- প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
বিশ্বভারতী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্বর আরও চওড়া–অনাচারের শিকার হচ্ছেন ছাত্র-শিক্ষকরা । গৈরিকীকরণ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নস্যাৎ করে উপাচার্য, প্রতিচীর ৪৩ সালের নথি অপ্রাসঙ্গিক
প্রসঙ্গ সংসদে তুলতে পারেন তৃণমূলের সদস্যরা।

মুখ্যমন্ত্রী মালদায় প্রশাসনিক বৈঠক সেরে আবার শান্তিনিকেতনে এসেছেন। দেখা করেছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া অধ্যাপকদের সঙ্গে, কথা বলছেন আশ্রমিকদের সঙ্গে। বিশ্বভারতীকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জায়গা বলে উল্লেখ করে তার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানালেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা নানা রকম সমস্যার শিকার। কর্তৃপক্ষ এমন পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছেন যে একজন গবেষক তাঁর পিএইচ ডি শেষ করত পারছেন না, একজন অধ্যাপককে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যে শিক্ষার্থীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন তাঁদের অনেককেই সাসপেণ্ড করেছে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষায় বসার জন্য যে ন্যূনতম ৬০ % উপস্থিতি প্রয়োজন তাও দেওয়া হচ্ছে না তীব্র অবিচারের শিকার প্রায় সকলেই। আশ্রমিক, পড়ুয়া অধ্যাপক সবার পাশেই তাঁর সরকারের থাকার কথা জানালেন তিনি।
এদিন সকালে অমর্ত্য সেনকে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া জমির কাগজপত্রকে অপ্রাসঙ্গিক বলে আখ্যা দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতেই নতুন করে জমির মাপ-জোক করবার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে গিয়েছিলেন। ভূমি সংস্কার দপ্তরের পুরনো রেকর্ড ঘেঁটে প্রাপ্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তিনি তুলে দেন অর্থশাস্ত্রীর হাতে। ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই এই নথির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য। অমর্ত্য সেনের বাড়তি ১৩ ডেসিম্যাল জমি দখল করে রাখার দাবিতে অনড় থেকে তিনি জানান যে মুখ্যমন্ত্রী যে নথি দেখাচ্ছেন তা অনেক পুরনো। আজকের সময় তার আর কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বিশ্বভারতীর কাছে থাকা নথিপত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। যা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদের কাছে ১.২৫ একর জমিই থাকার কথা। উপাচার্য আরও জানান যে অমর্ত্য সেনের মত প্রথিতযশা ,খ্যাতনামা দার্শনিক ও অর্থনীতিবিদের অসম্মান তাঁদের অভিপ্রায় নয়। কারণ তিনি এপ্রসঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছেন, চেয়েছেন একটি সুষ্ঠু মীমাংসা হোক চলতি জমি বিবাদের।
মুখ্যমন্ত্রীর জমির কাগজ পত্র প্রদান সম্পর্কে উপাচার্য আরও বলেন যে লিজ দেওয়া হয়েছিল অমর্ত্য সেনের পিতা আশুতোষ সেনকে। তাও ১৯৪৩ সালে। এখানে তাঁর দাবি, লিজের অধিকার যিনি প্রয়াত হয়েছেন তাঁর নামে হস্তান্তর হয় না। মঙ্গলবার অমর্ত্য সেনকে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার চিঠি পাঠানোর সমর্থনে তিনি জানান যে বিশ্বভারতীর বহু জমি হাতছাড়া হয়ে গেছে। সেই জমি তিনি ফেরাতে চাইছেন বলে তাঁর দাবি। এ ব্যাপারে যাবতীয় বিতর্কের অবসানের জন্য সরকার পক্ষ প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি আর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে জমি নতুন করে জরিপ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
❤ Support Us