ঠস্বর উচ্চ হয়েছে। এবং সবাই আমাদের দেখতে শুরু করেছে, মোল্লা ও ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে। আমরা ইরানের প্রতিনিধি, তাদের নয়।’‌


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!