- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- জুন ২, ২০২৩
নিজভূমে পরবাসী দশমাস ! পূর্ব বর্ধমানের দম্পতির করুণ পরিণতিতে তাজ্জব প্রতিবেশীরা। অবশেষে ফিরছেন ঘরে

নিজভূমে ১০ মাস পরবাসী হয়ে থাকার দুঃসহ যন্ত্রণাময় জীবন কাটিয়ে ঘরে ফেরার পথে পূর্ব বর্ধমানের দম্পতি। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর সন্দেহে দীর্ঘ ৩০১ দিন বেঙ্গালুরুর কারাগারে বন্দি ছিলেন শুক্লা ওধিকারী ও পলাশ অধিকারী। সঙ্গে ছিল তাদের দুবছরের একরত্তি সন্তান আদির। তাঁদের ঘরে ফেরার খবরে খুশি পরিবারের অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরা।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের তেলেপুকুর গ্রামের বাসিন্দা পলাশ। গত বছর জুলাই মাসে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতে বেঙ্গালুরু পাড়ি দেন। ৩০০-৪০০ টাকা মজুরির শর্তে সেখানে তারা কাজ করা শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন বাবা পঙ্কজ অধিকারী, মা সবিতাদেবী ও প্রতিবেশী সুনীল অধিকারী। হোটেল, রেঁস্তোরা, সিনেমা হল-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত বর্জ্যবস্তু, বোতল, প্লাস্টিক সরঞ্জাম এইসব বাছাই করাই ছিল তাঁদের কাজ।
গত বছরের ২৭ জুলাই বেঙ্গালুরুর ভারথুর থানার পুলিশ কায়েন খাঁনের ডেরায় হানা দেয়। সেখানে বাংলাভাষী যারা ছিল তারা সবাই নাকি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, এমন সন্দেহে ভারথুর থানার পুলিশ পাঁচজনকে পাকড়াও করে থানায় নিয়ে যায়। ওই সময়ে পলাশ, তাঁর স্ত্রী, বাবা-মা ও প্রতিবেশী সুনীল অধিকারী, ভারথুর থানার পুলিশকে জানান, তাঁরা কেউই বাংলাদেশি নন। তাঁরা নিজেদেরকে ভারতীয় বলে জানিয়ে নিজের নিজের আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড সবই দেখান। সেগুলো দেখার পর বাবা মা ও প্রতিবেশীকে ছেড়ে দিলেও পলাশ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে আটকে রাখা হয়।
পরে কোনোরকম প্রমাণ ছাড়াই গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেয় ভারথুর থানার পুলিশ। সেই থেকে ১০ মাস শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে পলাশ ও তাঁর স্ত্রী বেঙ্গালুরুর জেলেই দিন কাটায়। ইতিমধ্যে ভারথুর তদন্তকারী দল তেলে গ্রামের বাড়িতে এসে সব কিছু দেখে পলাশদের ভারতীয় নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সমস্ত নথি নিয়ে যায়। স্থানীয় বিডিও অফিস, থানা ও জেলা প্রশাসন থেকেও বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করে। তবুও জেল থেকে ছাড়া পাননি তাঁরা। নিজের ছেলে , নাতি ও পুত্রবধূর মুক্তির জন্য দীর্ঘ আইনি লড়াই চালাতে গিয়ে ওর বাবা ও মার শেষ সম্বলটুকু শেষ হয়ে যায় । গত ২৪ মে পলাশ ও তাঁর স্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করে বেঙ্গালুরু আদালত। শুক্রবার দুরন্ত এক্সপ্রেসে করে ঘরে ফিরবেন তাঁরা।
❤ Support Us