- প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ১৪, ২০২৩
ডিএ নিয়ে সুর নরম মুখ্যমন্ত্রীর ! আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা, যদি দিই ভালোবেসে দেব
ডিএ প্রসঙ্গে সুর খানিকটা নরম করলেন মমতা। তিনি বললেন, যদি দিই তাহলে ভালোবেসে দেব। আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রকারান্তরে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, ধর্মঘট, অনশনের মাধ্যমে মহার্ঘ্য ভাতা আদায় করা যাবে না। তিনি আরো জানান, তাঁরা আইনসঙ্গত অধিকারের পক্ষে। পূর্বে ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার নয় বলে মন্তব্য করেছিল তাঁর সরকার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আজকের মন্তব্যে মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তাঁদের পরিবর্তিত অবস্থানের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
মঙ্গলবার আলিপুর জেলা আদালতে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ডিএ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। অধিকার কাড়ার পক্ষে নই। অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত, সেই অধিকার।
ডিএ প্রসঙ্গে মমতা পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকে একহাত নিয়েছেন। বললেন, যখন বিরোধী ছিলাম, তখন দেখতাম শিক্ষকেরা মাসের এক তারিখে মাইনে পান না। কখনও তিন মাস-ছ’মাস মাইনে হত না। অন্যান্য সরকারি কর্মচারীর অবস্থাও তা-ই। সময় মতো পেনশন হত না। আজ গর্ব করে বলতে পারি, এত ঋণ করে থাকাও আমরা মাসের এক তারিখে মাইনে দিই। পেনশনটাও দিই। এই মানবিক সরকারকে নিয়ে এত ভাববেন না।
আন্দোলনরত কর্মচারীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবি তিনি সমর্থন করেন না। তাঁর কথায়, আমরা ষষ্ঠ পে কমিশন অনুযায়ী টাকা দিয়েছি। কিন্তু আপনারা কাজ করবেন রাজ্য সরকারের হয়ে, আর বলবেন কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ দিতে, এটা হয় না। এ প্রসঙ্গ ধরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ও রাজ্যের স্কুলের শিক্ষকদের বেতনবিন্যাস আলাদা। কেন্দ্র এবং রাজ্যের পরিকাঠামোও পৃথক। কেন্দ্রীয় সরকারের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রয়েছে, রাজ্য সরকারের নেই। নেই টাকা ছাপানোর ক্ষমতা । আগে আমরা অনেক ট্যাক্স সংগ্রহ করতে পারতাম। এখন তো একটাই ট্যাক্স জিএসটি। যেটা তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্র। আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৯ সালের পে কমিশনে পুরোটাই দিয়েছি। কিন্তু এক দিকে এতগুলো প্রকল্প চলছে, অন্য দিকে আর কত করতে পারে একটা সরকার।
রাজ্যের বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক প্রকল্প চালিয়ে যে বর্ধিত ডিএ দেওয়া সম্ভব নয় সেকথা মুখ্যমন্ত্রী আগেও জানিয়েছিলেন । তবে বক্তব্য মঙ্গলবারের মতো ছিল না। রাজ্য বাজেট পেশের দিনই ৩ শতাংশ হারে ডিএ ঘোষণা করে সরকার। বলা হয়, মার্চ মাসের বেতন থেকে তা মিলবে। এর পরেও আন্দোলন থামেনি। বরং তাঁদের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত ভোটে কাজ না করার হুমকি আসে। গত ১০ মার্চের ধর্মঘটে প্রশাসনের নির্দেশিকা সত্ত্বেও সরকারি কার্যালয় ও স্কুলে উপস্থিতির হার ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশ কম। পূর্বে ডিএ-র দাবিতে কর্মবিরতিতেও ভালো সাড়া মিলেছিল।
সরকারি কর্মচারীদের বিক্ষোভের আঁচ অনুভব করছে সরকার। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। সরকারি কর্মীরা ভোটের দায়িত্ব পালনে অস্বীকার করলে ভোট পরিচালনা করা মুশকিল হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এছাড়া, প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। সমস্ত দিক বিচার বিবেচনা করে আন্দোলনরত কর্মচারীদের সঙ্গে বোঝাপড়ার রাস্তায় হাঁটতে চাইছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর আজকের বক্তব্যে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট।
❤ Support Us