- প্রচ্ছদ রচনা
- জুন ৯, ২০২২
নৃশংস ও বিদ্বেষমূলক ভাষণকে ধিক্কার, নূপুরদের গ্রেফতারির দাবি তুলে টুইট মমতার

ইসলাম ধর্মগুরু হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপি নেতানেত্রীর কুরুচিকর মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় ইসলামিক বিশ্ব। যদিও বিজেপির তরফে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দল থেকে সাসপেন্ডেড নুপূর শর্মা ও নবীন জিন্দাল। এরপরও বিতর্ক থামছে না। এবার বিষয়টি নিয়ে টুইটে গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘটনাকে তীব্র ধিক্কার জানিয়ে টুইটারে দোষীদের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন মমতা । পাশাপাশি জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন ।
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যম আয়োজিত বিতর্কসভায় বিতর্কিত মন্তব্য করেন নূপুর। তার পরে কার্যত একই কথা টুইট করেন গেরুয়া শিবিরের আর এক মুখপাত্র নবীন জিন্দল। তা নিয়ে হইচই শুরু হতেই নূপুরকে সাসপেন্ড এবং নবীনকে বহিষ্কার করে বিজেপি। যদিও তাতে বিতর্ক ধামাচাপা পড়েনি। মধ্য-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের পণ্য বয়কট শুরু হয়ে যায়। কাতারের মতো আরও কয়েকটি দেশে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আপত্তির কথা জানায়। সব মিলিয়ে আরব দুনিয়ায় ভারতের ভাবমূর্তি খাটো হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ বার সেই প্রেক্ষিতে ঘটনার নিন্দা করলেন মমতা।পর পর তিনটি টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘বিজেপির ধ্বংসাত্মক কয়েক জন নেতার করা জঘন্য এবং নৃশংস ঘৃণাভাষণকে ধিক্কার। এতে শুধু যে হিংসা ছড়ায় তা-ই নয়, আমাদের দেশের বৈচিত্রময় সংস্কৃতিও ক্ষুণ্ণ হয়। আমি অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার চাই।’ মুখ্যমন্ত্রী টুইটে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সব ধর্ম, বর্ণ, জাতির মানুষকে শান্তি বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছেন।
নূপুর, নবীনের মন্তব্য ও টুইট নিয়ে বেজায় বেকায়দায় পড়েছে শাসকদল বিজেপি। যদিও এখনও পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ বার সেই মোদি সরকারের উপরই চাপ বাড়িয়ে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবি তুললেন মমতা।
ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ঘিরে সক্রিয় দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের ‘ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন (আইএফএসও) ইউনিট’-এর ডেপুটি কমিশনার কেপিএস মালহোত্র জানিয়েছেন, পয়গম্বর সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য নূপুরের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করা হয়েছে । দ্বিতীয় এফআইআরে নাম রয়েছে নবীন, শাবা-সহ আট জনের। হিন্দু মহাসভার মুখপাত্র পূজা শাকুন পাণ্ডেও রয়েছেন সেই তালিকায়। নেটমাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে অনিলকুমার মীনা, গুলজার আনসারি, আবদুর রহমানের নামে দায়ের হয়েছে এফআইআর।
পয়গম্বর সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য জাতীয় মুখপাত্র নূপুর এবং দিল্লির নেতা নবীনকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি। কিন্তু সেই শাস্তির প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে প্রচারে নেমে পড়েছেন বিজেপি সমর্থকদের একাংশ। ট্রেন্ডিং হয়েছে ‘নূপুর নবীন কো ওয়াপস লো’ প্রচার। বিজেপি সমর্থক অনেকেই টুইটারে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। দলের শীর্ষনেতৃত্ব কেন নূপুর-নবীনের পাশে দাঁড়াচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশের পদক্ষেপে স্পষ্ট, আন্তর্জাতিক মঞ্চে চাপের মুখে পড়া নরেন্দ্র মোদি সরকার আপাতত এই ব্যাপারে ‘কড়া অবস্থান’ বজায় রাখতে চাইছে।
❤ Support Us