Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

সম্প্রীতি গোপালের দেহ কাঁধে বয়ে সৎকার সুকুর-জহরদের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সম্প্রীতি গোপালের দেহ কাঁধে বয়ে সৎকার সুকুর-জহরদের

মানবিকতা আর সম্প্রীতির জড়িজড়ি নজির দেখল পূর্বস্থলীর প্রত্যন্ত গ্রাম বাবুইডাঙা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের হিন্দু যুবক গোপাল মণ্ডলের (৪০)। তার সৎকার কীভাবে হবে, তাই নিয়ে ওই যুবকের বাড়ির লোকজন যখন দুশ্চিন্তায় মাথার চুল ছিঁড়ছেন, তখনই এগিয়ে এলেন গ্রামেরই একদল মুসলিম যুবক। চাঁদা তুলে সৎকারের খরচ তোলা থেকে শুরু শবযাত্রায় শামিল হলেন সুকুর আলি শেখ, জহর শেখ, ইদ্রিশ শেখরা। সংকীর্ণ ধর্মের আগল ছিঁড়ে মানবধর্মের জয়গীত গাওয়া সুকুর-জহররা অবশ্য এজন্য নিজেরা ন্যূনতম কৃতিত্ব নিতে নারাজ। জানালেন, ‘প্রতিবেশীর সমস্যা মেটাতে এগোতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। ভবিষ্যতেও এমনটা করব।’
জানা গেল, মৃত গোপাল আদতে পূর্বস্থলী ২নং ব্লকের লক্ষীপুর-আটপাড়া এলাকার বাসিন্দা। গ্রামে গ্রামে চক্কর দিয়ে সংসারের জিনিসপত্র ফেরি করতেন। এই কাজ করতে করতেই এক যুবতীর সঙ্গে প্রেম হয়। শেষমেশ দুজনে বিয়ের পিঁড়িতে বসে। তবে এই বিয়ে মেনে নেয়নি গোপালের পরিবার। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় গোপালকে। বাড়ি ছেড়ে স্ত্রীকে নিয়ে বাবুইডাঙা গ্রামে বসবাস করতে শুরু করেন। এরপরেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। রোজগারের ক্ষমতা হারান। অগত্যা সংসার ঠেলতে তার স্ত্রীকে ডিমের ব্যবসা বেছে নিতে হয়। ডিম বিক্রি করেই কোনওরকমে সংসার চালাচ্ছিলেন। একদিন হঠাৎ করেই গোপাল খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হৃদরোগ ধরা পড়ে। আর্থিক সমস্যার কারণে সেরকম চিকিৎসাও করাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বিকালে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু হলে কি হবে, বেশ কয়েক ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও মৃতের পরিবারের কেউই তার সৎকারের জন্য এগিয়ে আসেননি। এই কথা জেনে ছুটে আসেন সুকুর আলি, ইদ্রিশ শেখরা। একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে সৎকারের উদ্যোগ নেন। শবদেহে কাঁধ দেন। রাতে পূর্বস্থলীর কমলনগর ঘাটে দাহ করা হয় গোপালকে। এলাকার বিধায়ক তপন চ্যাটার্জির কথায়, ‘এই সময়ে ইদ্রিশ-সুকুররা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল, তার প্রশংসা করছি।’


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!