Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩

অভিষেকের “মাস্টার্সস্ট্রোক” বিজেপির হাত থেকে ধূপগুড়ি ছিনিয়ে নিল তৃণমূল, নিষ্প্রভ বাম-কংগ্রেস জোট , মমতা বললেন, “ঐতিহাসিক জয়”

অভিষেকের “মাস্টার্সস্ট্রোক” বিজেপির হাত থেকে ধূপগুড়ি ছিনিয়ে নিল তৃণমূল, নিষ্প্রভ বাম-কংগ্রেস জোট , মমতা বললেন, “ঐতিহাসিক জয়”

ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “মাস্টার্সস্ট্রোক” বিজেপিকে পিছনে ফেলে তৃণমূলের জয় ছিনিয়ে আনলো। ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচারে এসে অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায় বলেছিলেন, “ধূপগুড়ি মহকুমা হবে। আমি বলতে পারতাম, এক বছরে হবে, দেখবো,কথা বলব, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব, না আমার প্রতিশ্রুতি আমি কাঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছি, ৩১ ডিসেম্বরের আগে ধূপগুড়ি মহকুমা হবে।” অভিষেকের এই প্রতিশ্রুতি ম্যাজিকের মতো কাজ করল। বাংলার মানুষ যে উন্নয়নের পক্ষে, জাতপাত,ধর্ম এবং হানাহানি পছন্দ করে না, সেটা আবার ধূপগুড়ির মানুষ প্রমাণ করে দেখাল।  এদিকে ইন্ডিয়া জোটের উল্টো পথে হেঁটে তৃণমূলের কাছে বিপর্যস্ত বাম-কংগ্রেস জোট। ভোট প্রাপ্তির নিরিখে তারা আটকে রইল ৬ শতাংশেই ! তৃণমূল পেয়েছে ৯৬,৯৬১টি ভোট, বিজেপি পেয়েছে ৯২,৬৪৮টি ভোট এবং বাম-কংগ্রেস জোট পেয়েছে ১৩,৬৬৬টি ভোট।

ধূপগুড়ির জয়ের পর দিল্লি যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”ধূপগুড়ির মানুষকে ধন্যবাদ। ওখানে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি ছিল। ওদের নেতা-মন্ত্রীরা ওখানকার সব হোটেল বুক করে পড়েছিল। এটা ঐতিহাসিক জয়। দেশে উপনির্বাচনে ইন্ডিয়া-র বড় সাফল্য।”

এই জয়ের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “ঘৃণা ও ধর্মান্ধতার বদলে উন্নয়নের রাজনীতি গ্রহণ করার জন্য ধূপগুড়ির মানুষদের ধন্যবাদ। জনগণের সাথে সংযোগ স্থাপনে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য প্রত্যেক তৃণমূল কর্মীকে স্যালুট। আমরা ধূপগুড়ির সর্বাত্মক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

দশম রাউন্ডের গণনা শেষে ধূপগুড়িতে সবুজ ঝড় শুরু হল। ৪ হাজার ৩১৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়। আজ সকাল  থেকে জোর টেক্কা দিয়েও শেষপর্যন্ত ধূপগুড়ি হাতছাড়া হল বিজেপির। বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায় এর আগে রাজনীতি করেননি। তবে আজ সকাল থেকেই জয়ের বিষয়ে তিনি আশাবাদী ছিলেন। ১০ রাউন্ড গণনার শেষে শেষ পর্যন্ত তিনি যখন পরাজিত হলেন তখন তাঁর চোখ ছলছল করছিল। সকালের সেই দৃপ্ত ভাব আর ছিল না। তবে তিনি পরাজিত হয়ে বললেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে সভা করতে এসে বলেছেন ধূপগুড়ি মহকুমা হবে, তাই মানুষ তৃণমূলকে জয়ী করেছে। তবে আমি যখন লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছি তখন শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের ময়দানে থাকব, লোকসভা নির্বাচনে লড়ব।”

এদিকে এই পরাজয়ের পর রাহুল সিনহা বলেছেন, “ভুলত্রুটিগুলি সংশোধন করে নিতে হবে।” এই ফলের মধ্যদিয়ে ধূপগুড়িতে চূড়ান্ত বিপর্যস্ত হল সিপিএম ও কংগ্রেস জোট। এই জয়ের পর ফিরহাদ হাকিম বলেন, “অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও মহম্মদ সেলিমের তৃণমূলের সমালোচনা এবং পরোক্ষে বিজেপির হাত শক্ত করার জবাব তৃণমূলের এই জয়। এই ফল বুঝিয়ে দিচ্ছে বাম-কংগ্রেস আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আসলে বাম-কংগ্রেস এভাবেই বিজেপির হাত শক্ত করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই এই জয়, আগামীদিনে দেশ থেকে বিজেপিকে সরিয়ে দিতে তৃণমূল সফল হবে।” যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদকে নিয়ে ধূপগুড়িতে উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম।

এই পরাজয়ের পর অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “আমরা ধূপগুড়ির বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারবো কোনওদিন বলিনি । ওখানে আমাদের সংগঠন দুর্বল ছিল। বিজেপির বিধায়ক ছিলেন। আমরা কোনওদিন দাবি করিনি আমরা জিতব।”

এদিন গণনার শুরু থেকে শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব আশাবাদী ছিলেন, ধূপগুড়ি তৃণমূলের হাতে আসতে চলেছে। ফল ঘোষণার পর গৌতম দেব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সদ্য ঘোষণা করা ও বিধানসভায় প্রস্তাব এনে পাশ করিয়ে নেওয়া বাংলার সংগীত ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’, গেয়ে বললেন, “সকালেই বলেছিলাম জিতব, সেটাই হল।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!