- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মে ৩, ২০২৩
সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হ্রাস ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে, উদ্বেগ জাতিসংঘের। ১৮০ দেশের তালিকায় ১৬১তে ভারত
সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কী অলীক কল্পনা? “ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে”-তে বিশ্বব্যাপী এই প্রশ্নটাই এখন প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়ের বিভিন্ন দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর, সাংবাদিকদের ওপর যে আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে তা নিয়ে এই দিনটিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে সংবাদ মাধ্যম আক্রমণের শিকার, সাংবাদিকদের ওপর ক্রমাগত হয়রানি, গ্রেফতার এবং হত্যা করার মতো ঘটনা ঘটছে। বুধবার “ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম” দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বব্যাপী সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর এই আক্রমণ নিয়ে তাঁর আশঙ্কার কথা গোপন করেননি। তিনি বলেন, “আমাদের সমস্ত স্বাধীনতাই নির্ভর করছে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার উপর।” এই প্রসঙ্গে তিনি একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি” এবং “মানবাধিকারের প্রাণবন্ত” প্রকাশ হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা।কিন্তু সংবাদ মাধ্যমের সেই স্বাধীনতাই এখন পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে আক্রমণের মুখে।”
জাতিসংঘের তরফে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম প্রাইজ ২০২৩ পুরস্কার ৩ জন ইরানীয় মহিলাকে প্রদান করা হয়, এর মধ্যে ২জন সাংবাদিক একজন মানবাধিকার কর্মী, এই এই তিনজনই এক সময় জেলে ছিলেন।
যদিও এই বক্তব্য রাখার সময় গুতেরেস নির্দিষ্ট ভাবে কোনও দেশের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেননি। অন্যান্য বক্তারা স্বতন্ত্র কিছু ঘটনার কথা তাঁদের বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টার ইভান গারশকোভিচ, রাশিয়ায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে,যদিও ইভান গারশকোভিচ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রকাশক আলমা লাতুও বলেছেন, “সংবাদপত্রের স্বাধীনতার লড়াই, ইভানের মুক্তির লড়াই প্রত্যেকের স্বাধীনতার লড়াই।”
বেশ কয়েক ডজন সংবাদ সংস্থা গার্শকোভিচের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে নিন্দা করেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও তাঁর কারাবাসকে “সম্পূর্ণ অবৈধ” বলে অভিহিত করেছেন,সেই প্রসঙ্গটিও আলোচকদের কথায় উঠে এসেছে। অন্যান্য সাংবাকিকরাও এই এই বিশেষ দিনটিতে সাংবাদিকতার পেশাকে ক্রমবর্ধমান বিপজ্জনক পেশা হিসেবে উল্লেখ করে তাঁদের বক্তব্য রেখেছেন।
ইরানের আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক মাসিহ আলিনেজাদ বলেন, “আমি এমন একটি দেশ থেকে জন্মেছি, যেখানে সাংবাদিক হওয়া একটি অপরাধ.এবং এই পেশায় থাকার জন্য আপনাকে কারাগারে পাঠানো হতে পারে, হত্যা করা হতে পারে, নির্যাতন করা হতে পারে।”
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের মতে, ২০২২ সালে দায়িত্ব পালনের জন্য ৫৫ জন সাংবাদিক ও চারজন গণমাধ্যমকর্মী প্রাণ দিয়েছেন।
গুতেরেস তাঁর বলেন, “সত্যকে বিভ্রান্তি এবং ঘৃণাত্মক বক্তব্যের দ্বারা হুমকি দেওয়া, সত্য এবং কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান এবং ষড়যন্ত্রের মধ্যে রেখাগুলিকে অস্পষ্ট করার কাজ জারি রেখে সাংবাদিকদের ধারাবাহিক ভাবে হয়রানি করা, ভয় দেখানো, আটক করা হয় এবং কারাগারে বন্দি করা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ” সংবাদ মাধ্যমের উপর সেন্সরশিপ খুব সহজ ও সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এমন কি সংবাদ মাধ্যমের সেন্সরশিপকে অনেক দেশের সরকার তাদের অবশ্য পালনীয় কাজ হিসেবে ঠিক করে নিয়েছেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে সংবাদ মাধ্যমের সেন্সরশিপ একটা স্বাভাবিক ঘটনা, সমাজের জ্ঞান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনেক সরকার এই সেন্সরশিপকেই অবশ্য পালনীয় কর্তব্য বলে মনে করছে।”
❤ Support Us