- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মে ২, ২০২৪
মাধ্যমিকে অবাক কাণ্ড! পাশের হারে শীর্ষে কালিম্পং। দ্বিতীয় পূর্ব মেদিনীপুর। তৃতীয় কলকাতা।এগিয়ে জেলাগুলি। মেয়েদের টেক্কায় ছেলেরা কাত।

প্রতিশ্রুতিকে অক্ষুন্ন রেখে , ২০২৪ সালের মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সকাল নটায় ।এবারের উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৭ লাখ ৬৫ হাজার ২৫২ । পাশের হার [৮৬.৩১]। এবারে সব জেলার শীর্ষে কালিম্পং, দ্বিতীয় পূর্ব মেদিনীপুর, তৃতীয় কলকাতা। ছেলেদের জোর টেক্কা দিয়েছেন মেয়েরা।
এবছর ৬৯৩ নম্বর পেয়ে সম্ভাব্য প্রথম স্থানটি দখল করেছে কোচবিহারের চন্দ্রচূড় সেন।লক্ষ্য তার চিকিৎসক হওয়া ।সম্ভাব্য দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, পুরুলিয়া জেলা স্কুলের সাম্যপ্রিয় গুরু ।৬৯১ নম্বর পেয়ে সম্ভাব্য তৃতীয় স্থান দখল করেছে তিনজন। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুলের উদয়ন প্রসাদ, বীরভূম নিউ ইন্টিগ্রেডেড হাইস্কুলের পুষ্পিতা বাশুরি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের নৈঋত রঞ্জন পাল। পুষ্পিতা চায় ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে, নৈঋতের ইচ্ছা চিকিৎসক হয়ে মানবসেবা করা। চতুর্থ স্থানাধিকারী কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশনের তপোজ্যোতি মন্ডল। পঞ্চম পূর্ব বর্ধমানের পারুলডাঙ্গা নসরতপুর হাই স্কুলের অর্ঘদীপ বসাক।৬৮৮ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে চারজন, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুলের কৃশানু সাহা, মালদার মোজামপুর হাইস্কুলের মহম্মদ শাহাবুদ্দিন আলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের কৌস্তভ সাহু ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের অলিভ গায়েন। যথারীতি এ বছরেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত স্কুলগুলি, বিশেষ করে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন।শুধু তৃতীয় না, ষষ্ঠ, সপ্তম আরও অনেকগুলি স্থানে রয়েছে তাঁদের ছাত্রেরা।
পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, প্রথম দশে রয়েছে ৫৭ জন। তাদের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৮ , দক্ষিণ দিনাজপুরের ৭ , পূর্ব বর্ধমানের ৭ , পূর্ব মেদিনীপুরের ৭ , বাঁকুড়ার ৪ , বীরভূমের ৩ , উত্তর ২৪ পরগনার ২ , হাওড়ার ১ , মালদহের ৪ , পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪ , কোচবিহারের ২ , হুগলি থেকে ২ জন, নদিয়ার ২ , ঝাড়গ্রামের ১ , কলকাতার ১ , পুরুলিয়ার ১ এবং উত্তর দিনাজপুরেও ১ জন করে ছাত্রছাত্রী সম্ভাব্য মেধাতালিকায় রয়েছে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল জানতে চোখ রাখুন wbbse.wb.gov.in এবং wbresults.nic.in ওয়েবসাইট । অথবা মোবাইলে SMS-এ যান। তারপর আপনার রোল নম্বরটি দিন। মেসেজটি পাঠিয়ে দিন 56070/56263 নম্বরে।
আগামী ৮ মে উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হবে। ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি।
গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, গ্রামের ছেলে মেয়েরা মাধ্যমিকে ভাল ফল করছে। উচ্চমাধ্যমিকে তাদের আকাঙ্ক্ষা সাধারণত পূর্ণ হয়না। এর কারণ কী? গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার হার বেড়েছে। সামগ্রিক উন্নয়ন চোখে পড়ছে। মধ্যবিত্তের সংখ্যা বাড়ছে। বহু পরিবার টিউটর রেখে পড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। এমনকি প্রান্তিক পরিবারও দারিদ্র অতিক্রম করে উজ্জলতর হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এর নিকটতম উদাহরণ, জি ডি শিক্ষা ট্রাস্ট ও আল আমীন মিশন পরিচালিত রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের সামগ্রিক ফলাফলের উজ্জল্য । শিল্পপতি মুস্তাক হুসেন নির্বিশেষের প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভেবেছেন । একের পর এক স্কুল গড়েছেন। অন্তত ৬৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জি ডি শিক্ষা ট্রাসটের পরিচালনায় ক্রমাগত আলোকিত হয়ে উঠছে। আম আমীন মিশন প্রতিষ্ঠার শুরুতেও তাঁর অবদান অসামান্য। এখন আল আমীনের সর্বোচ্চ দায়িত্ব পরিচালনা করেন নুরুল ইসলাম। খলতপুরের বাসিন্দা । রামকৃষ্ণ মিশনে প্রশিক্ষণ নিতে এসে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন নুরুল। সেই আদলেই খলতপুরে গড়ে তোলেন আল আমীন মিশন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় বহু স্কুল। মেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে , অনগ্রসর সমাজের শিক্ষা গ্রহণের প্রবনতা বাড়াতে তাঁরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আল আমীনের অসাধারণ ফলাফল দেখে পুলকিত বোধ করেছিলেন চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন। সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন তিনি। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় তখন অসুস্থ,তিনি তাঁর এক অনুরাগীকে চিঠিতে লিখেছিলেন, আমার পা ভালো থাকলে আমি খলতপুর ক্যাম্পাসে ছুটে যেতাম। ওদের বলো আমার সংগৃহীত সমস্ত বইপত্র ওদের দান করে যাব। ওরা যেন নিয়ে যায়।বাংলার বহু প্রজ্ঞা নানা সময়ে খলতপুরে ছুটে গেছেন। দেবেশ রায় থেকে কবীর সুমন কে নন? সুমনের সঙ্গে খলতপুরের মঞ্চে দাঁড়িয়ে গান করেছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। সে এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি । আল আমীনের কৃতী প্রাক্তনিরা ইউরোপ ,আমেরিকা আর ভারতের বহু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় আলো ছড়াচ্ছে।
❤ Support Us