- এই মুহূর্তে দে । শ
- ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
রাজধানীতে তৃণমূলের তিন প্রতিনিধির চ্যালেঞ্জ প্রধানমন্ত্রীকে, বাংলায় প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়েই বলুন, রাজ্যের প্রাপ্য নিয়ে কেন এই বৈষম্য ? সন্দেশখালিতে প্ররোচনার উৎসে কোন অধরা?
তথ্য, যুক্তি আর একে একে উদাহরণ পেশ করে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সুদৃঢ় ভাষায় অভিযোগ পেশ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভার তিন সদস্য সুস্মিতা দেব, সাগরিকা ঘোষ ও সাকেত গোখলে । মঙ্গলবার, দিল্লিতে তাঁদের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে। সুস্মিতা অসমের বরাক কন্যা। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেবের মেয়ে, লেখাপড়া দিল্লিতে, বিদেশে। বাবার মৃত্যুর পর রাজনীতিতে প্রবেশ। কংগ্রেস ছেড়ে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আকর্ষণে, তাঁর পূর্বচেনা সুস্মিতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদেন, মমতা রাজ্যসভায় পাঠিয়ে কখনো গোয়া, কখনো ত্রিপুরা, কখনো অসমের সাংগঠনিক দায়িত্ব অর্পন করে বাড়িয়ে দেন তাঁর রাজনৈতিক সামাজিকতা। বাংলা থেকে দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্যসভায় পাঠালেন। পুননির্বাচিত হয়েই সচেতন প্রয়াস আর দলের কর্মকান্ডে নিজেকে মিশিয়ে দিয়েছেন স্মিতভাষিণী তরুণী। একই সময়ে তূণমূলের সাংসদ হিসেবে প্রবেশ করেছেন সাংবাদিক ও লেখক সাগরিকা ঘোষ । সাকেত গোখলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র এবং রাজ্যসভার নির্বাচিত সদস্য । রাজনীতির ভেতরে আর বাইরে চেনা, অভিজ্ঞ এই তিন সদস্য তাঁদের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করলেন রাজধানীতে। নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে তাঁরা বলেন, বিজেপি আকার ইঙ্গিতে, তাঁর অনুগামী ও অনুরাগীদের দিয়ে বলাচ্ছে, এবার বিজেপি ৪০০ আসন পার করবে, কিন্তু তা কোথ্থেকে? শক্তি আর বিশ্বাস যদি এত শক্ত হয়ে থাকে, তাহলে বাংলার সন্দেশখালি নিয়ে হরদম কেন চক্রান্ত করা হচ্ছে? কেন বিভাজনের রাজনীতি করছেন তারা । কেন কেন্দ্রীয় বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করছে বাংলাকে ? ১০০ দিনের বকেয়া, আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখা হয়েছে ।কেন নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছে আধার কার্ড ? তামিলনাড়ু ,কর্ণাটক, কেরেলা সহ একাধিক রাজ্য এই বঞ্চনার শিকার। যেখানেই ডবল ইঞ্জিন সরকার নেই, সেখানেই ক্ষমতাসীন বিজেপির এই বঞ্চনা। বাংলা থেকে তারা কর আদায় করছেন, অথচ রাজ্যের প্রাপ্য দিচ্ছেন না ।বাংলার প্রতি বঞ্চনার পাল্লা ক্রমশ ভারী করছে কেন্দ্র ।
লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য সফর নিয়ে ওই তিন সাংসদ বলেন, বাংলায় এসে মোদি কী জনগণের প্রশ্নের জবাব দেবেন, কেন লক্ষ লক্ষ রাজ্যবাসীর প্রাপ্র টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র । বাংলার মানুষ জবাব চায়? সভায় দাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলতে পারবেন, প্রাপ্য টাকা কবে পাবে বাংলা ? তাঁরা বলেন, এখন লোকসভায় বাংলা থেকে বিজেপির নির্বাচিত সদস্য ১৮ জন। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে তাঁদের নীরবতা অপূর্ব বিস্ময়কর।
পাশাপাশি তাদের অভিযোগ, সন্দেশখালিতে মহিলাদের ওপর অত্যাচার নিয়ে বিজেপি এবং বিভিন্ন কমিশন যতটা সরব, মণিপুর প্রসঙ্গে, কুস্তিগীরদের ওপর লঞ্ছনা নিয়ে তাঁদের মুখে কুলুপ কেন। সন্দেশখালিতে অভিযোগ ওঠার পরেই, রাজ্য পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ২০ জনকে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, কোর্টের নির্দেশেই সন্দেশখালিতে অভিযুক্ত সাহজাহানকে গ্রেফতার করা যায়নি। গতকাল আইনি বক্তব্যের বিভ্রান্তি কলকাতা হাইকোর্ট দূর করতেই, এফআইআর হয়েছে তার বিরুদ্ধে।গ্রেফতারও করা হবে দ্রুত। বিজেপি ক্রমাগত অভিযোগ করছে, নারী নির্যাতন রুখতে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের ভূমিকা নিরপেক্ষ নয়। এপ্রসঙ্গেও তাঁরা তথ্য দিয়ে বলেন, গত চারবছরে নারী নির্যাতন রুখতে ওই অঞ্চলে একাধিক এফআইআর হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থাও নিয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, রাজ্যের মানুষের সঙ্গে কেউ প্রতারণা করলে, বা অন্যায় হলে তার রেয়াত করেনি মমতার সরকার। অপরাধ করলে রাজ্যের মন্ত্রীরাও ছাড় পাননি।
সাংসদ সুস্মিতা দেব এদিন বলেন, ১০ মার্চ ব্রিগেডে তূণমূলের জনসভার জনতরঙ্গ ঘোষণা করবে ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকার, বহু বিশ্বাসের গণতন্ত্রকে আমরা বাচিয়ে রাখব।মমতা বন্দোপাধ্যায়কে পরাভূত করার সবচক্রান্ত প্রতিহত হবে। মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্য আর সামাজিক ন্যায়ের গণমুখী ময়দানের সমবেত ক্রীড়ায় হেরে যাবে অপশক্তি। এদিন সন্দেশখালি ইস্যুতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর লেখা চিঠি প্রসঙ্গে সুস্মিতা এবং সাকেত গোখলে বলেন, গত তিন সপ্তাহে একেরপর নারী নির্যাতনের নক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে ছত্তিশগড়ে। নিজের রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে পরের রাজ্যে নাকউঁচু উসকানি কেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর ?
❤ Support Us