- এই মুহূর্তে দে । শ
- আগস্ট ৩১, ২০২৪
মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির জবাব দিলেন অন্নপূর্ণা। রাজ্যকেই দুষল কেন্দ্র
ধর্ষণ ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য কঠোর কেন্দ্রীয় আইন নিয়ে আসা ও বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত নিস্পত্তি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দ্বিতীয়বার চিঠি দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এবার মমতাকে পাল্টা চিঠি কেন্দ্রীয় সরকারের। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা চিঠি দিয়ে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ বিশেষ আদালত তৈরির কাজ আটকে রয়েছে বাংলাতেই।
I have written this letter to the Hon’ble Prime Minister of India in connection with an earlier letter of mine to him. This is a second letter in that reference. pic.twitter.com/5GXKaX6EOZ
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 30, 2024
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হয়ে মমতা ব্যানার্জিকে চিঠির জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান আইন ও বিচার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে মেনে চললেই অপরাধের মোকাবিলা করা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গ সরকার শিশুদের ওপর ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের মামলাগুলি মোকাবেলা করার জন্য অতিরিক্ত ১১টি ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালত চালু করেনি।’ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে আরও জানিয়েছে যে, মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং অপরাধের জন্য কঠোর আইন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রয়েছে। সেই আইন অক্ষরে অক্ষরে প্রয়োগ করার জন্যও অনুরোধ করেছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ৪৮৬০০টি ধর্ষণ এবং পকসো মামলা মুলতুবি থাকা সত্ত্বেও রাজ্য অতিরিক্ত ১১টি ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালত চালু করেনি, যা একচেটিয়া পকসো আদালত হতে পারে বা সম্মিলিত ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালতগুলি ধর্ষণ এবং পকসো উভয় ক্ষেত্রেই রাজ্যের প্রয়োজন অনুসারে কাজ করতে পারে। এই বিষয়ে আপনার চিঠিতে থাকা তথ্য বাস্তবিকভাবে ভুল এবং রাজ্যের দ্বারা ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালত চালু করার বিলম্বকে ঢেকে রাখার জন্য একটি পদক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভের পরে একই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। মমতা ব্যানার্জি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৮৮টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট প্রতিষ্ঠা করেছে, যেগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের আওতায় ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালতের মতো নয়। মমতা ব্যানার্জি প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে লেখেন, ‘ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টগুলি প্রবীণ নাগরিক, মহিলা, শিশু, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, এইচআইভি–এইডস এবং অন্যান্য টার্মিনাল দ্বারা প্রভাবিত মামলাগুলির মতো সিভিল মামলা পরিচালনা করার জন্য তৈরি হয়েছে । সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের সাথে পরামর্শ করে রাজ্য সরকার এগুলো তৈরি করেছে এবং তার অর্থায়নও করে৷ অসুস্থতা এবং জঘন্য অপরাধের মামলাসহ ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে জমি অধিগ্রহণ এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধেরও নিস্পত্তি করা হয়।’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী লিখেছেন, ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতাতে হত্যার সাথে ধর্ষণ ও ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তি ইতিমধ্যেই বিদ্যমান রয়েছে। যা ধর্ষণের জন্য ন্যূনতম ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দোষী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনের বাকি সময়ের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখে। অথবা মৃত্যুর সাথে, অপরাধের তীব্রতার উপর নির্ভর করে। বিচার কর্তৃপক্ষের দ্বারা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির বাধ্যতামূলক বিধান রয়েছে। আমি উল্লেখ করতে চাই যে, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা তদন্ত শেষ করার বিধান রয়েছে, যার মধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ধর্ষণ মামলায় এফআইআরের তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে এবং চার্জশিট দাখিল করার দুই মাসের মধ্যে বিচার শেষ হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনগুলি মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং অপরাধ মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট ব্যাপক এবং কঠোর। আমি আবারও আপনাকে অনুরোধ করছি যথাযথ সংবেদনশীলতা এবং মনোযোগ সহকারে মামলাগুলির যথাযথ পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য আইনের অধীনে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেষ করার।’
❤ Support Us