Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মে ১৩, ২০২৩

কংগ্রেসের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ, কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে ? সিদ্দারামাইয়া না ডিকে শিবকুমার

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
কংগ্রেসের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ, কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে ? সিদ্দারামাইয়া না ডিকে শিবকুমার

কর্ণাটক বিধানসভা কংগ্রেসের দখলে এসেছে। এবার কে হবেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ?  রাজ্যের বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া না কি কর্ণাটক প্রদেশ সভাপতি ডিকে শিবকুমার? এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের ডিকে শিবকুমার জানিয়েছেন, এই নিয়ে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ মেনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই প্রশ্নের সমাধানে কঠিন সমস্যায় পড়তে হবে হাইকমান্ডকে, সেটা নিশ্চিত। এই দুজনের একজনকে মুখ্যমন্ত্রী করলে অন্যজন যে সেটা ভালো ভাবে মেনে নেবেনই সেটা নাও হতে পারে। এই সমস্যা সমাধান কংগ্রেসের কাছে একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ!

কর্ণাটক কংগ্রেসের প্রধান দুই মুখ সিদ্দারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমার। সিদ্দারামাইয়া আবার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর ডিকে শিবকুমার কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি। কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি দলকে নেতৃত্বে দিয়ে কর্ণাটকে কংগ্রেসের সাফল্য এনেছেন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস তাঁরই নেতৃত্বে কর্ণাটকে সরকার গড়তে চলেছে। গণনা চলাকালীন যখন ট্রেন্ড বলে দিচ্ছে নির্বাচনে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত শনিবার যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দিয়ে ডিকে শিবকুমার কেঁদে ফেলেন, বলেন, “সোনিয়া গান্ধীকে কথা দিয়েছিলাম জয় ছিনিয়ে আনব।” কাজেই তাঁর পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি করার মতো কর্মী দে আছে।

অন্য দিকে দীর্ঘদিন কর্ণাটকের রাজনীতির ময়দানে রয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। ৭৫ বছর তাঁর বয়েস হয়েছে। এবার নির্বাচনে দাঁড়াবার আগেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, এটাই তাঁর শেষ নির্বাচনী লড়াই। গণনার দিন শুরুতেই তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ” কর্ণাটকে কংগ্রেস ১২০-র বেশি আসনে জিতবে।” এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে দলের জয়ের ট্রেন্ড লক্ষ্য করে কর্ণাটকের স্বার্থেই সিদ্দারামাইয়ার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন যতীন্দ্র সিদ্দারামাইয়া, যিনি সিদ্ধারামাইয়ার পুত্র। একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র বলেন, “আমরা বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে যে কোনও কিছু করতে পারি। কর্ণাটকের স্বার্থে আমার বাবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।”

তাঁর বাবা যে একজন সুশাসক সেই দাবি করে ওই সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যতীন্দ্র সিদ্দারামাইয়া বলেন, “ছেলে হিসাবে আমি অবশ্যই বাবাকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাই। কিন্তু, রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে, তিনি শেষবার যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন রাজ্যে সুপ্রশাসন দেখেছি। এবারও যদি তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন, বিজেপির দুর্নীতিও ও অপশাসন উনি সংশোধন করে দেবেন। তাই রাজ্যের স্বার্থে, ওঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।”

সাম্প্রতিক এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সমীক্ষাতেও দেখা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী পদে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষের সবথেকে বেশি পছন্দ করেছেন  সিদ্দারামাইয়াকে। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার তিনি কর্ণাটক বিধানসভায় নির্বচিত হন। জনতা দল সরকারের অংশ হিসাবে ১৯৯৪ সালে তিনি রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী হন। ১০ বছর পরে, ২০০৪ সালে জনতা দল (সেকুলার) সরকারের অংশ ছিলেন। যতদিন না তাঁকে দলীয় নেতা এইচ ডি দেবে গৌড়ার সঙ্গে বাদানুবাদের জেরে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়, ততদিন পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। এর দুই বছর পর ২০০৮ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন সিদ্দারামাইয়া। ২০১৩-র ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী হন।

অন্যদিকে, সিদ্দারামাইয়ার ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ১৪ বছরের ছোট ডিকে শিবকুমার। তিনি স্পষ্ট আভাস দিয়ে রেখেছেন, তিনি শীর্ষ পদ চান। বছর ৬১-র শিবকুমার কর্ণাটকের অন্যতম বিত্তবান রাজনীতিক। ২০১৯ সালে সেই অর্থে প্রথম মানুষের কাছে তিনি আসেন কংগ্রেস-জনতা দলের জোট সরকার গড়ার উদ্যোগ নিয়ে। সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়, যখন উভয় দলের একাধিক বিধায়ক ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেন। তবে, বরাবরই  কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত  ছিলেন ডিকে শিবকুমার। ১৯৮৯ সালে প্রথমবার তিনি নির্বাচনে জয়ী হন। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে ডিকে শিবকুমারের বিরুদ্ধে। এমনকী এজন্য তাঁকে দিল্লির তিহাড় জেলেও থাকতে হয়েছে একটা সময়। তাই জনপ্রিয়তার নিরিখে সিদ্ধারামাইয়া  এবং ডিকে শিবকুমার দুই নেতাই সমান জনপ্রিয়। দুজনেরই রয়েছে বিশাল জনসমর্থনও। সম্ভবত, সেই কারণেই, কংগ্রেস কাউকে সামনে রেখে এবার লড়াই করেনি। তবে এবার যে কোনও একজনকে মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব দলের দিতেই হবে। তারপর পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেটাই দেখার।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!