- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ৪, ২০২৪
খাটল না ডামি প্রার্থীর কৌশল, বর্ধমান পূর্বে জয় অধরা বিজেপির

ভোটে জেতার কৌশল হিসেবে বিজেপি নেতৃত্ব শর্মিলা সরকার নামে এক নির্দল প্রার্থীকে বর্ধমান পূর্ব লোকসভায় দাঁড় করিয়েছিল বলে অভিযোগ। পদ্মনেতারা ভেবেছিলেন, ভোটাররা ভুল করে তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকারের বদলে নির্দল শর্মিলাকে ভোট দিয়ে দেবেন। ভাবনা যে কতখানি অমূলক তার প্রমাণ মিলল ভোটের ফলে। মঙ্গলবার এই লোকসভার ফল বেরতে দেখা গেল, বিজেপির ‘ষড়যন্ত্র’ ধোপে টেকেনি। ১,৬০,৩৫০ ভোটে হারল বিজেপি। বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার বললেন, ‘জনগণ রায় দিয়েছেন। মাথা পেতে সেই রায় মেনে নিচ্ছি। তৃণমূল প্রার্থীকে ধন্যবাদ। তবে এই লোকসভার বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের পাশে থাকব।’
বীরভূমের বাসিন্দা নির্দল প্রার্থী শর্মিলা সরকারকে দাঁড় করানোর পিছনে শুরু থেকেই ‘বিজেপির পূর্ণ মদতের’ অভিযোগ তুলে এসেছে তৃণমূল। কারণ ভোট পর্বে নির্দল শর্মিলার টিকি মেলেনি। না প্রচারে, না দেওয়ালে। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জির ব্যাখ্যা, ‘জনসমর্থন তলানিতে চলে যাওয়ায় ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে, গণনায় বাড়তি সুবিধে পেতে বিজেপি এই কাণ্ড করেছে। তবে এতে যে লাভ কিছু হল না, তার প্রমাণ তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ শর্মিলা সরকারইতো শেষ হাসি হাসলেন।’ নির্দল শর্মিলার ইলেকশন এজেন্ট দীপক ঢালি অবশ্য জানান, ‘আমাদের প্রার্থীর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের সংস্রব নেই। আমরা নিজেদের সাধ্যের মধ্যে পূর্ণশক্তি নিয়েই ভোটপর্ব চালিয়েছি।’
সেই ‘পূর্ণশক্তি’র খোঁজে গিয়ে চিত্রটা পরিষ্কার হল। নিয়ম অনুযায়ী এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হিসেবমতো ১৭৮ জন করে কাউন্টিং এজেন্ট পান। সূত্রের খবর, বীরভূম জেলার বোলপুর থানা এলাকার সাহেবডাঙার বাসিন্দা নির্দল শর্মিলার কাউন্টিং এজেন্ট ঠিক করা থেকে শুরু করে তাদের প্রশিক্ষণের তামাম বন্দোবস্ত করে বিজেপি নেতৃত্বই।
গেরুয়া শিবিরে ঢুঁ মেরে জানা গেল, মূলত দুটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে খুঁজেপেতে এই শর্মিলাকে খাড়া করা হয়। এক, তৃণমূল আর নির্দল দুই প্রার্থীর নাম হুবহু এক হওয়ায় বহু ভোটার বিভ্রান্ত হয়ে নির্দলের ঘরের বোতাম টিপবেন। দুই, ভোটের দিন বা গণনার সময় নির্দল প্রার্থীর জন্য বরাদ্দ এজেন্ট নিজেরা ঠিক করায় শাসক দলের উপর চাপ রাখা। তবে ভোটের ফলে বিজেপি নিজেরাই ‘চাপে পড়ে গেল’ বলে মনে করেন তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকারের ইলেকশন এজেন্ট বিশ্বনাথ সাহা। আর জিতে জীবনে প্রথম পার্লামেন্টে পা রাখার আনন্দে উদ্বেলিত তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ শর্মিলা সরকারের মন্তব্য, ‘আসল বিষয় হল মানুষের সমর্থন। ফন্দি-ফিকির করে ভোটে জেতা যায় না। মানুষ অত বোকা নন। তাঁরা উন্নতি চান। তাই মমতা ব্যানার্জির হাত শক্ত করতে চেয়েছেন। ভোটের ফলেই প্রমাণ হল, বিজেপি ভুল পথ বেছেছিল।’
❤ Support Us