- Uncategorized প্রচ্ছদ রচনা
- নভেম্বর ২৪, ২০২২
কর্মসংস্থান নেই।ফলে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে গ্রাম বাংলার শ্রমিক

বাংলার গ্রামাঞ্চলে ক্রমশই কমছে দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা। তবে কী সবাই শহরমুখী? সেখানে মানুষের কর্মসংস্থান বেড়েছে? বিষয়টি অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, আসলে রাজ্যে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার তলানিতে। পাশাপাশি রাজ্যে বন্ধ সরকারি প্রকল্পের একশো দিনের কাজ। এপ্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, কেন্দ্র রাজ্যের প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না, তাই রাজ্যও কর্মমুখী প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।
একসময় মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান প্রকল্পের অধীনে গ্রামাঞ্চলের মানুষ কাজ করতেন। কিন্তু করোনা পরবর্তি পরিস্থিতিতে সে চিত্র আমূল বদলে গেছে। মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান প্রকল্পে কাজের সুযোগ সঙ্কুচিত হওয়ার পর গত ৮–৯ মাসে জীবিকার সন্ধানে অন্য রাজ্যে চলে গেছে বাংলার গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকরা। বিশেষ করে মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, হুগলি এবং নদীয়া থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে পাড়ি দেওয়া শ্রমিকের সংখ্যা বেশি।
কর্মসংস্থানের সুযোগের সঙ্কুচিত হওয়ার কারণে বাংলার গ্রামবাসীরা অন্যান্য রাজ্যে, বিশেষ করে তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় চলে যাচ্ছেন। সেখানে তাঁরা নিজেদের দক্ষতার উপর নির্ভর করে প্রতিদিন ৭০০–৮০০ টাকা আয় করে। কিন্তু এই রাজ্যগুলিতে জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেশি। অন্যান্য রাজ্যে বসতি স্থাপন করা অভিবাসী শ্রমিকদের অত্যন্ত কঠিন জীবনযাপন করতে হয়। এই অভিবাসী শ্রমিকরা অধিকাংশই অপুষ্টিতে ভোগে। এছাড়া চিকিৎসার অভাবে এবং দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি হন। গত সপ্তাহে মিজোরামের হানথিয়াল জেলার মৌদারহ গ্রামে একটি পাথর খনিতে ডুবে গিয়ে বাংলার ৫ জন সহ মোট ১২ জন অভিবাসী শ্রমিক নিহত হয়েছিল। এই শ্রমিকরা কয়েক মাস আগে বাংলা থেকে মিজোরামে পাড়ি দিয়েছিল।
কেন্দ্রীয় গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রক জুলাই মাসে এমজিএনআরইজিএস বাস্তবায়নের গুণমান সরজমিনে তদন্তের জন্য একটা তদন্তকারী দল পাঠিয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটি গুরুতর অসঙ্গতি এবং অনিয়ম খুঁজে পেয়ে। এই তদন্ত কমিটি হুগলিকে ২ কোটি, পূর্ব বর্ধমানকে ১ কোটি, মালদায় ২৬ লাখ, এবং দার্জিলিংয়ে ১৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়াও কর্তারা মন্ত্রকের কাছে রাজ্যের প্রেরিত অগ্রগতি প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। এছাড়াও, কিছু স্কিমের নাম গোপনে পরিবর্তন করা হয়েছিল। যেমন, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার নাম পরিবর্তন করে বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ) নাম পরিবর্তন করে বাংলার বাড়ি করা হয়েছে।
রাজ্যে গ্রামাঞ্চলে ১০০ দিনের কাজের সরকারি প্রকল্পে কাজ করার জন্য নথিভূক্ত জব কার্ড হোল্ডারদের সংখ্যা ১.৫ কোটি। কিন্তু প্রকূতপক্ষে এইসব শ্রমিকরা ১০০দিনের কাদের পরিবর্তে মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। ফলে রাজ্যে মাথা পিছু গড় আয়ের পরিমাণ কমেছে।ফলে গ্রাম বংলার মানুষ বাধ্য হয়ে জীবিকার খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে।
❤ Support Us