- প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ৬, ২০২৩
কেন্দ্রীয় পোষণ যোজনার অধীনেই মেনুতে বদল।তবুও প্রশ্ন বিরোধী শিবিরের

বছরের শুরুতে একের পর এক জন দরদী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। এবার থেকে মিড ডে মিলে মাংস ও মরসুমি ফল পাওয়া যাবে বলে জানালেন তারা। শিশুর স্বাস্থ্যের বিকাশের কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছেন সরকারের পদস্থ আধিকারিকরা।
বুধবার প্রকাশিত এক সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী পোষণ যোজনার অধীনে মিড ডে মিলের খবারের ক্ষেত্রে বদল আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, রাজ্যের সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের খাদ্য তালিকায় ডাল-ভাত-তরকারি ও সয়াবিনের সাথে এবার মুরগির মাংসও ঠাঁই পেতে চলেছে। সেই সঙ্গে ডিম ও ফল দেওয়ার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এ মাস থেকেই মধ্যাহ্ন ভোজনে মিলবে মাংস। স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে যে শিশুদের পর্যাপ্ত পুষ্টির লক্ষ্যে মাংস, ফল ও ডিমের জন্য আলাদা করে অর্থ বরাদ্দ করা হবে। ৩৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ হতে চলেছে এই প্রকল্পে।পড়ুয়াদের অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য প্রতি পড়ুয়া পিছু ২০ টাকা করে বাড়াবে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই জেলাশাসকদের কাছে এ ব্যাপারে নোটিশ পাঠিয়েছে দফতর।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, শিশুর পুষ্টির সাথে কোনো মতেই আপোষে সম্মত নয় স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই কারণে শীর্ষ আধিকারিকরা জানাচ্ছেন মুরগির মাংসের পাশাপাশি যে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন পড়ুয়াদের দেওয়া হবে ডিম, মরসুমি ফল।আপাতত এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই নতুন তালিকায় খাদ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য স্কুল প্রশাসনের আধিকারিক।
স্বভাবতই প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। বৃহস্পতিবার টুইট করে তিনি জানান যে রাজ্যের মিড ডে মিল দুর্নীতি হল সবথেকে সংগঠিত একটি দুর্নীতি। কেন্দ্রের প্রকল্পকে নিজের নামে চালানোর চূড়ান্ত অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন মমতার সরকার বলে তাঁর অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে একটি চিঠিও তিনি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পে ৬০ শতাংশ বরাদ্দ থাকে কেন্দ্রের এবং রাজ্য দেয় বাকি ৪০ শতাংশ। এর আগে কেন্দ্রের বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থে রাজ্যের পড়ুয়াদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি। কোভিডের সময়ও রাজ্যের পড়ুয়ারা মিড-ডে মিল পেয়েছিল। রাজ্য সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছিল। রাজ্যের অভিযোগ ছিল, সামান্য বরাদ্দ অর্থ দিয়ে ছড়ি ঘোরাতে চাইছে কেন্দ্র। যদিও বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেলেন কেন্দ্র যদি এই দুর্নীতির তদন্ত করে তাহলে প্রকৃত সত্য সামনে আসবে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই মিড ডে মিলের খাবার দেওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। শুধুমাত্র পড়ুয়া নয়, খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাদের অভিভাবকরাও।সেই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মনিটরিং দল গঠন করবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।একাধিক স্কুলে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে মিড ডে মিলে, এই অভিযোগও উঠেছিল। রাজ্যের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করে কেন্দ্রও। কিন্তু, এবার মিড ডে মিল নিয়ে অতিরিক্ত যত্নবান রাজ্য।এর আগে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও বলেছিলেন, সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা এই প্রকল্পে কেন্দ্রের তরফে বরাদ্দ করা হয়েছে। দেশের ১২ কোটি পড়ুয়া এই প্রকল্পে সুবিধা পায়।কোনওভাবেই এক্ষেত্রে দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। মিড ডে মিল নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য এই টানাপোড়েনের মাঝেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মিড ডে মিলে খাদ্যের ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করল রাজ্য। যা আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল দলকে অনেকটা এগিয়ে রাখল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
❤ Support Us