- এই মুহূর্তে দে । শ
- অক্টোবর ৪, ২০২৩
দিল্লি থেকেই রাজভবন অভিযানের প্রস্তুতি শুরু, মঙ্গলবার রাতেই জেলায় জেলায় ফোনে বার্তা অভিষেকের

রাজ্যের বকেয়া আদায়ে দিল্লি অভিযানে গিয়ে বঞ্চনার সুরাহাতো হলই না উল্টে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশ হেনস্থার মুখে পড়তে হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের নেতাকর্মীদের। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বেশি রাতে পুলিশি হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার রাজভবন অভিযান কর্মসূচি ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করেছেন, বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেই বৃহস্পতিবার এক লক্ষ কর্মী সমর্থক নিয়ে ‘রাজভবন চলো’ অভিযান করবে তৃণমূল।
বিরোধীরা বলছে, দিল্লিতে পুলিশের বাঁশি শুনেই অভিষেকের বীরত্ব ঘুঁচে গেছে। এবার কলকাতায় ফিরে আবার হম্বিতম্বি শুরু করার জন্য বৃহস্পতিবার রাজভাবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন নিজেকে বড় নেতা প্রমাণ করার জন্য।
মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে অভিষেক বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা না-করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি। আমরা তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাংলার বঞ্চিত মানুষের কথা বলব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি আমরা নিয়ে এসেছিলাম, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা নেননি। তাই সেই চিঠিগুলি আমরা রাজ্যপালকে দেব।’’
অভিষেকের ওই ঘোষণার পর রাত থেকেই শুরু হয় রাজভবন অভিযানের প্রস্তুতির পালা। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তৃণমূল দেশের দুই বড় শহর দিল্লি এবং কলকাতায় এর আগে কখনও সমাবেশ তৃণমূল করেছে বলে দলের প্রবীণ নেতারা মনে করতে পারছেন না। কিন্তু কর্মসূচির ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সেই কর্মসূচি ‘সফল’ করতেই হবে। তাই রাজভবনে জনসমাগমের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন ও জেলা নেতৃত্বকে। নির্দেশ পাওয়ামাত্রই জেলায় জেলায় কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলকাতা-সহ তৎসংলগ্ন জেলা হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নেতাকর্মীদের রাজভবনে জমায়েত করার নির্দেশ দিয়েছে। এমনই জানিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী তথা রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও দলের মহিলা সংগঠনের সদস্যদের বেশি সংখ্যায় উপস্থিত করাতে উদ্যোগী হয়েছেন।
বুধবার সকাল পর্যন্ত তৃণমূলের বহু নেতাই দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরতে পারেননি। তাই রাত জেগে ফোনেই জমায়েত নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। হাওড়া সদর জেলা তৃণমূলের নেতারা বলেছেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই আমরা নেতৃত্বের কাছ থেকে বৃহস্পতিবার রাজভবন অভিযানের ফোন পাচ্ছি এবং প্রস্তুতি শুরু করেছি। তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে জেলার প্রত্যেকটি ব্লক, ওয়ার্ড ও অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে কথা বলে এই কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের এই রূজভবন অভিযান কর্মসূচি সফল করতে মূলত দক্ষিণবঙ্গের শহর লাগোয়া জেলাগুলির ওপরই জোর দিচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে আবার বৃহস্পতিবার কর্মসূচি করা একটু কষ্টসাধ্য ছিল। তাই দিল্লি থেকেই সব আয়োজন শুরু করে দিতে হয়েছে। কলকাতা ও তার কাছের জেলাগুলির নেতা-কর্মীদেরই মূলত এই সমাবেশে আসতে বলা হয়েছে। তবে অন্য কোনও জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা যদি আসতে চান দল তাঁদেরও স্বাগত জানাচ্ছে।
সিপিএমের তরফে বলা হয়েছে, কাজের দিনে অন্যদল রাজপথে আন্দোলন করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ অনুমতি দেয় না। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২৪ ঘণ্টা আগে কর্মসূচি ঠিক করলেও তাতে সম্মতি দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। এখানেই প্রমাণ হচ্ছে এই রাজ্যে আইনের শাসন নয়, শাসকের আইন চলে।
❤ Support Us