- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪
স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে কেন্দ্রীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মেধাগত অবনমন ঘটছে দাবি শিক্ষকমহলে
কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিয়ে সরব বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। জে এন ইউ তে অনশন
কেন্দ্রীয় শিক্ষা দপ্তর ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সমস্ত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আন্ডার গ্রাজুয়েট ও পোস্ট গ্রাজুয়েটে ভর্তির জন্য একটি কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষার দায়িদ়্বপ্রাপ্ত সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি, ২০১৭ সালে যা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল এক ভারত, এক পরীক্ষা।
সর্ব়মোট, ৫৩ টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই পরীক্ষা ব্যবস্থার আওতাভুক্ত। এটি মূলত কম্পিউটার ভিত্তিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি সাধারণত ভারতের ৫৪৭ টি বড়ো শহর, যেমন – কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, শ্রীনগর, উদয়পুর, হায়দ্রাবাদ ইত্যাদি শহরগুলিতে হয়ে থাকে।এই সি ইউ ই টি ছাড়াও এই সংস্থা দেশের সর্ববৃহৎ দুই পরীক্ষা নেট ও নিট এই দুই পরীক্ষাও নেয়।এ বছর এই পরীক্ষা সংস্থার বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে।
দুর্নীতির অভিযোগ
এবছর, নিট-ইউজি পরীক্ষা হয়। দেশ জুড়ে ৪,৭৫০টি কেন্দ্রে ওই পরীক্ষা হয়েছিল। পরীক্ষা দিয়েছিলেন প্রায় ২৪ লক্ষ পড়ুয়া। ফলপ্রকাশের নির্ধারিত সময়ের অন্তত ১০ দিন আগে গত ৪ জুন এই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষিত হয়। দেখা যায়, ৬৭ জন সম্পূর্ণ নম্বর নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এক নম্বরও তাঁদের কাটা যায়নি। এমনকি, এই ৬৭ জনের মধ্যে অনেকে একই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন বলেও জানা যায়। ফলে প্রশ্ন ওঠে, পরীক্ষার আগেই নির্দিষ্ট কোনও কোনও এলাকায় প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছিল কি না।
নিটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গিয়েছিল, কেউ কেউ এমন নম্বর পেয়েছেন, যা পরীক্ষার সাধারণ হিসাবের বাইরে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে জাতীয় টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) জানায়, ওই পরীক্ষার্থীরা সময় কম পাওয়ায় কিছু বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছে। পরে বিতর্কের মাঝে সেই নম্বর বাতিলও করে দেওয়া হয়। এর মাঝে নিট পরীক্ষাই বাতিলের দাবি ওঠে। নিটে অনিয়মের অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা স্বীকারও করে নিয়েছেন, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন পরীক্ষার আগের দিন বিক্রি করা হয়েছিল। এর পরবর্তীতে সেই পরীক্ষা বাতিল করা হয়। সেই জুন মাসেই, নেট পরীক্ষার ক্ষেত্রেও ওঠে একই অভিযোগ। সেই পরীক্ষাও বাতিল হয়।
এই একের পর এক এন টি এ দুর্নীতির অভিযোগ আসায় এই সংস্থা বাতিলেরও দাবি ওঠে। তাছাড়াও, কেন্দ্রীয় পরীক্ষার বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার দিক এর আগেও উঠে এসেছে।
এবার, সেই কথাই উঠে এল কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মুখ থেকেও।
প্রবেশিকায় বদল আনছে জেএনইউ
গত আগস্ট মাসে, জে এন ইউ-এর ছাত্র সংসদ ১৭ দিনের অনশন কর্মসূচি চালায়, এই কর্মসূচির যে ১২ টি দাবি ছিল তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল এই কেন্দ্রীয় পরীক্ষার বিরোধীতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরীক্ষা পদ্ধতিকে ফিরিয়ে আনা।
এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েই জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা মৌসুমি বসু বলেছেন, এই কেন্দ্রীয় পরীক্ষার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নি়জস্ব চরিত্র ক্ষুন্ন হওয়ার সাথে সাথে ফর্মের অত্যধিক দাম এবং কম্পিউটার ভিত্তিক হওয়ার কারণে বহু প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।সর্বোপরি, সমস্ত বিষয়ের পরীক্ষা মাল্টিপল চয়েস ভিত্তিক হওয়ায় মূল্যায়ন সঠিক হয় না। এই একই দাবি নিয়ে সরব হয়েছে আরো বহু কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকরা। জে এন ইউ-এর ছাত্র সংসদের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই জওহরলাল নেদেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরের বছর থেকে, গবেষণার প্রবেশিকায় পুনরায় নিজস্ব পরীক্ষা রীতি চালু করা হবে ।
❤ Support Us