- প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ২৪, ২০২২
ইউক্রেনকে আরও ৬ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাজ্য: বিট্রিশ প্রধানমন্ত্রী
গত এক মাসের ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া অন্তত ১৫ হাজার ৬০০ সেনা হারিয়েছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ এই তথ্য জানায়। এক ফেসবুক পোস্টে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানায়, যুদ্ধে রাশিয়ার ৫৩০টি ট্যাঙ্ক, এক হাজার ৫৯৭টি সাঁজোয়া যান, ১০৮টি প্লেন, ১২৪টি হেলিকপ্টার এবং ৫০টি ড্রোন ধ্বংস হয়েছে। ৯ দিনে পা দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ । এখনও লড়াই থামার কোনও নাম নেই। অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেন । ইউক্রেনকে আরও ৬ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাজ্য । বৃহস্পতিবার এ বিষয়ক ঘোষণা দিবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাসেলসে ন্যাটো ও জি-৭ নেতাদের বৈঠকে জনসন ইউক্রেনীয় সৈন্য এবং পাইলটদের বেতন প্রদানে অর্থ সহায়তা হিসেবে ২ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের (৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার) তহবিলও ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।
ব্রিটেন বলেছে, ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রায় ৪ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে। যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে মানবিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ৪০ কোটি পাউন্ডের বাইরে থাকছে নতুন এই তহবিল। সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়েও ইউক্রেনকে ক্ষেপনাস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে ইউরোপের বহু দেশ। তাই সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েও এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি রুশ সেনা। এই অস্বস্তির মধ্যেই পুতিনের নিজের দেশেই যুদ্ধ বিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন, জনসাধারন রাস্তায় নামছেন। তার উপর আবার একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ঝুলছে মস্কোর উপর।এই সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফের মিত্র দেশগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এরপর আরও বেশি করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে রাশিয়ার উপরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ২০ বছরে এত বড় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়নি মস্কোকে।
এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, গোল্ডম্যান স্যাচেস নামের এক বিশেষজ্ঞের দাবি, রুশ অর্থনীতি ১০ শতাংশ সঙ্কুচিত হতে চলেছে। এদিকে মুদ্রাস্ফীতি একধাক্কায় ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। ফলে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় সাধারণ মানুষের। ইতিমধ্যেই অসংখ্য বহুজাতিক সংস্থাই রাশিয়ায় তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে অ্যাপল, ম্যাকডোনাল্ডস ও ডেলের মতো সংস্থাও। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রুশ অর্থনীতিতে। উল্লেখ্য, গত শতকের নয়ের দশক থেকেই রুশ রাজনীতিতে পুতিন জমানার শুরুয়াৎ। বরাবরই নিজের উত্থানের কথা বলতে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মনে করিয়ে দিতেন, সেই সময় কতটা অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল মস্কোকে। কিন্তু সেই স্মৃতিই ফের ফিরে এসেছে রাশিয়ায়। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পরে আবারও অস্বস্তিতে রুশ অর্থনীতি। মনে করা হচ্ছে, যে আর্থিক বিপর্যয়ের সময় পুতিনের উত্থান, তেমনই এক আর্থিক বিপর্যয়ই তাঁর পতনের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। মুখে পুতিন বাহিনীকে হুঁশিয়ারি দিলেও সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ফৌজ পাঠাতে অস্বীকার করে আমেরিকা ও ন্যাটো। তাদের আশঙ্কা ইউক্রেনে সেনা পাঠালে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে ন্যাটো। অর্থাৎ ময়দানে জেলেনস্কিকে একাই বিশাল রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। আর ইউক্রেনের সেনার জন্য পরিস্থিত যে ক্রমে জটিল হয়ে উঠছে তা স্পষ্ট।
❤ Support Us