- দে । শ
- ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪
উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল
গোটা দেশে নজির সৃষ্টি করল উত্তরাখণ্ডের পুস্কর সিং ধামির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। প্রথম রাজ্য হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পাশ করল উত্তরাখণ্ড বিধানসভা। বুধবার বিকেলে বিধানসভায় ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে এই বিলটি পাশ হয়। এখন শুধু রাজ্যপালের স্বাক্ষরের অপেক্ষা। রাজ্যপালের সই হয়ে গেলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এক কমিটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিলের খসড়া তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামির কাছে জমা দেয়। সোমবার দেরাদুনে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটি পাশ করানো হয়। মঙ্গলবার বিলটি বিধানসভায় পেশ করা হয়েছিল। কংগ্রেস বিধায়করা বন্দে মাতরম ধ্বনি দিয়ে বিলের বিরোধিতা শুরু করেন। বিজেপি বিধায়করা পাল্টা জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে থাকে। অধিবেশন কক্ষে তাব্র হট্টগোল সৃষ্টি হয়। বিলটি পেশ করার পর সাময়িকভাবে অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়।
বুধবার আবার অধিবেশন শুরু হলে বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার বিকেলে ধ্বনি ভোটে বিলটি পাশ হয়। মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি বলেন, ‘সংবিধানে বলা রয়েছে, রাজ্যগুলি নিজেদের সুবিধামতো অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে পারে। অনেকেই এই বিলের বিরোধিতা করেছেন। সংবিধান মেনেই বিলের খসড়া তৈরি হয়েছে।’ যদিও দলিত ও জনজাতি সম্প্রদায়ের নাগরিকদের বিলের আওতায় রাখা হয়নি। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধিরা।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিলে সব ধর্মের মানুষের জন্য বিয়ে, বিবাহবিচ্ছেদ, জমি–সম্পত্তি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত এক এবং অভিন্ন আইন প্রচলনের কথা বলা হয়েছে। ধর্ম নির্বিশেষে পুরুষদের বহুবিবাহ বন্ধ এবং একত্রে বাস নথিভুক্ত করার আইনের কথা বলা হয়েছে। যদি কোনও পুরুষ ও মহিলা ‘লিভ–ইন’ করতে চান, তবে অবশ্যই তাঁদের পুলিশ বা জেলা আধিকারিকদের অনুমতি নিতে হবে। তাঁদের বয়স ২১ বছরের নীচে হলে বাবা–মায়ের সম্মতির প্রয়োজন। ‘লিভ–ইন’ সম্পর্কে থাকা যুগলের যদি সন্তান হয়, তবে শিশুরা আইনি স্বীকৃতি পাবে।
এছাড়া ধর্ম নির্বিশেষে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘রেজিস্ট্রি বিবাহ’ বাধ্যতামূলকের কথা বলা হয়েছে এই বিধিতে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিলের লক্ষ্য ধর্ম নির্বিশেষে সব নাগরিকের জন্য অভিন্ন বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, জমি, সম্পত্তি, উত্তরাধিকার আইনের জন্য একটা আইনি কাঠামো প্রদান করা। খসড়া বিলে বহু বিবাহ এবং বাল্য বিবাহের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে।
❤ Support Us