- স | হ | জ | পা | ঠ
- ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
৯০ বছর পর, বিলেতের চিড়িয়াখানায় জন্মাল আর্ডভার্কের ছানা ।
সুকুমার রায়ের কবিতার কাল্পনিক জন্তুদের সঙ্গে এদের চেহারা দিব্যি মিলে যায় । বিদঘুটে, লিকপিকে পা গুলো লম্বা-লম্বা কান, ইয়া বড়ো নাক । ছালওঠা শরীর । চতুর্দিক শুঁকে শুঁকে খাবার খুঁজে বেড়ায় । অদ্ভুত দেখতে এই প্রাণীটার সঙ্গে হ্যারি পটারের সেই দুষ্টু ভূত ‘ডবি’-র অনেক মিল । এমন প্রাণীর সঙ্গে পরিচয় খুব কম জনেরই আছে । আর থাকবেই বা কী করে? আমাদের অত্যাচেরেই তো পূথিবী থেকে প্রায় বিলুপ্ত হতে বসেছে এরা।
এরা হল আর্ডভার্ক । প্রাণিবিদরা অনেকেই এদের পতঙ্গভুক নামেও ডাকেন । জঙ্গলের বুনো পরিবেশে এরা থাকতে ভালোবাসে । তবে এদের অস্তিত্ব যেহেতু সঙ্কটে তাই অনেক দেশই চিড়িয়াখানায় এখন আর্ডভার্ক রেখে প্রতিপালন করা হচ্ছে । কিন্তু এই প্রাণীগুলো বন্দি জায়গায় প্রাণ খুলে চড়ে বেড়াতে পারে না । খাবার ও প্রজননের জন্য এরা খোঁজে নির্জন খোলা প্রকৃতি ।৯০ বছর পর বিট্রেনের চিড়িয়াখানায় এই প্রথম জন্ম হল ছানা আর্ডভার্কের । পশুপ্রেমীদের মধ্যে হইচই পড়ে গেছে । ছানাটির সুস্থতা কামনা করেছেন অনেকেই। ব্রিটেনের চেস্টার জু-র কর্তূপক্ষরা জানিয়েছেন, ছানাটি একদম সুস্থ, সবল আছে । আদর করে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডবি’ । তাকে এখন রাখা হয়েছে ইনকিউবেটরে । ঘন্টায় ঘন্টায় দুধ খাওয়ানো থেকে তার শারিরীক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে । সদ্যোজাতটি মেয়ে-শাবক ৷ ধীরে ধীরে বাড়ছে মা ও শাবকের অমোঘ বন্ধন৷
আর্ডভার্ক একশ্রেণীর পতঙ্গভুর প্রাণী। তীব্র ঘ্রাণশক্তি এবং তীক্ষ্ণ নাকের দ্বারা এই প্রাণীগুলি উইপোকা এবং পিঁপড়ের মতো ছোট প্রাণী শিকার করে৷ তাছাড়া তাদের আঠালো জিভের সাহায্যেও পোকামাকড় ধরতে সুবিধে হয়৷ তীক্ষ্ণ নখের সাহায্যে এরা সহজেই উইয়ের ঢিবি ভেঙে ফেলে৷ স্বভাবে নিরীহ এই প্রাণিরা হিংস্র শ্বাপদদের শিকারে পরিণত হয়। মানুষ লোলুপ দূষ্টি থেকেও বাঁচতে পারে না এরা, তাছাড়া সভ্যতার উন্নতির সাথা সাথে জহ্গল কেটে সাফ করার ফলে এই প্রাণীগুলো হারিয়ে যায়। এদের সংরক্ষণ না করা গেলে আস্ত এই প্রজাতি পৃথিবী থেকে উবে যাবে।
পশুপ্রেমীদের পাশাপাশি এই বিরল প্রাণীর জন্মে খুব খুশি হয়েছেন পরিবেশকর্মীরাও৷ সারা ইউরোপে সব পশুশালা মিলিয়ে মোট ৬৬ টি আর্ডভার্ক আছে বলে জানা গিয়েছে৷ মূলত আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলের বাসিন্দা এই স্তন্যপায়ী প্রাণীর নামের অর্থ আফ্রিকান ভাষায় ‘মাটির শূকর’৷
❤ Support Us