Advertisement
  • দে । শ মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
  • এপ্রিল ১৭, ২০২৫

বল হাতে ২২ গজে স্বপ্ন বুনছেন বসিরহাটের জিন্না

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
বল হাতে ২২ গজে স্বপ্ন বুনছেন বসিরহাটের জিন্না

ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান জিন্না মন্ডলের। সংসারের দারিদ্র একলব্যের মত জিন্নার একক ক্রিকেট সাধনায় ছেদ ঘটাতে পারেনি। দেশের এমনকী বিদেশের তাবড় ক্রিকেটাররাও জিন্নার বলের গতিকে সমীহ করে। সদ্য সমাপ্ত ভারত–‌ইংল্যান্ডের টি–‌২০ সিরিজের ১২ জন নেট বোলারের তালিকায় জিন্নার নাম ছিল প্রথমেই। প্র‌্যাকটিশ নেটে মহম্মদ শামি, রাজদীপ সিং, গৌতম গম্ভিররদের মত ক্রিকেটাররাদের বল করে প্রসংশা পেয়েছে জিন্না। কেকেআর–‌র নেট বোলার হিসেবে সম্প্রতি ডাক পেয়েছেন জিন্না। হারসিত রানা, রাহানে, নর্টজে,রোমানদীপ সিং, পাওয়েলের সামনে জিন্না দাপিয়ে বল করে তারিফ কুড়িয়েছে।

বসিরহাট–‌২ ব্লকের বিবিপুর গ্রামে বাড়ি জিন্না মন্ডলের। বাবা রফিকুল ইসলাম একজন মৎস্যজীবী। খালে বিলে মাছ ধরেন। মাঠ, খাল–‌বিল শুকিয়ে গেলে দিনমজুরের কাজ করেন রফিকুল। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। তার মধ্যে জিন্না ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকটা গল্পগাথার মত ২১ বছরের জিন্নার জীবন। ছোট বেলায় গাছ থেকে পড়ে থাকা নারকেলের মুচি, সুপারি, কিংবা ছোট বেল কুড়িয়ে একটা লক্ষ্যে বল করে যেত জিন্না। বিবিপুর মাঠে ক্রিকেট হলে সেখানে মাঠে জল দেওয়া আর ম্যাচ দেখে তার কেটে যেত। একটা ম্যাচে তার সুযোগ আসে। সেখানে তার বল দেখে এলাকার এক ব্যক্তি জিন্নাকে সম্বরণ ব্যানার্জি ক্রিকেট আকাদেমিতে নিয়ে। সেখানে তার বল দেখে সম্বরণের ক্রিকেট আকাদেমিতে ফ্রি কোচিংয়ের সুযোগ হয় জিন্নার। মাঠে কাজ করে, ধান রুয়ে, পাট ধুয়ে বাকি সময় ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকে জিন্না। রাত থাকতে উঠে ৭ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ফার্স্ট ট্রেন ধরে কলকাতায় যায় প্রাকটিসে। ব্লকের কর্মাধ্যক্ষ কাজি মামুদ হাসান জিন্নাকে কলকাতায় থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাতে কিছুটা সুরাহা হয়েছে জিন্নার। মামুদ জুতো কিনে দিয়েছেন। আর্থিক সাহায্য করেন প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা। সিএবির দ্বিতীয় ডিভিশন ও জেলা ক্রিকেটের প্রথম ডিভিশনের রহড়া স্পোর্টিং ক্লাবে নিয়মিত খেলছে জিন্না। আইপিল, ২০২৩ বিশ্বকাপে নেট বোলিং করে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের প্রশংসাও পেয়েছে। জোরে বোলার হিসেবে ক্রিকেটারদের পছন্দের জিন্না এখন আশায় আছে আরও বড় জায়গায় কবে ডাক পাবে। আত্মবিশ্বাসী জিন্না বলে, ‘‌আমি নেট বোলার হয়ে থাকতে চাইনা। আমার অনেক শেখার এখনও বাকি।’‌ বিভিন্ন সময়ে সামনে থেকে জ্যাক ক্যালিস, অভিষেক রামন, জাস্টিস বুমরা, শিবম মাভির তারিফ পেয়ে অভাবকে সরিয়ে জিন্না লড়াই থেমে নেই।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!