- এই মুহূর্তে মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩
আমরা কি শুধুই প্রচারের মুখ? খেলরত্ন–অর্জুন ফেরাতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি ভিনেশের
ব্রিজভূষণ শরণ সিং ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিং ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিবাদে খেলা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাক্ষী মালিক। পদ্মশ্রী খেতাব ফেরত দিয়েছেন বজরং পুনিয়া। পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্যারা কুস্তিগীর বীরেন্দর সিং। এবার বজরং পুনিয়াদের পথে হাঁটলেন আর এক কুস্তিগীর ভিনেশ ফোগাট। মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন ও অর্জুন পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই কুস্তিগীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকেও তিনি চিঠি দিয়ে পদক ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় করা এক পোস্টে ভিনেশ ফোগাট লিখেছেন, ‘আমি আমার মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন সম্মান ও অর্জুন পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছি। আমাকে এই পরিস্থিতিতে রাখার জন্য সর্বশক্তিমানকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’ পাশাপাশই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও চিঠি লিখেছেন ভিনেশ ফোগাট। সেই চিঠিতে তিনি সাক্ষী মালিক ও বজরং পুনিয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে ভিনেশ ফোগাট লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সাক্ষী মালিক কুস্তি ছেড়ে দিয়েছে। বজরং পুনিয়াও তার পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছে। দেশের হয়ে অলিম্পিক পদকজয়ী খেলোয়াড়রা কেন এইসব করতে বাধ্য হয়েছে, গোটা দেশ জানে। আপনি দেশের প্রধান। আপনার কানেও বিষয়টা পৌঁছেছে। গত একবছর ধরে আমি যে অবস্থার মধ্যে ছিলাম, তা জানাতে আপনাকে এই চিঠি লিখছি।’
ফোগাট আরও লিখেছেন, ‘আমার মনে আছে, ২০১৬ অলিম্পিকে সাক্ষী মালিক যখন পদক জিতেছিল, আপনার সরকার ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’–র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করেছিল। যখন এটা ঘোষণা করে হয়েছিল, তখন দেশের সব মহিলা খেলোয়াড়রা খুশি হয়েছিল। আজ যখন সাক্ষীকে কুস্তি ছেড়ে দিতে হয়েছে, বারবার আমার সেই ২০১৬ সালের কথা মনে পড়ছে। আমরা মহিলা খেলোয়াড়রা কি শুধুমাত্র সরকারি বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য জন্মেছি? বিজ্ঞাপনগুলি দেখানোর জন্য আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কারণ, বিজ্ঞাপনগুলির স্লোগান দেখে মনে হচ্ছে আপনার সরকার কন্যাসন্তানের উন্নতির জন্য গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করতে চায়। অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু এখন সেই স্বপ্ন ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে।’
ফোগাট আরও লিখেছেন, ‘আমি পুরো ঘটনা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। পারিনি। বিচারের দাবিতে একবছর ধরে আমরা নিজেদের রাজপথে টেনে নিয়ে এসেছি। কেউ আমাদের খেয়াল রাখেনি। আমাদের পদক ও পুরস্কারের মূল্য ১৫ টাকা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই পদকগুলো আমাদের জীবনের চেয়েও দামী। আমরা যখন দেশের জন্য পদক জিতেছিলাম, নিজেদের গর্বিত মনে হয়েছিল। আর এখন আমরা ন্যায় বিচারের জন্য আওয়াজ তোলায় দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে একটাই প্রশ্ন, আমরা কি দেশদ্রোহী?’
চিঠির একদম শেষে পদক ফিরিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ভিনেশ লিখেছেন, ‘আমি জানি না বজরং পুনিয়া কী অবস্থায় তার পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আমিও আমার পুরস্কার নিয়ে বিতৃষ্ণা বোধ করছি। এখন আমি পুরস্কার পাওয়া ভিনেশের ইএমজ থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমাকে মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন ও অর্জুন পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, আমার জীবনে যা এখন মূল্যহীন। প্রতিটা মহিলাই সম্মানের সহ্গে জীবনযাপন করতে চায়। তাই প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, আমি আমার মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন এবং অর্জুন পুরস্কার আপনাকে ফিরিয়ে দিতে চাই যাতে এই পুরস্কার মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার পথে আমাকে বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়।’
❤ Support Us